শুভম দে: বঙ্গ বিজেপির (BJP WB) সৌজন্যে দিনভর রাজ্যজুড়ে সাড়ম্বরে পালিত হলো রামনবমী (Ramnavami)। রামের (Shree Ram) নামে মুখরিত হলো বাংলার আকাশ-বাতাস। তবে বাদ গেল না শাসকদল (Rulling Party) তৃণমূলও (TMC)। কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh), অনুব্রত মন্ডলরাও (Anubrata Mondal) সমান তালে টেক্কা দিলেন সুকান্ত (Sukanta Majumdar)-শুভেন্দুদের (Suvendu Adhikari)। আর দিনশেষে লাইমলাইটে ‘মহাগুরু।‘ রাম নবমী ঘিরে এ রাজ্যের গেরুয়া শিবির চেষ্টার কোন কসুর রাখেনি। সকাল থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছোট-বড়-মেজ-সেজো সব নেতারাই নেমে পড়েছিলেন রাস্তায়। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কেউ হাতে তুলে নিলেন গদা, কেউ তরোয়াল কেউ বা লাঠি হাতে দেখালেন কসরত। আর বারাসাতে ভগবান রামকে ছাপিয়ে দেখা গেল একজনকে ঘিরে মানুষের উচ্ছ্বাস। তিনি মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। রবিবার হুড খোলা জিপে রাজ্য বিজেপি সভাপতি (State BJP President) সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে রোড শো করেন মিঠুন চক্রবর্তী।
আরও পড়ুন: Ram Navami 2025: ধর্ম বনাম রাজনীতি! কোন দিকে ঝুঁকছে বঙ্গ?
আগামী বছরই রয়েছে বিধানসভা নির্বাচন। ফলে এবারের রাম নবমী যে রাজ্য রাজনীতিতে আলাদা মাত্রা নেবে তা বোঝাই গিয়েছিল। আর সারাদিন জুড়ে সেই চিত্রই উঠে এল রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে। রবিবার রাম নবমীর মিছিলে যোগদানের পর নিউটাউনের একটি অভিজাত হোটেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন অভিনেতা তথা বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। আর উঠে এল চাকরি বাতিল থেকে রাম নবমী নানান ইস্যু।
কেমন দেখলেন রাজ্যে রাম নবমী? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নে মহাগুরু (Mithun Chakraborty) জানান, “সনাতনীরা এক ছাতার তলায় আসছে। দেখে ভাল লাগছে। ভগবান রাম সকলের মঙ্গল করুন।“ অন্যদিকে তৃণমূলের রাম নবমী পালনের হিড়িক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ভগবান রাম সকলকে সুমতি দিক।“ রামের নামে জিগির তুলে রাজ্যে বিভেদ সৃষ্টি করছে বিজেপি এমনটাই বলেছিলেন তৃণমূলের লোকসভা নেতা তথা কলকাতা উত্তরের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রশ্নের জবাবে প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ বলেছেন, “বিভেদের কোন প্রশ্ন নেই। রাম নবমী হিন্দুদের জনপ্রিয় উৎসব। এর মাধ্যমে তৃণমূলকে সরানোর পরিকল্পনা নেই বিজেপির। নিজেদের চেষ্টায় রাজ্য থেকে এই সরকারকে উৎখাত করবে বিজেপি।“

এদিন রাজ্যের অনেক জায়গাতেই দেখা গিয়েছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ছবি। মালদাতেও দেখা গিয়েছে রাম নবমীর শোভাযাত্রায় পুষ্পবৃষ্টি করছেন মুসলিমরা। শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের মিষ্টিমুখও করিয়েছেন তাঁরা। ধর্মীয় ভেদাভেদ দূরে সরিয়ে পরস্পরকে আলিঙ্গনও করেন দুই সম্প্রদায়ের মানুষ। সম্প্রতি মোরা বাড়ির ঘটনায় উত্তাল হয়েছিল বাংলার রাজনীতি। যার পরিপ্রেক্ষিতে এই ছবি নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। এই প্রসঙ্গে মিঠুন চক্রবর্তী বলেন, “এটাই তো হওয়া উচিৎ। এটাই তো বাংলার চিত্র। খুব ভাল ইঙ্গিত এটা। এই ছবিই যেন বজায় থাকে। কিছুদিন আগে যে ঘটনা (মোথাবাড়ি) ঘটেছে তা কাম্য নয়। বরং আজকের মতো ঘটনায় হওয়া প্রয়োজন।“
নিউজ পোল বাংলা ইউটিউব চ্যানেল লিংক: https://youtube.com/@newspolebangla?si=mYrQvXTBQ1lG3NFT
রাজ্যে এখন জ্বলন্ত ইস্যু ২৬০০০ শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি বাতিল। সেই নিয়েও মুখ খোলেন মিঠুন (Mithun Chakraborty)। সোমবার নেতাজী ইনডোরে চাকরিহারাদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠক নিয়ে তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী কী করবেন সেটা ওনার বিষয়। তবে ভগবানের কাছে প্রার্থনা করবো যাঁরা কষ্টে আছেন তাঁদের কষ্ট যেন ভগবান দূর করেন।“ যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন রাজ্য সরকারকে। এর মধ্যে কোন সুরাহা না হলে আগামী ২১ এপ্রিল নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছেন তাঁরা। এই প্রসঙ্গে চাকরি বাতিল নিয়ে সরকারের বিরোধীদের চক্রান্তের অভিযোগ উড়িয়ে অভিনেতা-নেতা বলেন, “এই ঘটনার জন্য ১০১ শতাংশ দায়ী রাজ্য সরকার। চাকরিহারারা সরকারের উপর আস্থা হারিয়েছেন। দেখা যাক কী হয়, নাহলে আমরাও এই বিষয়ে ভাববো।“