নিউজ পোল ব্যুরো: ২০০২ সালের শরতে, যখন কাশ্মীর উপত্যকা এবং ভারতের অন্যান্য অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ (Terrorism) চরম আকার ধারণ করছিল, তখন দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের (Delhi Police Special Cell) এসিপি প্রমোদ কুশওয়াহ (ACP Pramod Kushwaha) একটি গুরুত্বপূর্ণ মিশনে শ্রীনগরে যান। সেখানে তিনি বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (BSF – Border Security Force) এক ডেপুটি কমান্ড্যান্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, যিনি তাকে একটি বিশেষ ডায়েরি(Terror Plot Foiled) দেখান। এই ডায়েরিটি একটি এনকাউন্টারে নিহত এক সন্ত্রাসীর কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। ডায়েরির শেষ পৃষ্ঠায় একটি ইমেল (Email) ঠিকানা লেখা ছিল, যা এসিপি প্রমোদ কুশওয়াহ বিশেষভাবে লক্ষ্য করেন। দিল্লিতে ফিরে এসে, তিনি তার তদন্ত দলকে (Investigation Team) এই ইমেল ঠিকানাটি পর্যবেক্ষণের নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন:- https://thenewspole.com/2025/03/01/last-date-of-applying-rrb-group-d-exam/
কিছুদিন পর্যবেক্ষণের পর, তদন্তকারীরা লক্ষ্য করেন যে এই ইমেল ঠিকানাটি বিভিন্ন সাইবার ক্যাফে (Cyber Café) থেকে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং এতে কোডেড ভাষায় বার্তা পাঠানো হচ্ছে। এগুলো এমনভাবে লেখা ছিল, যা সরাসরি বোঝা সম্ভব হচ্ছিল না। পুলিশের সন্দেহ হয় যে এই বার্তাগুলো সন্ত্রাসী কার্যকলাপের (Terrorist Activities) সাথে যুক্ত। কিন্তু মেসেজগুলো ডিকোড (Decode) করা ছিল অত্যন্ত কঠিন। তদন্ত দল প্রচেষ্টা চালালেও তারা সাইফার (Cipher) ব্রেক করতে ব্যর্থ হচ্ছিল।
২০০৩ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি, যখন তদন্তকারীরা কোড ব্রেকিং (Code Breaking) করতে হিমশিম খাচ্ছিলেন, তখন এক আশ্চর্যজনক ঘটনা ঘটে। দিল্লিতে চাকরির (Job Search) সন্ধানে(Terror Plot Foiled) আসা বিবেক ঠাকুর (Vivek Thakur) নামের এক বেকার যুবক এসিপি প্রমোদ কুশওয়াহর সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তিনি ছিলেন এসিপি-র স্কুলের জুনিয়র। এসিপি প্রমোদ কুশওয়াহ তাকে তদন্ত সম্পর্কে জানান এবং কোডেড মেসেজগুলোর (Encrypted Messages) কথা বলেন। গণিত ও লজিক্যাল বিশ্লেষণে (Logical Analysis) পারদর্শী বিবেক ঠাকুর কোডগুলো পরীক্ষা করে দেখেন এবং দ্রুত এর অর্থ বুঝতে সক্ষম হন।বিবেক বুঝতে পারেন, এটি একটি সহজ প্রতিস্থাপন সাইফার (Substitution Cipher), যেখানে প্রতিটি অক্ষরকে নির্দিষ্ট সংখ্যার সঙ্গে প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। কোডটি ছিল নিম্নরূপ:
A B C D E F G H I J K L M N
.1 .2 .3 .4 .5 .6 .7 .8 .9 00 .01 .02 .03
O P Q R S T U V W X Y Z
.04 .05 .06 .07 .08 .09 000 .001 .002 .003 .004 .005
কিছু মেসেজের শেষে “-5” বা “-7” লেখা থাকত, যার অর্থ ছিল নির্দিষ্ট সংখ্যক অক্ষর পিছিয়ে পড়তে হবে। উদাহরণস্বরূপ, এক মেসেজে লেখা ছিল:
“.05 .000 .00 .05.7.03 .7 .0 .4 -7”
নিউজ পোল বাংলা ফেসবুক পেজের লিঙ্ক:- https://www.facebook.com/share/164mWXbsyp/
বিবেক এই সংকেত বিশ্লেষণ করে দেখেন যে, এটি “India Gate” নির্দেশ করছে। অর্থাৎ, সন্ত্রাসীরা ২৫ ফেব্রুয়ারি ইন্ডিয়া গেটে (India Gate) একটি হামলা (Attack) চালানোর পরিকল্পনা করছিল। এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার পর, দিল্লি পুলিশ (Delhi Police) ইন্ডিয়া গেট এবং তার আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা (Security) জোরদার করে। পুলিশি প্রস্তুতির কারণে সন্ত্রাসীরা তাদের হামলার পরিকল্পনা বাতিল করতে বাধ্য হয়। এই ঘটনাটি প্রমাণ করে যে কখনও কখনও সাধারণ মানুষের বুদ্ধিমত্তা ও সাহসিকতা জাতীয় নিরাপত্তায় (National Security) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এক বেকার যুবকের (Unemployed Youth) অসাধারণ বুদ্ধিমত্তা ও তৎপরতার কারণে দিল্লি (Delhi) এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা(Terror Plot Foiled) থেকে রক্ষা পায়।এই ঘটনা শুধু পুলিশি তদন্তের (Police Investigation) একটি সফল দৃষ্টান্তই নয়, বরং এটি প্রমাণ করে যে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং সহযোগিতার মাধ্যমে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ রোধ করা সম্ভব।