নিউজ পোল ব্যুরো:- ১৪৪ বছর পর উত্তরপ্রদেশে বিশ্বের সর্ববৃহৎ হিন্দু মেলার মহা আয়োজনে মহাপুণ্যস্নান অংশগ্রহণ করছেন ভারতবর্ষ সহ বিশ্বের সনাতনী সমাজের বহু মানুষ। এই অমৃত স্নানের মূল উদ্দেশ্য হল গঙ্গা, যমুনা সরস্বতীর ত্রিবেণী সঙ্গমে মোক্ষলাভ।
পুরাণে কথিত আছে, গঙ্গায় সমুদ্রমন্থনের ফলে উৎপন্ন অমৃতের কুম্ভ থেকে মহামুক্তির অমৃতের ফোঁটা পড়েছিল প্রয়াগরাজের এই নদীসঙ্গমে। তাই পবিত্র গঙ্গায় ডুব দিয়ে সকল পাপের স্খলন হয় এবং জগত-জীবন সব কিছুর পরিবর্তন হয়। এই মাহেন্দ্রক্ষণে সূর্য মকরে প্রবেশ করে এবং বৃহস্পতি ভালো জায়গায় অবস্থান করে, ফলে জগতবাসীর কল্যাণ হয়।
সকল অশুভ শক্তির পরাজয় হয় এবং শুভ শক্তির উদয় হয়। এবার এই মহাকুম্ভের পুণ্যতিথিতে কোটি কোটি ভক্তদের সঙ্গে অমৃত স্নান যাত্রায় অংশগ্রহণ করবেন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদি মুর্মু, উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড় এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, এমনটাই জানিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
১৪ জানুয়ারি পৌষ পূর্ণিমা এবং ১৫ জানুয়ারি মকর সংক্রান্তিতে আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকা এবং সৌদি আরব থেকে অনেক ভক্ত অমৃতস্নানে অংশ নিয়েছেন। রাশিয়ার সনাতনী ভক্ত অনর্গল বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণ করে মহাকুম্ভের আধ্যাত্মিক ভাবকে বিশ্বের কাছে আরও ছড়িয়ে দিয়েছেন। আগামী ২৯ জানুয়ারি রয়েছে মৌনী অমাবস্যা এবং ৩ জানুয়ারি বসন্ত পঞ্চমীর অমৃত স্নান।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী যোগী জানিয়েছেন, আনুমানিক ৮-১০ কোটি পুণ্যার্থী পবিত্র গঙ্গায় স্নান করবেন। তাই যুদ্ধকালীন প্রস্তুতিতে মেলার পরিষেবায় কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী। ভিড় নিয়ন্ত্রণ এবং প্রয়োজনীয় যাতায়াতের বিশেষ নজর রেখেছেন তিনি। রবিবার মেলায় একটি স্থানে আকস্মিক আগুন লাগার ঘটনায় সঠিক তদন্তের নির্দেশ দিয়ে প্রশাসনের উচ্চ আধিকারিকদের মেলার ব্যবস্থাকে আরও কড়া ভাবে নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। কট্টর মৌলবাদীরা আগেই কুম্ভকে টার্গেট করার হুমকি দিয়েছিল। তাই কোনও ব্যবস্থায় খামতি নিয়ে কোনও আপোশ করবেন না বলে সাফ নির্দেশ দিয়েছেন যোগী।
এদিন প্রশাসনিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী যোগী বলেন, “বিশেষ দিনে ভালো ভিড় ব্যবস্থাপনার জন্য পন্টুন সেতুতে চলাচল একমুখী রাখতে হবে। মৌনী অমাবস্যা ও বসন্ত পঞ্চমীতে পুরো মেলা এলাকাকে নো-ভেহিক্যাল জোন ঘোষণা করতে হবে। ভক্তদের অনুভূতিকে অবশ্যই সম্মান করতে হবে এবং কর্মকর্তাদের অবশ্যই প্রয়োজনে কাউকে সহায়তা করতে হবে। প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি যথা সময়ে শেষ করতে হবে। একই ভাবে রাজ্যের মন্ত্রিসভার বৈঠক আগামী ২২ জানুয়ারি এই মেলাপ্রাঙ্গণেই অনুষ্ঠিত হবে।”