নিউজ পোল ব্যুরো: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ছায়া এইবার পড়ছে ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধেও। সম্প্রতি অপারেশন স্পাইডার ওয়েবের কায়দায় এইবার শুরু অপারেশন রাইজিং লায়ন (Operation Rising Lion)। সূত্রের খবর, তেহরানের (Tehran) কাছে একটি জায়গায় ড্রোনগুলি লুকিয়ে রাখা হয়। অপারেশনের সময় এই ড্রোনগুলি রিমোটের মাধ্যমে অ্যাকটিভেট করে নিখুঁত লক্ষ্যে হামলা চালানো হয়।ইজরায়েলি গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ (Mossad) ইরানের মাটিতেই গোপনে ড্রোন ঘাঁটি বানায় । দিনের পর দিন ড্রোন পাচার করা হয় ইরান সীমান্তের ভিতর। ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রেখে এই অপারেশনের প্রস্তুতি সেরে রাখে মোসাদ।
আরও পড়ুন: Unique Job: ‘ড্রিম জব’ শুনলে অবাক হবেন! কাজ সামান্য, বেতন কোটি কোটি, তবুও লোক মেলে না কেন?
১৯৮০ এর দশকের ইরাক যুদ্ধের পর থেকে ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অভিযানের একটি হিসেবে শুক্রবার ভোরে ইরানের রাজধানীতে আক্রমণ চালায় ইসরায়েল। এই হামলার ফলে নিহত হন ইরানের বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা এবং ছয়জন পারমাণবিক বিজ্ঞানী। ইসরায়েল দেশজুড়ে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাগুলিতে আঘাত হানে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু “রাইজিং লায়ন” (Operation Rising Lion) নামে এই অভিযানের ঘোষণা দেন এবং ঘোষণা করেন যে ইরানের (Iran) হুমকিকে নিরপেক্ষ করতে যত দিন সময় লাগে তত দিন এটি চলবে। এক ভিডিওর মাধ্যমে এই হামলার পরিধি বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছেন, ইরানের নাতানজে (Natanz) অবস্থিত প্রাথমিক পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ স্থাপনা এবং এর ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলিতে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ইসরায়েলি নেতা আরও প্রকাশ করেছেন যে এই অভিযানটি অস্ত্র উন্নয়নে জড়িত। সেই বলেই অভিযোগ করা ইরানি পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য করে করা হয়েছিল।
সূত্র মারফত এও জানা যাচ্ছে, তেহরানের কাছে একটি জায়গায় ড্রোনগুলি লুকিয়ে রাখা হয়। অপারেশনের সময় এই ড্রোনগুলি রিমোটের মাধ্যমে অ্যাকটিভেট করে নিখুঁত লক্ষ্যে হামলা চালানো হয়। এই অপারেশনের (Operation Rising Lion) জন্য কয়েক বছর ধরে প্রস্তুতি করছিল। ইজরায়েল, দাবি আইডিএফের। মোসাদ কমান্ডো ও অন্যান্য সামরিক হাতিয়ারও গোপনে তেহরানে পাঠায় ইজরায়েল। ড্রোন ও অন্যান্য সামরিক হাতিয়ারগুলি ইরানের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমকে আগে থেকেই নিষ্ক্রিয় করে রেখেছিল। তাই ইজরায়েলের ২০০-রও বেশি যুদ্ধবিমান ইরানে হামলা চালিয়ে নিরাপদে সেনাঘাঁটিতে ফিরে এসেছে, দাবি ইজরায়েলি সেনার। ইজরায়েলের হামলায় ইরানের বহু কমান্ডার, বিজ্ঞানীর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
আইডিএফের মতে, অভিযানের প্রথম পর্যায়ে অসংখ্য ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর জেট বিভিন্ন সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায়, যার মধ্যে ইরান জুড়ে পারমাণবিক সম্পর্কিত স্থাপনাও রয়েছে। আইডিএফ (IDF) পারমাণবিক বোমা, তার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি এবং তার নাতানজ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনা নিয়ে কাজ করে। ইরানি বিজ্ঞানীদের উপর পূর্বনির্ধারিত, নির্ভুল হামলাও চালিয়েছে। আইএএফের (IAF) কয়েক ডজন জেট প্রথম পর্যায়ের কাজ সম্পন্ন করেছে। যার মধ্যে ইরানের বিভিন্ন অঞ্চলে পারমাণবিক লক্ষ্যবস্তু সহ কয়েক ডজন সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা অন্তর্ভুক্ত ছিল। ইরানি সরকারের হাতে গণবিধ্বংসী অস্ত্র ইসরায়েল (Israel) রাষ্ট্র এবং বৃহত্তর বিশ্বের জন্য অস্তিত্বের হুমকি। ইসরায়েল রাষ্ট্রের নাগরিকদের প্রতিরক্ষায় কাজ করার বাধ্যবাধকতা পূরণ করা ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই এবং অতীতে যেমনটি আমরা করেছি, সেখানেই তা অব্যাহত রাখবে,” এতে আরও বলা হয়েছে। ইরানের ১০০ টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার জন্য প্রায় ২০০ ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান হামলায় অংশ নিয়েছিল।
নিউজ পোল বাংলা ইউটিউব লিঙ্ক:- https://youtube.com/@newspolebangla?si=mYrQvXTBQ1lG3NFT
যদিও পরবর্তীতে ইরানও (Iran) ইজরায়েলের (Israel) উপর পাল্টা হামলা চালায়। ক্রজ মিসাইল নিয়েও হামলা চালানো হয়েছে বলে খবর। ৮০০ এর বেশি ড্রোন নিয়ে হামলা চালায় ইরান। যদিও ইরানের হামলা ব্যর্থ বলে দাবি করছে ইজরায়েল। ইরানের সুপ্রিম লিডার আলি খামেনেই (Ali Khamenei) সেসবে পাত্তা না দিয়ে গর্জে উঠেছেন । তিনি বলেছেন, কঠোর সাজা পেতে প্রস্তুত থাকুক ইজরায়েল। দুই দেশের সংঘাত নিয়েই এখন মাথা ব্যথা বাড়ছে আন্তর্জাতিক দুনিয়ায়।