নিউজ পোল ব্যুরো: দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে দক্ষিণবঙ্গে (West Bengal Monsoon) প্রবেশ করল মৌসুমি বায়ু। মঙ্গলবার থেকেই শুরু হয়েছে বর্ষার আনুষ্ঠানিক যাত্রা। আর বর্ষার এই আগমন ঘটল প্রবল রূপে — আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস বলছে, আগামী সাত দিন দক্ষিণবঙ্গের অধিকাংশ জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। কোথাও কোথাও অতিভারী বর্ষণের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: Wednesday Prediction: কার ভাগ্যে চাকরি, কার জীবনে লাভ? বুধবারের রাশিফল এখনই দেখুন
বিস্তীর্ণ এলাকায় বৃষ্টির পূর্বাভাস:
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে বুধবার থেকেই রাজ্যের বেশিরভাগ জেলায় বৃষ্টির (West Bengal Monsoon) পরিমাণ বাড়বে। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, বীরভূম এবং পশ্চিম বর্ধমান —এই সমস্ত জেলায় আকাশ থাকবে মেঘলা এবং চলবে দফায় দফায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি।
বিশেষ করে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলাগুলিতে ১৯ থেকে ২২ জুন পর্যন্ত অতি ভারী বৃষ্টির (West Bengal Monsoon) সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বৃষ্টির সঙ্গে ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৭০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।

কলকাতাতেও মিলবে স্বস্তি:
মঙ্গলবার সকাল থেকেই কলকাতায় আকাশ মেঘলা ছিল। দুপুর গড়াতেই কোথাও কোথাও শুরু হয় বৃষ্টিপাত। আগামী কয়েকদিন রাজ্যের রাজধানী শহরেও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। টানা বৃষ্টির ফলে শহরের একাধিক নিচু এলাকায় জল জমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। একইসঙ্গে, বৃষ্টির জেরে শহরের রাস্তাঘাটে যানজট ও পরিবহণ ব্যবস্থায় ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
উপকূলবর্তী এলাকায় জারি সতর্কতা, সমুদ্রে নিষেধাজ্ঞা:
উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত এবং সক্রিয় মৌসুমি অক্ষরেখার প্রভাবে সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠেছে। পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলিতে মৎস্যজীবীদের জন্য জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা। আগামী কয়েকদিন মাছ ধরতে সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্কবার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের কাছে।
বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও ধসের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না দফতর:
প্রবল বৃষ্টির ফলে শহর ও গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি, পাহাড়ি ও অরণ্য সংলগ্ন এলাকাগুলিতে ধসের আশঙ্কাও থেকে যাচ্ছে। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুরের কিছু অঞ্চলে ভূমিক্ষয় এবং ছোটখাটো ধসের জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
কৃষিক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব, তবে অতিবৃষ্টির ঝুঁকিও চিন্তার:
চাষবাসের দিক থেকে এই বৃষ্টি যেমন স্বস্তির কারণ, তেমন অতিবৃষ্টির ফলে জলনিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়লে তা কৃষিক্ষেত্রেরও ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। ধানচাষের মৌসুমে এই বর্ষা যেমন চাষিদের মনে আশার সঞ্চার করেছে, তেমনই টানা ভারী বর্ষণের ফলে জমি প্লাবিত হলে ক্ষতির সম্ভাবনাও থেকে যায়।
নিউজ পোল বাংলা ইউটিউব চ্যানেলের লিংক: https://youtube.com/@newspolebangla?si=bWrnvsdksgoRlFIa
প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি জোরদার:
বর্ষা (West Bengal Monsoon) শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি জেলায় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর, সেচ বিভাগ ও পৌরসভার পক্ষ থেকে জলনিকাশি ব্যবস্থা সচল রাখার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখতে নিয়মিত আপডেট নিচ্ছে নবান্ন।