নিউজ পোল ব্যুরো: যুদ্ধবিরতি (Ceasefire) লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান। শনিবার বিকেলেই মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্ট করে জানিয়ে দেন, যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ভারত-পাকিস্তান। এরপর সাংবাদিক বৈঠক করে ট্রাম্পের সেই দাবিতে ভারতের পক্ষ থেকে সিলমোহর দেন বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি। কিন্তু ৩ ঘন্টা যেতে না যেতেই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে পাক সেনা। দেশের সীমান্তবর্তী ৯টি অঞ্চলে লাগাতার ড্রোন এবং মিসাইল হামলা চালায় তারা। যা নিয়ে ফের শোরগোল পড়ে গিয়েছে বিশ্বজুড়ে। আর এই আবহেই রবিবার সকালে নিউটাউনের ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে আসেন প্রাক্তন সাংসদ তথা বঙ্গ বিজেপির (BJP Bengal) প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন থেকে শুরু করে একাধিক বিষয়ে আরও একবার ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ Dilip Ghosh : পাকিস্তান লড়াই চালিয়ে গেলে দুদিন পর আর খাওয়া জুটবে না! তীব্র কটাক্ষ দিলীপের
যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) জানান, “পাকিস্তান আজ পর্যন্ত কোনও চুক্তি রক্ষা করেনি। কারও সঙ্গে কথা রাখেনি। আমেরিকার সঙ্গেও রাখেনি। ভারত সেটা ভালো করেই জানে। তাই এরকমটা মোটেই নয় যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে সেনা গুটিয়ে নিয়ে চলে এসেছে। তারা যেটা চাইবে সেটাই হবে। এবং যোগ্য উত্তর হবে।” এর পাশাপাশি পাকিস্তানকে চিনের সরাসরি সমর্থন প্রসঙ্গেও প্রশ্ন করা হয় বিজেপি নেতাকে (BJP Leader)। শনিবার রাতে পাক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় চিন সরাসরি জানিয়ে দিয়েছে, নিজেদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে পাকিস্তানের। এই প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, “এরকম কথাবার্তাও শোনা যাচ্ছে যে যুদ্ধের পিছনে চিনের মদত রয়েছে। কারণ যুদ্ধটা তো আর্থিক। আর চিন থেকে বড় বড় অনেক কোম্পানি ভারতবর্ষে চলে আসছে। তাই এখানে যদি অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টি করা যায় তাহলে সেটা হবে না। অনেকেই সেটা সন্দেহ করছেন। আর আমেরিকার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। যাঁরা বিশেষজ্ঞ তাঁরা এটা ভাল জানবেন। আর সময়েই বোঝা যাবে পুরোটা।”
চিন পাকিস্তানকে সমর্থন করতেই ভারতের পাশে দাঁড়াল বালুচিস্তান। বালোচ আর্মির তরফে জানানো হয়েছে, এই লড়াইয়ে নরেন্দ্র মোদী একা নন। এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) বলেন, “বালুচিস্তান তো দীর্ঘদিন ধরেই পাকিস্তান থেকে আলাদা হতে চাইছে। তার জন্য তারা লড়াইও করে আসছে। সিন্ধু প্রদেশও তাই। এ কারণেই অনেকে বলছেন পাকিস্তান ভেঙ্গে টুকরো হবে। কারণ ওদের ভিতরেই অন্তর্ঘাত রয়েছে। কী হবে সেটা আগামী ২-৪ বছরের মধ্যেই দেখা যাবে।” এদিকে পাকিস্তান যুদ্ধ বিরতি লঙ্ঘন করতেই সামাজিক মাধ্যমে লম্বা পোস্ট আসাদউদ্দিন ওয়াইসির (Asaduddin Owaisi)। “সরকার এবং সেনার পাশে আছি! বহিঃশত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই জারি থাকুক”, এমনটাই দাবি করেছেন মিম নেতা। যে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “শুধু মিম নেতা নন। দেশের সমস্ত বিরোধী দল এবং সাধারণ মানুষ এই মুহূর্তে সরকার এবং সেনার পাশে রয়েছে।”

কড়া জবাব দেওয়ার জন্য পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে সেনাবাহিনীকে। পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করতেই সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়ে দিয়েছেন বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি (Vikram Misri)।এর পরিপ্রেক্ষিতেও সরব হয়েছেন দিলীপ। তাঁর কথায়, “রাজনাথ সিং গতকালই বলেছেন, অপারেশন সিঁদুর (Operation Sindoor) এখনও বন্ধ বা শেষ হয়ে যায়নি। সরকার জানে, লড়াইটা যে শত্রুর বিরুদ্ধে তারা কীরকম ছলচাতুরি করেছে। আমেরিকার থেকে টাকা নিয়েছে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়বে বলে আর সেই টাকা সন্ত্রাসবাদীদের ট্রেনিং দেওয়ার জন্য ব্যবহার করছে। তাই আমার মনে হয়, এই অবস্থায় দেশের সাধারণ মানুষও চাইছে একটা আরপাড় হোক। যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন আর না হতে হয়।”
নিউজ পোল বাংলা ইউটিউব চ্যানেলের লিংক: https://youtube.com/@newspolebangla?si=Ygy6shQubNhWstbr
এছাড়া আরও একাধিক বিষয়ে এদিন সকালে প্রশ্ন রাখা হয় দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) কাছে। ভারতের বিরুদ্ধে যে কোনও জঙ্গি কার্যকলাপই যুদ্ধ হিসেবে গণ্য হবে। ভারত সরকারের এই ঘোষণা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে প্রাক্তন সাংসদ বলেন, “পাকিস্তান যখন থেকে দেখেছে ভারতের বিরুদ্ধে লড়াই করে তারা পারবে না তখন থেকেই এই ধরণের উগ্রপন্থী কার্যকলাপকে যুদ্ধের একটা অংশ হিসেবে নিয়ে সন্ত্রাসবাদীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে লড়াচ্ছে। সন্ত্রাসবাদ কবেই শেষ হয়ে যেত। কিন্তু পিছন থেকে একটা দেশ লড়ছে। আমরা এর আগেও দেখেছি বড় বড় সন্ত্রাসবাদীদের নিয়ে গিয়ে তাদের সুরক্ষা দিয়ে সবরকম সমর্থন করেছে পাকিস্তান। আর বারেবারে মিথ্যা কথা বলেছে।” এর পাশাপাশি পাক গোলাবর্ষনে বিএসএফ সাব-ইন্সপেক্টর মহম্মদ ইমতিয়াজ এবং ভারতীয় বায়ু সেনার এক মেডিকেল অফিসারের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশও করেছেন দিলীপ ঘোষ।