নিউজ পোল ব্যুরো: ভারতের মহাকাশ গবেষণা ও অভিযানের ক্ষেত্রে আগামী তিন বছর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। ২০২৭ সালে চাঁদে পাড়ি দেবে চন্দ্রযান – ৪, যা চাঁদের মাটি ও নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে নিয়ে আসবে। বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানান কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং। একইসঙ্গে তিনি গগনযান ও সমুদ্রযান অভিযানেরও সময়সীমা ঘোষণা করেন।
চন্দ্রাযান – ৪ মিশনের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল এটি প্রথমবার চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনবে। মিশনটিতে দুটি হেভি লিফ্ট, এলভিএম – ৩ রকেট ব্যবহার করা হবে, যা পাঁচটি প্রধান অংশকে মহাকাশে নিয়ে যাবে। এই অংশগুলিকে চাঁদের কক্ষপথে একত্রিত করা হবে এবং সেখান থেকে নির্দিষ্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে নমুনা সংগ্রহ করা হবে। এটি ভারতের মহাকাশ গবেষণায় এক নতুন মাইলফলক স্থাপন করবে। ২০২৪ সালে গগনযান মিশনের মাধ্যমে ভারত প্রথমবার চারজন মহাকাশচারীকে পৃথিবীর কক্ষপথে পাঠাবে। এর আগে, পরীক্ষামূলকভাবে চলতি বছরেই বিয়োমিত্র নামে এক মানবসদৃশ রোবট মহাকাশে পাঠানো হবে এবং তারপর সেটিকে ফিরিয়ে আনা হবে। এই পরীক্ষার সাফল্যের ওপর ভিত্তি করে ২০২৫ সালে মানব অভিযানের চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হবে।
শুধু মহাকাশ নয়, সমুদ্রের অতল গভীরেও অভিযান চালাবে ভারত। ২০২৫ সালেই চালু হবে সমুদ্রযান মিশন, যেখানে বিশেষভাবে তৈরি সাবমার্সিবল ভেসেলে করে তিনজন বিজ্ঞানী সমুদ্রের ৬ হাজার মিটার গভীরে গিয়ে গবেষণা করবেন। এই অভিযানের মূল লক্ষ্য সমুদ্রতলের মূল্যবান খনিজ সম্পদ ও সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য অধ্যয়ন করা, যা ভারতের অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত উন্নতির জন্য অপরিহার্য। জীতেন্দ্র সিংয়ের মতে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে গত এক দশকে ভারতের মহাকাশ গবেষণায় বিপুল উন্নতি হয়েছে। ১৯৬৯ সালে ইসরো প্রতিষ্ঠিত হলেও, প্রথম লঞ্চপ্যাড তৈরী হয় ১৯৯৩ সালে এবং দ্বিতীয়টি ২০০৪ সালে। বর্তমানে, ভারী রকেট উৎক্ষেপণের জন্য তৃতীয় লঞ্চপ্যাড নির্মাণের কাজ চলছে। পাশাপাশি, ছোট রকেট উৎক্ষেপণের জন্য তামিলনাড়ুর তুতিকোরিনে নতুন উৎক্ষেপণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে।
বর্তমানে, ভারতের মহাকাশ অর্থনীতির মূল ৮০০ কোটি মার্কিন ডলার। এই বৃদ্ধি বজায় থাকলে আগামী দশকে তা ৪৪০০ কোটি মার্কিন দলের – এ পৌঁছাতে পারে। সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি বিনিয়োগ ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়ার ফলে, ভবিষ্যতে ভারত বিশ্ব মহাকাশ শক্তিধর দেশগুলির তালিকায় জায়গা করে নেবে।