নিউজ পোল ব্যুরো: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Modi) ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump ) ফোনে কথা। পহেলগাঁও হামলার জবাবে ৭ মে ভারত অপারেশন সিঁদুর অভিযান চালানোর করার পর থেকে এটি ছিল দুই নেতার মধ্যে প্রথম কথোপকথন এবং পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল অসীম মুনির এবং ট্রাম্পের মধ্যে বৈঠকের কয়েক ঘন্টা আগে মোদী-ট্রাম্পের (Modi-Trump ) কথা হয়। কানাডায় জি-৭ (G-7) বৈঠকের ফাঁকে ট্রাম্পের সঙ্গে কথা হয় মোদীর। এই কথোপোকথনে মাধ্যেমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতাকারীর কোনও ভূমিকা ছিল না এবং যুদ্ধের সময় মার্কিন-ভারত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি।
ট্রাম্পের অনুরোধে ৩৫ মিনিটের এই কথোপকথনের কথা জানিয়ে বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদী স্পষ্টভাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বলেছেন যে পুরো ঘটনাপ্রবাহের সময়, কোনও পর্যায়েই, কোনও ভাবেই, মার্কিন-ভারত বাণিজ্য চুক্তি বা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মার্কিন মধ্যস্থতা সম্পর্কে কোনও আলোচনা হয়নি। সংঘর্ষবিরতি নিয়ে সরাসরি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। পাকিস্তানের অনুরোধেই ভারত সংঘর্ষ বিরতিতে সম্মত হয়েছে।” মিস্রী জানিয়েছেন মোদী ট্রাম্পকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, ভারত কখনও সংঘর্ষ থামাতে মধ্যস্থতাকারীর সাহায্য নেয়নি এবং ভবিষ্যতেও কখনও নেবে না। এমনকি ট্রাম্পকে মোদী এটাও খুব স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন পহেলগাঁও হামলার মত ভারতের মাটিতে ভবিষ্যতে কোনও ঘটনা ঘটলে সেটিকে যুদ্ধ হিসেবেই দেখা হবে।
ট্রাম্প-মোদীর ফোনে কথা নিয়ে বিদেশসচিব আরও জানিয়েছেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছেন সামরিক অভিযান বন্ধের বিষয়ে আলোচনা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি উভয় সেনাবাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান চ্যানেলের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এটি পাকিস্তানের অনুরোধে করা হয়েছিল।” শুরুতে ট্রাম্প বারবার দাবি করেছেন যে তিনি ভারত-পাক যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করেছিলেন এবং বাণিজ্য বিচ্ছিন্ন করার হুমকিই দুই দেশকে যুদ্ধবিরতিতে যেতে বাধ্য করেছিল। তবে, ভারত তাঁর দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছে যে যুদ্ধবিরতি নিয়ে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সরাসরি আলোচনা করা হয়েছিল। ফোনালাপের সময়, প্রধানমন্ত্রী মোদী ট্রাম্পকে অপারেশন সিঁদুর সম্পর্কে অবহিত করেন, জোর দিয়ে বলেন যে ভারতের পদক্ষেপগুলি “পরিমিত, সুনির্দিষ্ট এবং উত্তেজনাকর নয়”। প্রধানমন্ত্রী মোদী আরও প্রকাশ করেন যে ৯ মে রাতে, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ভারতকে পাকিস্তানের সম্ভাব্য বৃহৎ আকারের আক্রমণ সম্পর্কে সতর্ক করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী ট্রাম্পকে বলেন যে ভারত স্পষ্ট করে দিয়েছে যে উস্কানি দিলে ভারত আরও শক্তিশালীভাবে জবাব দেবে। প্রধানমন্ত্রী মার্কিন রাষ্ট্রপতিকে দৃঢ়ভাবে জানিয়েছেন যে ভবিষ্যতে পাকিস্তানের যেকোনো আগ্রাসনের প্রতি আরও কঠোর প্রতিশোধমূলক প্রতিক্রিয়া দেওয়া হবে।
অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী মোদী কাশ্মীর ইস্যুতে তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতার বিষয়ে ট্রাম্পের কাছে ভারতের দীর্ঘস্থায়ী অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। বলেছেন, “ভারত কখনও কাশ্মীর ইস্যুতে মধ্যস্থতা গ্রহণ করেনি, গ্রহণ করে না এবং কখনও গ্রহণ করবে না।” এদিন মোদীকে আমেরিকা যাওয়ার আমন্ত্রণ জানান ট্রাম্প। ফোনে কথা বলার সময়, ট্রাম্প মোদীর কাছে জানতে চান কানাডা থেকে ফিরে প্রধানমন্ত্রী মোদী কি আমেরিকায় আসতে পারবেন? তবে, কিন্তু, পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি থাকায় মোদী আমেরিকা যেতে পারবেন না বলেই ট্রাম্পকে জানিয়েছেন। মোদী-ট্রাম্পের (Modi-Trump ) ৩৫ মিনিটের কথাবার্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।