ত্রিবেণী সঙ্গমে শুরু অনুকুম্ভ

দেশ রাজ্য সংস্কৃতি

নিউজ প্রতিনিধি: ১৪৪ বছর পর প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভ। মহাকুম্ভ উপলক্ষে সারা বিশ্ব যেন এসে মিশেছে প্রয়াগরাজের ত্রিবেণী সঙ্গমে। এবার ত্রিবেনীতে ভূমি পুজোর মাধ্যমে শুরু হয়েছে অনু কুম্ভ। বুধবার ত্রিবেণী কুম্ভ মেলার মাঠে যজ্ঞ আয়োজন করা হয় এবং কুম্ভ মেলার ধ্বজত্তোলন করা হয়। ত্রিবেনীতে গত তিন বছর ধরে মাঘি সংক্রান্তিতে কুম্ভ মেলা হয়েছিল। প্রয়াগরাজে যেমন গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতীর সঙ্গম রয়েছে তেমনি ত্রিবেনীতেও তিনটি নদীর সঙ্গম দেখা যায়। প্রয়াগে একে যুক্তবেণী, ত্রিবেণীকে মুক্তবেণী ও দক্ষিণ প্রয়াগও বলা হয়।

ইতিহাসে আছে, কানাডিয়ান লেখক এলেন মরিনিসের একটি বইতে ত্রিবেণী কুম্ভের উল্লেখ রয়েছে। তাছাড়া, পুরাণেও ত্রিবেণীর উল্লেখ রয়েছে। স্কন্দপুরাণের মতে, কুশদ্বীপের রাজা প্রিয়বন্তের সাতটি পুত্র ছিলেন, যাদের মধ্যে তারা ত্রিবেণীর আশেপাশে সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। এই এলাকাতে সাতটি গ্রামের নামও রয়েছে যেমন, বাসুদেবপুর, বাঁশবেড়িয়া, নিত্যানন্দ, কৃষ্ণপুর, দেবানন্দপুর, শিবপুর ও বলদঘাটি। এসব গ্রাম আগে বাণিজ্য বন্দর হিসেবে পরিচিত ছিল, যার ফলে ত্রিবেণীর জনপ্রিয়তা বাড়ে। যদিও পরবর্তীকালে বিদেশী আক্রমণের কারণে এই অঞ্চলের মাহাত্ম্য কিছুটা কমে যায়, তবে মাঘ সংক্রান্তিতে ত্রিবেনীতে স্নান করার জন্য বহু মানুষ আসেন। এই ঐতিহ্যকে সামনে রেখেই ত্রিবেণী অনু কুম্ভের সূচনা হয়েছে।

১১ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয়ার্ধে মেলায় ভিড় জমাবে বহু সাধু সন্তরা। নাগা সাধু থেকে বিদেশী সাধুরা আসবে। সেখানে যজ্ঞ, ধর্ম সম্মেলন, নগর কীর্তন, শাহী স্নান এবং ভান্ডারা অনুষ্ঠিত হবে। থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। পাশাপাশি ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা, পরীক্ষার্থীদের যাতে কোনো অসুবিধা না হয় সেই কারণে মেলার চারপাশে পাঁচটি স্কুলে পরীক্ষা কেন্দ্র করা হয়নি। গত বছরের মত এ বছরেও মেলা নিয়ে অনুমতি বিষয়ক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়নি, কারণ প্রশাসন আগে থেকেই প্রস্তুত। প্রয়াগরাজে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার পর, ত্রিবেণী কুম্ভের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপস্থিত ছিলেন, জেলা শাসক, পুলিশ সুপার এবং অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। মন্ত্রী বেচারাম মান্না জানিয়েছেন, প্রয়াগরাজের অভিজ্ঞতা থেকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যাতে পুণ্যার্থীরা নিরাপদে আসতে যেতে পারেন। ত্রিবেণী কুম্ভ যেখানে অনুষ্ঠিত হবে, সেই ঘাটের পাশে রয়েছে গাজি দরগা। একই সময়ে এখানে উরস উৎসবও অনুষ্ঠিত হবে। তাই দুই উৎসবকে ঘিরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি যাতে বজায় থাকে তার দিকেও সতর্ক নজর থাকবে।