নিউজ পোল ব্যুরো: মোবাইলের প্রতি স্কুল পড়ুয়ারা বেশি আগ্রহী। অতিমারি পর্বে ‘বাংলার শিক্ষা ক্লাসরুম’ (Virtual Classroom) এর মাধ্যমে অনলাইনে ক্লাস করানো হত স্কুল পড়ুয়াদের।সেই আগ্রহকে হাতিয়ার করেছে স্কুল শিক্ষা দফতর। প্রযুক্তিকে ব্যবহার করেই বর্তমানে সেই ক্লাসরুম থেকেই বিশেষজ্ঞ শিক্ষক-শিক্ষিকারা বিভিন্ন কঠিন বিষয়কে সরল করে বোঝাবেন। রাজ্যের পড়ুয়াদের সবরকম বিষয়ে আগ্রহী করতে চায় স্কুল শিক্ষা দফতর। শিক্ষাবিদদের একাংশের মতামত অনলাইনে (online) একটানা পড়াশোনার বদলে ক্লাসরুমের লেকচারে কতটা পড়ুয়াদের মনোযোগ ধরে রাখতে পারছে সেই বিষয়ে নজর দেওয়া দরকার!
করোনার (Covid-19) আবহে অনলাইন ক্লাস সম্পর্কে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা গেলেও পরবর্তী কালে এর প্রতি ঝোঁক বেড়ে চলেছে পড়ুয়াদের। স্কুলগুলিতে ছুটি এবং অন্যান্য বিরতির কারণে পঠনপাঠন যাতে অনলাইনে (Virtual Classroom) করানো হয়, তারও ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেই জানা গেছে। এই বিষয়ে যোধপুর পার্ক বয়েজের প্রধান শিক্ষক অমিত সেন মজুমদার (Amit Sen Majumder) বলেন, “দৃশ্য শ্রাব্য মাধ্যমে বইয়ের বিষয়বস্তু মনোগ্রাহী হয়ে উঠবে। তা ছাড়াও যাঁরা শেখাবেন, তাঁদের পাঠদানের পদ্ধতি অন্যান্য শিক্ষকদেরও সাহায্য করবে।” আবার আসানসোলের হীরাপুর মানিকচাঁদ ঠাকুর ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষিকা নিবেদিতা আচার্য (Nivedita Acharya) জানিয়েছেন, “কোচিং ব্যবস্থারের প্রতি যে নির্ভরশীলতা তৈরি হয়েছে, তা এত সহজে কমবে না। তবে, রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর যে পদক্ষেপ করেছে, তাতে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও উপকৃত হবেন। তাঁরা নিজেদের পাঠদানের কৌশল আরও কী ভাবে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারেন, তা-ও শিখে নিতে পারবেন।”
আরও পড়ুন: Smriti Irani : আবারও “তুলসী” বেশে মন কাড়তে আসছেন বিজেপি নেত্রী!
বিকাশ ভবনের এক আধিকারিকও আরও জানিয়েছেন, “মোবাইল বা ইন্টারনেট পরিষেবার ব্যবহার ভাল কাজের জন্য হোক। তাই তার সাহায্যে যাতে রাজ্যের যে কোনও প্রান্তে থাকা পড়ুয়া উন্নতমানের পঠনপাঠনের সুযোগ পায়, তা সুনিশ্চিত করা প্রয়োজন। এর জন্য ‘বাংলার শিক্ষা ক্লাসরুম’(Virtual Classroom) এ নিয়মিত ভাবে বিশেষজ্ঞদের লেকচার সিরিজ আপলোড করা হচ্ছে।”এই ‘অনলাইন ভার্চুয়াল ক্লাসরুম’ (Virtual Classroom) থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন বিষয়ের স্কুল শিক্ষক শিক্ষিকারা ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াবেন। বইয়ের পাতায় অধ্যায়ের নিরিখে একটি করে কিউআর কোড (QR Code) রাখা হয়েছে। ওই কোড স্ক্যান (scan) করেও সরাসরি ‘বাংলার শিক্ষা ক্লাসরুম’ (Virtual Classroom) এ প্রবেশ করা সম্ভব।
তবে, প্রতিটি অধ্যায়ের ক্লাস আগে থেকে রেকর্ড করা থাকছে। পড়ুয়াদের শুধু বাংলার শিক্ষা পোর্টাল থেকে সরাসরি ওই ক্লাসরুমে প্রবেশ করতে হবে। এ ছাড়াও পরবর্তী শিক্ষাবর্ষের মধ্যে প্রতিটি বইয়ের প্রতিটি অধ্যায়ের জন্য একটি করে কিউআর কোড রাখার পরিকল্পনা রয়েছে শিক্ষা দফতরের। এ ছাড়াও ভার্চুয়াল মাধ্যমে পড়ানোর সময় বিভিন্ন ধরনের পাঠ্যবই এবং উন্নতমানের স্টাডি মেটিরিয়ালের উল্লেখ করে দেওয়া হচ্ছে, যাতে পড়ুয়ারা নতুন কিছুও শিখতে পারে। সব মিলিয়ে ৪০ থেকে ৫০ মিনিটের ওই লেকচার ভিডিয়োতে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজ়েন্টেশন থেকে ছবি, ডায়াগ্রাম ব্যবহার করে পাঠদান করছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
বিশেষজ্ঞরা গ্লোবে মার্ক (globe mark) করে কিংবা ল্যাবের (lab) সামগ্রী নিয়ে ক্লাসে পড়া বোঝানোর মতো করেই শেখাবেন। এর জন্য তাঁদের নির্দিষ্ট দিনে বিকাশ ভবনের স্টুডিয়োতে গিয়ে নিজেদের ক্লাস রেকর্ড করতে হবে। সমস্ত বিষয়টি পশ্চিমবঙ্গ সমগ্র শিক্ষা মিশন এবং স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে পরিচালনা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই স্কুলগুলির তরফে এই বিশেষ ক্লাসরুমের (Virtual Classroom) কথা পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের জানানো হয়েছে। কিছু অভিভাবকদের ক্ষেত্রে স্কুলের পাশাপাশি কোচিংয়ের উপর বেশি ভরসা রয়েছে অভিভাবকদের। অভিভাবকদের একাংশ এই ব্যবস্থায় খুশি হলেও পুরোপুরি এর উপর নির্ভরশীল হতে চাইছেন না।