নিউজ পোল ব্যুরো: ১৪৪ বছর পর মহাকুম্ভের এই বিশেষ আয়োজন ভালোই চলছিল। লাখ লাখ পুণ্যার্থীর ঢল নামছিল প্রয়াগরাজে। প্রত্যেকেই এসেছিলেন পুণ্যস্নানের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধির আশায়। কিন্তু এই পুণ্যলাভের মুহূর্ত যে কারো জীবনের শেষ স্মৃতি হয়ে যাবে, তা কল্পনাও করতে পারেননি ৭৯ বছরের বৃদ্ধা এবং সাত বছরের একরত্তি ওই শিশু। প্রশ্ন উঠছে যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে। এত বিশাল আয়োজন, অথচ সেই ভিড় সামলানোর সঠিক ব্যবস্থার অভাব ছিল কি? কেন এমন ভয়াবহ ঘটনা ঘটতে দিল প্রশাসন? মহাকুম্ভে এসে তাদের পরিবার এক মর্মান্তিক স্মৃতি বহন করে নিয়ে চলেছে নয়াদিল্লি রেল স্টেশনে (New Delhi Railway Station Stampede) পদপিষ্টের ঘটনায়(New Delhi Stampede) প্রাণ হারিয়েছেন মোট ১৮ জন। দিল্লি পুলিশ অবশেষে মৃতদের নাম ও পরিচয় প্রকাশ করেছে। তালিকা অনুযায়ী, মৃতদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিহারের (Bihar) বাসিন্দা। বিহারের অন্তত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। দিল্লির (Delhi) বাসিন্দা ৮ জন এবং হরিয়ানার (Haryana) একজনেরও মৃত্যু হয়েছে। সবচেয়ে মর্মান্তিক বিষয় হল, এই দুর্ঘটনায় সাত বছরের শিশু থেকে ৭৯ বছরের বৃদ্ধা কেউই বাদ যাননি।
দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া শিশুদের মধ্যে একজনের নাম সুরুচি শাহ। তাঁর বাবা মনোজ শাহ জানান, ঘটনাস্থলে(New Delhi) পুলিশ পৌঁছাতে অনেক দেরি হয়েছিল। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘‘আমার মেয়েটা হয়তো বেঁচে যেত, কিন্তু বহু মানুষ তাকে মাড়িয়ে চলে যায়।’’ দুঃখ প্রকাশ করে মনোজ আরও বলেন, ‘‘বিশ্বাস করতে পারছি না, আমার ছোট্ট মেয়েটা আর নেই। আমার ও আমার স্ত্রীর জীবন শেষ হয়ে গেল। আমার শ্যালক, যিনি মহাকুম্ভে (Maha Kumbh) যাচ্ছিলেন, আমাকে ফোন করে জানান, স্টেশনে ছোটাছুটি শুরু হয়েছে এবং সবাই আলাদা হয়ে গিয়েছে। এরপর আমি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ি।’’ তিনি আরও জানান, তাঁর শ্যালকের ফোন পেয়ে সুরুচিকে খুঁজতে যান তাঁরা(New Delhi Stampede)। অনেকক্ষণ পরে তাঁরা একে অপরকে খুঁজে পান, তবে তখন সুরুচি আর বেঁচে ছিল না। মনোজ বলেন, ‘‘সুরুচি আমার একমাত্র মেয়ে। ক্লাস ফাইভে পড়ত। আমার স্ত্রী তাঁর মা-বাবাকেও হারিয়েছেন। আমাদের কী দোষ ছিল?’’
মনোজের অভিযোগ, পুলিশ ঘটনাস্থলে(New Delhi Stampede) দেরি করে পৌঁছায়। তিনি মনে করেন, সময়মতো পদক্ষেপ নিলে তাঁর মেয়ে হয়তো বেঁচে যেত। দুর্ঘটনার পর হাসপাতালে তাঁকে ঢুকতেও বাধা দেওয়া হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায়(New Delhi Stampede) মৃতদের পরিবারের শোকগ্রস্ত অবস্থার মধ্যেও প্রশ্ন উঠছে প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তার (Safety Protocol) ঘাটতি নিয়ে। যাত্রা নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ভবিষ্যতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষ।