লবণাক্ততা সমস্যা থেকে মুক্তি এবার বিশ্ব ব্যাঙ্কের টাকায়

আন্তর্জাতিক কলকাতা জেলা রাজ্য

নিজস্ব প্রতিনিধি,কলকাতাঃ- সুন্দরবনের বাসিন্দাদের ভাঙ্গন এবং জমির লবণাক্ততা সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে রাজ্য সরকার বিশ্ব ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় চার হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ মূল্যের একটি প্রকল্প হাতে নিতে চলেছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ভাঙ্গন প্রবন ৩৯ টি দ্বীপে এই প্রকল্পের রূপায়ণ করা হবে। সম্প্রতি রাজ্যের সেচ ও জলপথ মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া গোসাবায় নেদারল্যান্ডস এর একটি বিশেষজ্ঞ দল এবং বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। রাজ্য সরকারের নটি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতিনিধিরাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। প্রথম পর্যায়ে নামখানা, মৌসুনি, সাগর, গোসাবা, পাথরপ্রতিমা, চুনাখালি, ঝড়খালি, সোনাখালি, বাসন্তী, কুমিরমারী, মইপীঠ, দেউলবাড়ি, দেবীপুর, ঘোড়ামারা, হাসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জ, বালি, সাতজেলিয়া, ছোটমোল্লাখালি সহ ৩৯ টি যে দীপাঞ্চল গুলিতে এই প্রকল্প রূপায়িত হবে। মানুষ জানিয়েছেন এই প্রকল্পের জন্য মোট ৪১ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছে যার তিরিশ শতাংশ বা ১২৩০ কোটি টাকা রাজ্য সরকার বহন করবে। বাকি টাকা ঋণ হিসেবে দেবে বিশ্ব ব্যাংক। নেদারল্যান্ডের বিশেষজ্ঞ সংস্থার পরামর্শ মত এই পরিকল্পনা তৈরী করা হচ্ছে।


পরিবেশবান্ধব নদী বাঁধ নির্মাণের লক্ষ্যে গত আগস্ট মাস থেকে একাধিকবার আন্তর্জাতিক প্রযুক্তিবিদদের সঙ্গে সুন্দরবন অঞ্চলের বিভিন্ন বাঁধ পরিদর্শন ও তার প্রযুক্তিগত বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাঁদের পরামর্শ ও রাজ্য সরকারের অন্যান্য বিভাগ গুলি যেমন বনবিভাগ , সুন্দরবন বিষয়ক বিভাগ , জলসম্পদ অনুসন্ধান এবং উন্নয়ন বিভাগ, কৃষি বিভাগ ,মৎস্য বিভাগ ইত্যাদিদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে এবং আয়লা বাঁধ নির্মাণের অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে সুন্দরবনের ক্ষতিগ্রস্ত নদী বাঁধ পুনর্নির্মাণের সার্বিক পরিকল্পনা করা হচ্ছে। নদী বাঁধ নির্মাণের সঙ্গে সঙ্গে বাঁধের ধারে ম্যানগ্রোভ বৃক্ষরোপণ, কৃষিকাজ ও মৎস্য চাষের উন্নতির মাধ্যমে জীবিকা অর্জনের ব্যবস্থা করাও এই পরিকল্পনার একটা অংশ। প্রাথমিক পরিকল্পনা রিপোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারের ডিপার্টমেন্ট অফ ইকোনমিক্স অ্যাফেয়ার অর্থাৎ ডি ই এ বিভাগে এপ্রিল ২০২৪ তারিখে পাঠানো হয়েছে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র পাওয়ার জন্য। প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র পাওয়া গেলে এই ব্যাপারে বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট তৈরী করার কাজ শুরু হবে। প্রাথমিক পরিকল্পনা রিপোর্ট অনুযায়ী প্রকল্পের অনুমতি ব্যায় ৪১০০ কোটি টাকা । এর মধ্যে বাঁধের নির্মাণের আনুমানিক খরচ ২০৫০ কোটি টাকা বিবেচনা করা হয়েছে বলে মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া জানান।