নিজস্ব প্রতিনিধি: হিন্দু ধর্মের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় সমাগম মহাকুম্ভ মেলা চলছে প্রয়াগরাজে। লক্ষ লক্ষ তীর্থযাত্রী, সাধু-সন্ন্যাসী ও পর্যটকের ভিড়ে মেতে উঠেছে এই পবিত্র আয়োজন। এই মহাযজ্ঞের অংশ হতে গিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ ও অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তৃণমূল সাংসদ ও জনপ্রিয় অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় সদ্য প্রয়াগরাজে গিয়েছিলেন মহাকুম্ভ মেলায় যোগ দিতে। এই বিশাল ধর্মীয় সমাগম ও তার পরিবেশ দেখে অভিভূত রচনা নিজের অনুভূতি শেয়ার করেছেন। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রচনা বলেন, ‘এখানে মানুষজন যে ভাবে মেতে উঠেছেন, তা সত্যিই অভাবনীয়। এত মানুষ এসেছেন, কিন্তু কেউ অভিযোগ করছেন না। সবাই ধর্মীয় ভক্তিতে নিমগ্ন। এখানে যে আধ্যাত্মিক অনুভূতি, তা সত্যিই অসাধারণ।’
মহাকুম্ভে লাখ লাখ মানুষের সমাগমের কারণে জায়গার সমস্যা তো থাকেই। তবে তীর্থযাত্রীরা সব কিছু সয়ে নিয়েও তীর্থস্থানে আসতে দ্বিধাবোধ করেন না। এই প্রসঙ্গেই রচনা বলেন, ‘মানুষ এখানে শুধু ধর্মীয় বিশ্বাসের টানে আসেন। যদি ব্রিজের তলায়ও থাকতে হয়, তাও তাঁরা কষ্ট স্বীকার করতে রাজি।’
এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে, ধর্মীয় অনুভূতি মানুষকে এতটাই অনুপ্রাণিত করে যে তাঁরা যেকোন অবস্থায় থেকেও মহাকুম্ভের অংশ হতে চান।
উল্লেখ্য, রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে রচনার ভূমিকা বদলেছে। সাংসদ হিসাবে মানুষের অভাব-অভিযোগ শুনতে হচ্ছে, তাঁদের সমস্যার সমাধান করতে হচ্ছে। মহাকুম্ভে এসে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে তিনি তাঁদের অনুভূতি ও প্রত্যাশা বোঝার চেষ্টা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘মানুষের বিশ্বাস, ভালোবাসা ও ধর্মীয় ভক্তি আমাকে মুগ্ধ করেছে। একজন সাংসদ হিসেবে মানুষের জীবনযাত্রা কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেলাম।’
মহাকুম্ভ মেলা চারটি পবিত্র স্থানে পালিত হয় – প্রয়াগরাজ, হারিদ্বার, উজ্জয়িনীর ও নাসিক। প্রতি ১২ বছর অন্তর আয়োজিত হয় এই ধর্মীয় অনুষ্ঠান, যেখানে স্নান করলে মোক্ষ লাভ হয় বলে বিশ্বাস করা হয়। মহাকুম্ভ মেলায় গিয়ে সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় যে অভিজ্ঞতা লাভ করেছেন, তা তাঁর মনে গভীর প্রভাব ফেলেছে। ধর্মীয় বিশ্বাস কতটা শক্তিশালী হতে পারে, তার বাস্তব চিত্র তিনি নিজে দেখেছেন। এই পবিত্র আয়োজন ও মানুষের বিশ্বাস তাঁকে আরও অনুপ্রাণিত করেছে।
এই প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান–
নিশ্চয় একটা ঘটনা ঘটেছে। সেটা খুব চিন্তার বিষয়। তবে যে ঘটনা ঘটেছে সেটা ঘটা উচিত ছিল না। যদি প্রশাসনিক ব্যবস্থা এত সুন্দর হয় তাহলে সেই ঘটনা ঘটা উচিত হয়নি। কিন্তু যেটা ঘটে গেছে সেটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক এবং সেই ঘটনা ঘটার পর প্রশাষন আরো সজাগ হয়েছে। কোন স্পেশাল ব্যবস্থা নেই । মানুষ যাতে সহজে হাঁটতে পারে তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোন স্পেশাল দর্শন নেই। একটা নির্দিষ্ট জায়গায় পর সবাইকে হেঁটে যেতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে ব্যবস্থাপনা খুব ভালো।।
উল্লেখ্য এবারের কুম্ভ মেলায় বসন্ত পঞ্চমী উপলক্ষ্যে স্নানের বিশেষ দিন বা “অমৃত স্নান” যোগ ছিল। সোমবার সকালে সেই যোগে ত্রিবেণী সঙ্গমে স্নান করেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। একেবারে গেরুয়া বসন পরে সঙ্গমে স্নান করার মুহুর্তে এক ভিডিও বার্তায় তিনি জানান, এখানে ঠাকুরের ইচ্ছা না থাকলে আসা যায় না। ঠাকুর আমাকে সেই ভরসা দিয়ে পাঠিয়েছে আর তাই আমি সরস্বতী পূজার দিনে বসন্ত পঞ্চমীতে পূর্ন স্নান সারলাম। বাবার জন্য তর্পণ করলাম। এবং অত্যন্ত খুশি মনে আমি কলকাতায় আপনাদের কাছে ফেরত যাবো। হর হর মহাদেব।