নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: যোগেশ চন্দ্র চৌধুরী কলেজে সরস্বতী পুজোকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, কলেজের বাইরে থেকে আসা কিছু বিশেষ সম্প্রদায়ের বহিরাগতরা পুজো বন্ধ করার হুমকি দিয়েছে। এমনকি, পুলিশের কাছেও অভিযোগ জানানো হলেও কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে দাবি করেছেন ছাত্র-ছাত্রীরা। বাধ্য হয়ে তাঁরা কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন।
হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, যোগেশ চন্দ্র চৌধুরী ডে কলেজ ও ল কলেজ উভয় ক্ষেত্রেই সরস্বতী পুজো অনুষ্ঠিত হবে। বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত মামলার শুনানি শেষে স্পষ্ট নির্দেশ দেন যে, এই পুজো লালবাজারের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) এর নজরদারিতে সম্পন্ন করতে হবে। পাশাপাশি, ছাত্র-ছাত্রীদের কলেজে প্রবেশ ও বের হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা সৃষ্টি করা যাবে না, এবং কলকাতা পুলিশকে তা নিশ্চিত করতে হবে। পরিস্থিতির প্রয়োজনে কলেজ চত্বরে সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েনের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এদিকে, কলেজের গাড়ি বারান্দায় বহিরাগতদের তৈরি করা অস্থায়ী ম্যারাপ সরিয়ে ফেলার জন্য চারু মার্কেট থানা ও কলেজ প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং এই পুরো প্রক্রিয়াটি ভিডিওগ্রাফি করতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে, কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, সরস্বতী পুজো বন্ধ করার কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি, তবে প্রতি বছর যেখানে পুজো হয়, সেখানে বর্তমানে মেরামতির কাজ চলার কারণে এবার পুজোর স্থান পরিবর্তন করে গাড়ি বারান্দায় করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে বহিরাগতদের নিয়ে ওঠা অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সরস্বতী পুজো বন্ধ করার কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে প্রতি বছর যেখানে পুজো হয়, সেখানে বর্তমানে মেরামতির কাজ চলছে। সেই কারণেই এবার পুজোর স্থান পরিবর্তন করে কলেজের গাড়ি বারান্দায় করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বহিরাগতদের নিয়ে অভিযোগ আসায় বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আইনজীবী বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য অভিযোগ করেন, যাঁরা পুজো করতে বাধা দিচ্ছে, তাঁরা কলেজের ছাত্র-ছাত্রী নন। বহিরাগতরা এসে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে, গণ্ডগোল বাঁধানোর চেষ্টা করছে। কলেজ কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল বিষয়টিতে আরও সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া।
শুনানির সময় বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত জানতে চান, কে এই পুজোর আয়োজন করছে? কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতিবছরের মতো এবারও শেষ বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীরাই পুজোর আয়োজন করছে। তাঁরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানায়।বিচারপতি জানান, যোগেশ চন্দ্র চৌধুরী কলেজে প্রতিবছরের মতো এবারও দুটি পুজোই হবে এবং নির্দিষ্ট স্থানে হবে। পাশাপাশি, কলেজ কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব রয়েছে এবং তাঁদের সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতেই হবে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত হয়েছে।