নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কল্যাণীর বিস্ফোরণ কান্ডের পর রিপোর্ট চেয়ে পাঠাল নবান্ন। কোন কারণে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হল? কি করে ঘটলো বিস্ফোরণ? কতজন মারা গিয়েছেন এছাড়াও আর কেউ আহত হয়েছেন কিনা সমস্তটাই জানতে চাওয়া হয়েছে নবান্নের তরফে। এরইমধ্যে জেলা প্রশাসন ও পুলিশের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে নবান্নের তরফে। কল্যাণীর বিস্ফোরণ হওয়া স্থানটি ও তার আশেপাশে মোতায়েন করা হয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স ও পুলিশ বাহিনী। ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সে কারণে তৎপর রয়েছে প্রশাসন।
পাশাপাশি জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলার অধীনে কোথায় কোথায় বাজি বিক্রি হচ্ছে কিংবা মজুত করে রাখা হয় তার তালিকা তৈরী করতে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে পরিবেশ বান্ধব বাজি তৈরীর প্রশিক্ষণ দিতে শুরু হবে শিবির। কেবলমাত্র পরিবেশবান্ধব বাজি বানানো হবে এবার থেকে যাতে কোনও ভাবেই তার অন্যথা না হয় সে বিষয়ে কড়া নজর রাখবে প্রশাসন। বাজি কারখানার তালিকা তৈরী করে বেআইনি কারখানা বন্ধ করতে হবে। বৈধ কারখানায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। যাতে বাজি কারখানার জন্য পরিত্যক্ত জমি চিহ্নিত করা যায় সে বিষয়েই নজর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে।

প্রশাসন সূত্রে খবর, যে নিয়মগুলি রয়েছে:
১৫ কেজি পর্যন্ত বাজি ও বাজির মশলা তৈরীর জন্য লাইসেন্স দেন জেলাশাসক। ১৫ কেজি থেকে ৫০০ কেজি হলে ‘কন্ট্রোলার অব এক্সপ্লোসিভস’-এর কাছ থেকে লাইসেন্স নিতে হয়। কিন্তু তারও বেশি ওজনের বাজির ব্যবসা যদি করতে হয়, তাহলে লাইসেন্স দেন ‘চিফ কন্ট্রোলার’। পাশাপাশি, মশলা তৈরী, বাজি তৈরী ও প্যাকেটবন্দি করার কাজও আলাদাভাবে লাইসেন্স নেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু এ বিষয়ে মিলছে না পরিবেশ দফতরের হিসাব। এই সমস্ত কাজের জায়গার মধ্যে দূরত্ব থাকা উচিত ১৫ মিটার, যা আর্থিক লেনদেনেই চাপা পড়ে যায় খুব সহজেই।
যে কারণেই দুর্ঘটনার খবর মিলছে হামেশাই বলে অভিযোগ। এই বিষয়ে পরিবেশ দফতরের আরও একটি তথ্য বলছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শুধুমাত্র সবুজ বাজি তৈরীর সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে যাতে বে-আইনি বাজি বিক্রি করা না হয়, তার জন্য আদালতের সুস্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু এরপরেও মানা হচ্ছেনা সেই নিয়ম। সেখানেও অজ্ঞাত কারণে একইভাবে চলছে অবৈধ বাজি তৈরীর কাজ। রাজ্যে সবুজ বাজি তৈরীর জন্য ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট’ (নিরি) ছাড়পত্র দিয়েছে মাত্র ২৬টি সংস্থাকে। ফলে বাকিরা নানান পন্থা অবলম্বন করে লেনদেন করছেন বেআইনিভাবে, এমনটাই অভিযোগ। এখন দেখার সবকিছু জানার পরেও নবান্নের তরফে কোন কড়া পদক্ষেপ করা হয়।