নিউজ পোল ব্যুরো: মেদিনীপুরের কোতোয়ালি মহিলা থানায় ছাত্রীদের হেফাজতে (Custodial Detention) থাকা অবস্থায় নির্যাতনের (Harassment) অভিযোগ নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে ব্যাপক আলোড়ন তৈরী হয়েছে। এই ঘটনায় সিসি ক্যামেরার সঙ্গে কারসাজির অভিযোগ উঠেছে এবং এই বিষয়ে সোমবার কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta High Court) শুনানি চলাকালীন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ (Justice Tirthankar Ghosh) মন্তব্য করেন , “এই ঘটনার প্রকৃত তথ্য আদালতে উপস্থাপন করেনি পুলিশ (West Bengal Police)।”
মঙ্গলবার ফের এই মামলার শুনানি নির্ধারিত হয়েছে। বিচারপতি ঘোষ স্পষ্ট ভাষায় রাজ্য প্রশাসনকে জানিয়েছেন, আদালত তথ্য গোপনের কোনও প্রচেষ্টা সহ্য করবে না। বিচারপতি রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেন , যত দ্রুত সম্ভব সমস্ত প্রাসঙ্গিক তথ্য আদালতে পেশ করতে হবে। সোমবারের শুনানিতে তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেন ১৭ ঘণ্টা ধরে ছাত্রীদের হেফাজতে রাখা হয়েছিল? কেন রাত দু’টোয় একজন অনাত্মীয়ের (Unrelated Person) হাতে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল? তিনি স্পষ্ট করে জানান, কোনও অপরাধের প্রমাণ না থাকা সত্ত্বেও ছাত্রীরা এত দীর্ঘ সময় ধরে থানায় আটকে ছিলেন, যা পুলিশের আচরণের যুক্তিসঙ্গততা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। তিনি আরও বলেন, “যে সময় মুক্তি দেওয়া হয়েছে, তখন বন্ড (Bond) নেওয়া হয়েছে। সাধারণত অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে অভিযুক্তদের বেলায় বন্ড নেওয়া হয়, কিন্তু এই ক্ষেত্রে তো তেমন কোনও প্রমাণই নেই।”
আরও পড়ুন: SSC: স্বস্তিতে রাজ্য, অতিরিক্ত পদ মামলায় হাই কোর্টের রায় খারিজ শীর্ষ আদালতে
এই মামলার একাংশে ডিএসও (DSO) সমর্থক ছাত্রীদের থানায় নির্যাতনের অভিযোগে শুনানি চলছিল। এছাড়াও, একই থানায় এসএফআই (SFI) সমর্থক ছাত্রীদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের একটি আলাদা মামলা আগে শুনানি পর্ব শেষ করেছে। সেই মামলার রায় আজ, মঙ্গলবার ঘোষণা হতে পারে বলে জানা গেছে। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত আদালতে জানান, ছাত্রীরা যে রাজনৈতিক সংগঠনের সদস্য, সেই সংগঠনের এক নেতার হাতেই তাঁদের ছাড়া হয়েছিল। পাশাপাশি তিনি উল্লেখ করেন, ‘প্রতিরোধমূলক গ্রেফতারি’ (Preventive Arrest) ধারার অধীনে বন্ড নেওয়ার বিধান রয়েছে, সেকারণেই বন্ড নেওয়া হয়েছিল।
এই পুরো ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বাভাবিকভাবেই উঠছে একাধিক প্রশ্ন। একজন অনাত্মীয় ব্যক্তি কীভাবে রাত দুটোয় থানায় প্রবেশ করে ছাত্রীদের জিম্মা নিতে পারেন? পুলিশ কি তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেছে? আদালতের (Calcutta High Court) পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, পুলিশের তরফে সম্ভবত ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এই মামলার ভবিষ্যৎ শুনানি এবং রায়ের দিকে এখন গোটা রাজ্য তথা দেশ তাকিয়ে আছে। আদালতের রায়ের ভিত্তিতে পুলিশের ভূমিকা ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপে বড়সড় পরিবর্তন আসতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল।
নিউজ পোল বাংলা ইউটিউব লিঙ্ক: https://youtube.com/@newspolebangla?si=mYrQvXTBQ1lG3NFT