নিউজ পোল ব্যুরো: আলিপুরের জাতীয় গ্রন্থাগার (National Library Kolkata)–এর বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে সরব হলেন বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ী (Ashok Lahiri)। তিনি সরাসরি রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী (Library Minister) সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী (Siddiqullah Chowdhury)-র কাছে জানতে চান, গ্রন্থাগারের ভগ্নদশা রোধে রাজ্য সরকার (State Government) কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে কি না। উত্তরে গ্রন্থাগার মন্ত্রী জানান, জাতীয় গ্রন্থাগার সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকার (Central Government)-এর অধীনে পরিচালিত হয়, তাই রাজ্য সরকারের সেখানে কোনো হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, রাজ্য সরকারের তরফ থেকে বারবার জাতীয় গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের (Meeting) প্রস্তাব দেওয়া হলেও, তাঁদের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। বরং রাজ্যের ভূমিকাকে এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন:- Bratya Basu: যাদবপুরের ছাত্রের সঙ্গে কি ঘটেছিল জানতে ফরেন্সিক পরীক্ষায় ব্রাত্য বসুর গাড়ি
এই উত্তরে সন্তুষ্ট হননি বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ী। তিনি মন্ত্রীকে পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, “এখন আপনারা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। কিন্তু ভবিষ্যতে যদি জাতীয় গ্রন্থাগার সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়, তখন কি আপনারা প্রতিবাদ করবেন না? তখন কি আবার বলবেন যে কেন্দ্র সরকার ষড়যন্ত্র করে এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান সরিয়ে দিচ্ছে?” এই মন্তব্যের উত্তরে গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বলেন, “আপনাকেই দায়িত্ব দিচ্ছি, আপনি কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলে জাতীয় গ্রন্থাগার সারানোর ব্যবস্থা করুন।” তাঁর এই বক্তব্যে স্পষ্ট, রাজ্য সরকার এই বিষয়ে কেন্দ্রের দায়িত্বকেই তুলে ধরতে চাইছে। এই আলোচনায় যোগ দেন পার্শ্ববর্তী বিধানসভার তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) বিধায়ক ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। তিনি জানান, ২০১৪ সালের আগে জাতীয় গ্রন্থাগারে (National Library Kolkata) যে কোনো সরকারি অনুষ্ঠান (Official Event) বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান (Cultural Event) হলে, স্থানীয় বিধায়ক বা সাংসদদের সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হতো। কিন্তু ২০১৪ সালের পর থেকে এই আমন্ত্রণ বন্ধ হয়ে গেছে। তাঁর অভিযোগ, জাতীয় গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষ এখন আর রাজ্যের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কোনো আলোচনাই করে না।
নিউজ পোল বাংলা ফেসবুক পেজের লিঙ্ক:- https://www.facebook.com/share/164mWXbsyp/
এই বিতর্ক স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, জাতীয় গ্রন্থাগার সংক্রান্ত বিষয়টি কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যকার এক বড় রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেস উভয়ই একে অপরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। তবে বাস্তবিকভাবে, এই ঐতিহ্যবাহী গ্রন্থাগারের সংস্কার ও সংরক্ষণ নিয়ে কার্যকর কোনো সমাধান এখনো দেখা যাচ্ছে না। জাতীয় গ্রন্থাগার, কলকাতা (National Library Kolkata) ভারতের বৃহত্তম গ্রন্থাগার এবং দেশের অন্যতম প্রধান প্রত্নতাত্ত্বিক ও সাহিত্য সংরক্ষণাগার (Archaeological and Literary Archive)। এই গ্রন্থাগারটির রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি, কারণ এটি ভারতীয় ইতিহাস, সংস্কৃতি ও জ্ঞানের এক অমূল্য ভাণ্ডার। তবে বর্তমান প্রশাসনিক জটিলতার কারণে এর ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই বিতর্ক থেকে স্পষ্ট যে, জাতীয় গ্রন্থাগারের বর্তমান অবস্থার উন্নতি করতে হলে কেন্দ্র ও রাজ্যকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। রাজনৈতিক বাদানুবাদের বাইরে এসে, বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা গ্রহণ করাই একমাত্র সমাধান।