Tab Scam: ট্যাব কেলেঙ্কারির পর শিক্ষা পোর্টালে বড় পরিবর্তন

দেশ রাজ্য শিক্ষা

নিউজ পোল ব্যুরো: ট্যাব-কেলেঙ্কারি (Tab Scam) থেকে বাংলার শিক্ষা নিয়ে এবার নিরাপত্তা বৃদ্ধি করল রাজ্য সরকার সরকার। বদলের প্রথম ধাপ হিসেবে এবার থেকে বাংলার শিক্ষা পোর্টালে লগ ইন করার নিয়মে যুক্ত হল ওটিপ। উল্লেখ্য, শুধুমাত্র ID ও Password ব্যবহার করলেই চলবে না, লগ ইন করার জন্য দিতে হবে ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (One Time Password), যা সরাসরি যাবে সংশ্লিষ্ট প্রধানশিক্ষকের মোবাইল নম্বরে। এই পদক্ষেপের ফলে যে কোনও সরকারি শিক্ষা প্রকল্পে অনিয়ম বা অর্থ তছরুপ হলে দায় এড়াতে পারবেন না স্কুলের প্রধানশিক্ষকেরা।

প্রসঙ্গত, গত ৪ এপ্রিল রাজ্য শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সেখানে জানানো হয়েছে, এখন থেকে কোনও স্কুল কর্মী বা আধিকারিক ইচ্ছেমতো শিক্ষা পোর্টালে লগ ইন করতে পারবেন না। নতুন ব্যবস্থায়, লগ ইন করার সময় ব্যবহারকারী ID ও Password দেওয়ার পর মোবাইলে আসবে একটি OTP (One Time Password for Portal Login)। এই ওটিপি না থাকলে শিক্ষা পোর্টালে প্রবেশ করা যাবে না। এছাড়াও, ‘তরুণের স্বপ্ন’, ‘কন্যাশ্রী’, ‘শিক্ষাশ্রী’ সহ রাজ্যের সব শিক্ষা প্রকল্পে প্রবেশের জন্যই একই নিয়ম মানতে হবে স্কুল কর্তৃপক্ষকে। অর্থাৎ, সরকারি প্রকল্প সংক্রান্ত কোনও অনিয়ম হলে প্রধানশিক্ষকের মোবাইল নম্বরেই থাকবে তার ডিজিটাল ছাপ।

এই নতুন লগ ইন পদ্ধতি চালু করতে রাজ্যের সমস্ত জেলা স্কুল পরিদর্শকদের কাছে নির্দেশিকাটি পাঠানো হয়েছে। নির্দেশ অনুসারে, চলতি এপ্রিল মাসের ১০, ২০ এবং ২৫ তারিখের মধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রধানশিক্ষকদের নাম, ফোন নম্বর ও আধার নম্বর (Aadhaar Number) জমা দিতে হবে সার্কেল অফিসে। এই তথ্য জমা পড়ার পর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে প্রধানশিক্ষকের তথ্য যাচাই করে তৈরি হবে লগইন আইডি ও ওটিপি ডেলিভারি সিস্টেম। সব শেষে, জেলা স্কুল পরিদর্শক অনুমতি দিলেই নতুন পদ্ধতিতে লগ ইন চালু করা যাবে।

এই ব্যবস্থা নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে দেখা গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী জানিয়েছেন, “ট্যাব দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসার পর এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তবে দুর্নীতির মূল যে কোথায় ছিল, তা নিয়েও নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন।” ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের (Taruner Swapna Tab Scheme) অধীনে রাজ্যের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের পড়াশোনায় সহায়তা করতে সরকার এককালীন ১০ হাজার টাকা করে দেয়, যাতে তারা ট্যাব কিনতে পারে। এই টাকা সরাসরি পড়ুয়ার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানোর ব্যবস্থা ছিল, কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় বহু পড়ুয়ার নামে আবেদন করা হলেও সেই টাকা ঢোকে অন্য কারও অ্যাকাউন্টে।

ট্যাব-কাণ্ড থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলার শিক্ষা পোর্টালের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করল রাজ্য। চলতি মাসের শুরুতেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে, এখন থেকে শুধুমাত্র আইডি-পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ ইন করা যাবে না। প্রয়োজন পড়বে ওটিপি-ও।গত ৪ এপ্রিল জারি করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এখন থেকে যে কেউ চাইলেই বাংলার শিক্ষা পোর্টালে ইচ্ছামতো লগ ইন করতে পারবেন না। দিতে হবে ওটিপি। তার পরেই ‘তরুণের স্বপ্ন’ থেকে ‘কন্যাশ্রী’— যে কোন‌ও সরকারি প্রকল্পের পোর্টালে ঢুকতে পারবেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, লগ ইন করার সময় সংশ্লিষ্ট মোবাইল নম্বরে একটি ওটিপি ঢুকবে। এই ওটিপি আসবে প্রধানশিক্ষকদের কাছে। ফলে এখন থেকে কোনও সরকারি প্রকল্পের টাকায় তছরুপ কিংবা দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে দায় এড়াতে পারবেন না প্রধানশিক্ষকেরা।

আরও পড়ুন: Malda Incident: রাস্তার ধারের দোকানে আচমকা অভিযান খাদ্য সুরক্ষা দফতরের

সমস্ত জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে ইতিমধ্যেই এই নির্দেশের প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে। নয়া ব্যবস্থা চালু করার জন্য চলতি মাসের ১০, ২০ এবং ২৫ তারিখে সংশ্লিষ্ট সার্কেল অফিসে এ বিষয়ে যাবতীয় তথ্য পাঠাতে হবে প্রধানশিক্ষকদের। তথ্য হিসেবে পাঠাতে হবে প্রধানশিক্ষকের নাম, ফোন নম্বর এবং আধার নম্বর। তার পর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, অর্থাৎ এআই প্রযুক্তির সাহায্যে এই নাম নথিভুক্তকরণ এবং পাসওয়ার্ড তৈরির কাজ করা হবে। সব শেষে জেলা স্কুল পরিদর্শক অনুমতি দিলে চালু হয়ে যাবে লগ ইনের নতুন পদ্ধতি। যদিও এ বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া শিক্ষকদের। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল আবার বলছেন, ‘‘ট্যাব কেলেঙ্কারির পর ভুল থেকে হয়তো শিক্ষা নিতে চাইছে রাজ্য। এর আগে নিজেদের ভুল ঢাকার জন্য প্রধানশিক্ষকদের উপর দায় চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আদতে পোর্টালেই যে ত্রুটি ছিল, তা এখন ঘুরিয়ে স্বীকার করা হল! আশা করব এ বার জালিয়াতি কমবে। তবে আমরা ট্যাব কেনার টাকা দেওয়ার বিরুদ্ধে।’’

প্রসঙ্গত, রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলির একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের পড়াশোনার সুবিধার্থে ট্যাব কেনার জন্য ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্প চালু করেছিল সরকার। এই প্রকল্পের অধীনে এককালীন ১০ হাজার টাকা করে পান পড়ুয়ারা। আবেদনকারীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি সেই টাকা চলে যায়। স্কুলের মাধ্যমেই করা হয় আবেদন। অভিযোগ, গত বছর রাজ্যের অনেক পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে ট্যাবের টাকা ঢোকেনি। বরং তা চলে গিয়েছে অন্য কারও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। টাকা ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে এটিএম থেকে সেই টাকা তুলেও নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই তদন্তে নেমে বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক থেকে কৃষক— সকলেই রয়েছেন।

নিউজ পোল বাংলা ইউটিউব লিঙ্ক:https://youtu.be/c0d4glX3r1s