Yunus-Modi: ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের টানাপোড়েনের মাঝে ইউনূসের অভিযোগ! শেখ হাসিনার বক্তৃতা বন্ধে মোদীর সহায়তা চেয়েও হতাশ হলেন

আন্তর্জাতিক

নিউজ পোল ব্যুরো: দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে বাংলাদেশ-ভারত (India-Bangladesh) সম্পর্ক বরাবরই একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তবে ২০২৪ সালের রাজনৈতিক পালাবদলের পর এই সম্পর্ক যেন এক নতুন মোড় নিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন এবং ভারতে নির্বাসিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) কার্যকলাপ ঘিরে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। এই প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মহম্মদ ইউনূসের (Yunus-Modi) সাম্প্রতিক বক্তব্য আবারও দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে।

আরও পড়ুন: Mamata Banerjee’s Speech: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিধানসভার বক্তৃতা এবার গ্রন্থবন্দি!

লন্ডনের (London) প্রখ্যাত গবেষণা সংস্থা চ্যাথাম হাউসে এক আলোচনায় ইউনূস জানান, ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনার নিয়মিত অনলাইন বক্তৃতা বাংলাদেশে গণঅসন্তোষ সৃষ্টি করছে। তিনি জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Yunus-Modi) সঙ্গে এক আলোচনায় তিনি ব্যক্তিগতভাবে অনুরোধ করেছিলেন যেন হাসিনার এই কার্যক্রমে কিছুটা লাগাম টানা যায়। ইউনূস বলেন, “আমি মোদীজিকে অনুরোধ (Yunus-Modi) করেছিলাম, তিনি চাইলে শেখ হাসিনাকে আতিথ্য দিতেই পারেন, কিন্তু বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা রোধে তার বক্তব্যগুলো যেন নিরুৎসাহিত করা হয়।”তবে মোদীর উত্তরে ছিল হতাশাজনক। তিনি নাকি বলেন, “এটা তো সোশ্যাল মিডিয়া (Social Media), এটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।” এই জবাবের পর ইউনূস ক্ষোভপ্রকাশ করে বলেন, “এভাবে শুধু বলেই দায়িত্ব শেষ করা যায় না, এটি একটি বিস্ফোরক পরিস্থিতি।”

এছাড়া ভারত বাংলাদেশের (India-Bangladesh) প্রত্যাশা অনুযায়ী সহযোগিতা করছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে ইউনূস দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেন,”না।” তিনি জানান, শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের দাবি জানিয়ে ভারত সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেওয়া হয়েছে এবং সেই প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আইনি প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।ট্রাইব্যুনালের তথ্যমতে, শেখ হাসিনা ও তার দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগীর বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ছাত্র-আন্দোলন দমনে ‘গণহত্যার’ অভিযোগ আনা হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগকে ২০২৫ সালের মে মাসে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়, যা নয়াদিল্লির ওপর প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে ধরেছে ঢাকা। ইউনূস আরও বলেন, ভারতের কিছু সংবাদমাধ্যম বাংলাদেশ সম্পর্কে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভ্রান্ত তথ্য ছড়াচ্ছে, যার পেছনে শীর্ষ ভারতীয় নীতিনির্ধারকদের ‘অদৃশ্য প্রভাব’ রয়েছে বলেও সন্দেহ করছেন অনেকে।

“আমরা ভারতকে প্রতিবেশী ও গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে দেখতে চাই,” বলেন ইউনূস। “কিন্তু প্রতিবার ভুল তথ্য ও অপপ্রচারের কারণে সম্পর্ক জটিল হয়ে পড়ছে। আর এই ধাক্কাগুলো আমাদের জনগণের মধ্যে রাগ, সন্দেহ ও হতাশার জন্ম দিচ্ছে।”এমন উত্তেজনার মধ্যেই ৬ জুন ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী মোদীর পাঠানো শুভেচ্ছা বার্তার জবাবে ইউনূসও কৃতজ্ঞতা জানান এবং বলেন, এই বার্তা দুই দেশের মধ্যে “ভাগ্যগত ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের প্রতিফলন” বহন করে। তবে রাজনৈতিক বাস্তবতা বলছে, এ শুভেচ্ছা বিনিময়ের আড়ালে জমে থাকা অবিশ্বাস ও অভিযোগের ছায়া সহজে কাটছে না। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই সম্পর্ক কোন দিকে মোড় নেবে, এখন সেটিই দেখার বিষয়।

নিউজ পোল বাংলা ইউটিউব লিঙ্ক:- https://youtube.com/@newspolebangla?si=mYrQvXTBQ1lG3NFT