নিউজ পোল ব্যুরো : ২০২৪, ৮ আগস্ট আরজিকরে ঘটে যাওয়া ঘটনায় কেঁপে উঠেছিল কলকাতা থেকে গোটা বিশ্ব। অভিযোগের পর অভিযোগ আর পাল্টা অভিযোগে রীতিমতো তপ্ত হয়ে উঠেছিল সকলেই। সময়ের চাকায় গড়িয়ে গেছে ছয়টি মাস, কিন্তু আজও অভয়ার মৃত্যুর বিচার অধরা। একমাত্র অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে কালপ্রিট মানতে নারাজ অভয়ার পরিবার থেকে সিনিয়র-জুনিয়র চিকিৎসক মহল। সিবিআই-এর ভূমিকা নিয়েও উঠছে একাধিক প্রশ্ন। এই অস্থিরতার মাঝেই আজ ৯ ফেব্রুয়ারি সারা দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে অভয়ার জন্মদিন। অভয়ার জন্মদিন উপলক্ষে প্রয়াগরাজে সপরিবারে পুণ্যস্নান করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার এবং তাঁর স্মৃতির উদ্দেশ্যে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে তর্পণ করলেন। তিনি বলেন, ‘অভয়া আমাদের পরিবারের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন, তাঁর শূন্যতা আমাদের হৃদয়ে চিরকালীন দুঃখ রেখে গেছে। তাঁর প্রতি আমাদের ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও স্মৃতি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। অভয়ার জন্মদিনে আমরা তাঁকে গভীরভাবে স্মরণ করছি এবং তাঁর বিদেহী আত্মার চিরশান্তির জন্য সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা জানাচ্ছি।’
অভয়ার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তিনি তাঁর দুই কন্যার সঙ্গে একটি বৃক্ষরোপণ করেন। সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘এটি শুধু একটি প্রতীকী কাজ নয়, বরং অভয়ার স্মৃতিকে চিরস্থায়ী করে রাখার একটি প্রয়াস। প্রকৃতি আমাদের জীবনধারণের অপরিহার্য অংশ, আর বৃক্ষ আমাদের জীবন-সংগ্রামের নীরব সাক্ষী। এই বৃক্ষগুলো বড়ো হয়ে ছায়া দেবে, ফল দেবে এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করবে, ঠিক যেমন অভয়া আমাদের জীবনে আলো ও অনুপ্রেরণার উৎস ছিল। তাঁর স্মৃতিকে সম্মান জানিয়ে আমরা প্রকৃতির প্রতিও দায়বদ্ধতার পরিচয় দিতে চাই। অভয়ার আত্মা যেমন বিশুদ্ধ ছিল, তেমনই প্রকৃতির মাঝে তাঁকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে চাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই সমাজে প্রতিটি নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের অন্যতম দায়িত্ব। অভয়ার জন্য আমরা যে সংগ্রাম করছি, তা কেবল তাঁর জন্য নয়, প্রতিটি মেয়ের জন্য, প্রতিটি নারীর জন্য, যাতে tanra সমাজে নির্ভয়ে, সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে পারে। আমরা চাই না, আর কোনো পরিবার অভয়ার বাবা-মায়ের মতো এই দুঃখ-কষ্ট ভোগ করুক। তাই আমাদের আন্দোলন, আমাদের প্রচেষ্টা শুধুমাত্র অভয়ার জন্য ন্যায়বিচার আদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং নারীর সুরক্ষা ও সম্মান নিশ্চিত করার বৃহত্তর লক্ষ্যকেও ধারণ করে।’
উল্লেখ্য, বেশ কিছুদিনআগে আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের কাছে গিয়েছিলেন নির্যাতিতার বাবা মা। তারপর আজ জন্মদিন পালন করতে রাস্তায় নেমেছেন। আজ যদি বেঁচে থাকতেন তাহলে ওই তরুণী চিকিৎসক ৩২ বছরে পা দিতেন। এক বছরের জন্মদিন ধুমধাম করে পালন করা হলেও বাকি সবসময় ঘরোয়াভাবেই পালন করা হতো মেয়ের জন্মদিন। ওই নিহত চিকিৎসক মেয়ে মায়ের হাতের তৈরি গুড়ের পায়েস খেতে ভালবাসতেন। ওই পায়েস আর কখনই বানাবেন না বলে রবিবার জানিয়েছেন তাঁর মা। মেয়ের জন্মদিনে সন্তানহারা মা–বাবা বলেন, ‘আগের লড়াইটা ছিল মেয়ের স্বপ্ন পূরণের। ওকে ডাক্তার বানানোর। এখন লড়াই করছি, মেয়ের ধর্ষণ–খুনের বিচারের জন্য।’