অনিরুদ্ধ সরকার
কুম্ভে বিশেষ পুণ্যতিথির স্নানকে ‘শাহী’ স্নান বলে। এ বারের ৪৪ দিনের মহাকুম্ভে ছ’টি শাহী স্নানের দিন রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মৌনী অমাবস্যার শাহী স্নান।
কুম্ভমেলার প্রথম স্নান হয়েছে ১৪ জানুয়ারি। যা ছিল মকর সংক্রান্তি প্রথম শাহী স্নান। এরপর ২৯ জানুয়ারি মৌনী অমাবস্যায় দ্বিতীয় শাহী স্নান। এই স্নানটিই অন্যতম কুম্ভ স্নান হিসেবে পরিচিত। অন্য স্নানগুলি বিশেষ যোগ বিশেষের স্নান। ৩ ফেব্রুয়ারি বসন্ত পঞ্চমীর দিনে তৃতীয় শাহী স্নান রয়েছে। ১২ ফেব্রুয়ারি মাঘী পূর্ণিমায় রয়েছে পূণ্যস্নানের যোগ। ২৬ ফেব্রুয়ারি, মহাশিবরাত্রিতে শেষ শাহী স্নান।
মহাকুম্ভে স্নান করতে কুম্ভক্ষেত্রে যোগ দিয়েছেন অ্যাপলের প্রাক্তন সিইও স্টিভ জোবসের স্ত্রী লোরেন পাওয়েল জোবস। তিনি দীক্ষাও নিয়েছেন। নিয়েছেন নতুন নামও। কুম্ভে অনেকেই নতুন করে দীক্ষা নেন। সন্ন্যাসী হন। কুম্ভ জুড়ে হাজারো সাধু সন্ত, মাতাজীদের ভিড়। আইআইটি বাবা থেকে অ্যম্বাসেডার বাবা, পাইলট বাবা আরও কত কী!
সাধুদের পাশাপাশি এই মহাকুম্ভ উপলক্ষে কুম্ভক্ষেত্রে যোগ দিতে চলেছেন অমিতাভ বচ্চন থেকে রণবীর কাপুরের মত বলিউডের জনপ্রিয় নামী-দামী তারকারা। আসছেন আরও বহু সেলিব্রিটি। সব তারকাদের থাকার জন্য অত্যাধুনিক সুবিধাযুক্ত শিবির তৈরি করা হয়েছে। মহাকুম্ভে স্থিত ‘গঙ্গামণ্ডপে’ আয়োজন করা হয়েছে সঙ্গীতানুষ্ঠান। যেখানে একসঙ্গে গলা মেলাবেন শঙ্কর মহাদেবন, কৈলাশ খের, সোনু নিগম থেকে শ্রেয়া ঘোষালের মতন বিখ্যাত শিল্পীরা।
কুম্ভমেলায় আখড়াগুলির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। যেমন জুনা আখড়া, নির্বানি আখড়া, নিরঞ্জনী আখড়া ইত্যাদি। এরা অনেকটাই কুম্ভমেলার নীতি নির্ধারক। এই আখড়া প্রথার প্রবর্তক ছিলেন আদি শঙ্করাচার্য। তিনিই এই কুম্ভমেলার পথ প্রদর্শক বলে গবেষকরা মনে করেন। জুনা আখড়ার প্রধান মোহন্ত কুম্ভ স্নান প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘বসুধৈব কুটুম্বকম, মহাকুম্ভে বিশ্বকে একজায়গায় দেখা যায়।’