নিজস্ব প্রতিনিধি, হুগলি : ভোরের এলো ফুটতেই ডাকপিয়নরা বেরিয়ে পড়তেন সাইকেলে বা কাঁধে বস্তা নিয়ে। বস্তার ভিতরে থাকত প্রিয়জনদের চিঠির জীবন্ত সব অনুভূতি,আবেগ ও ভালোবাসা। মানুষ অধীর আগ্রহে বসে থাকত পথ চেয়ে কখন আসবে প্রিয়জনের চিঠি। ডাকপিয়নের সাইকেলের টুংটাং শব্দে সেই সুদীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হত। আজ ‘ডাকবাক্স’ আছে, কিন্তু ডাকবাক্সে চিঠি ফেলার মতো লোক আর নেই। সেই চিঠির যুগ ফিরিয়ে আনতে ও মানুষে-মানুষে সমন্বয় বাড়াতে গ্রামে গ্রামে ডাকবাক্সের মতই বাক্স বসালো পোলবা থানার পুলিশ।
হুগলি গ্রামীন পুলিশের অন্তর্গত পোলবা থানার পক্ষ থেকে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পোলবা পুলিশের পক্ষ থেকে জনসাধারণ ও প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়কে আরো সুদৃঢ় করার জন্য পোলবা গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে সংগ্রামপুর মোড় ও পাউনান লাইব্রেরীতে দুটি অভিযোগ বাক্স রাখা হয়েছে।যেখানে সাধারন মানুষ তাদের অভিযোগ পরামর্শ সরাসরি পোলবা থানার কাছে পৌঁছে দিতে পারেন। পোলবা থানা সূত্রে খবর,থানা এলাকার ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ১২টি জায়গায় এই বাক্স বসানো হয়েছে, যেখানে সিসি ক্যামেরা নেই এমন জায়গাকেই বেছে নেওয়া হয়েছে। যিনি অভিযোগ পত্র জমা করবেন যাতে তাঁর পরিচয় গোপন থাকে।
উল্লেখ্য, হুগলি গ্রামীণ পুলিশের পক্ষ থেকে জনসাধারণের কাছে সামাজিক মাধ্যমে আবেদন করা হয়েছে, আপনার এলাকায় কোন দীর্ঘ আইন-শৃঙ্খলাজনিত কোন ঘটনা বা বেআইনি কার্যকলাপ অথবা কোন ঘটনা যেটি প্রশাসনকে জানানো প্রয়োজন বলে আপনারা মনে করেন সেগুলিকে একটি সাদা কাগজে লিখে এই ড্রপবক্সের মধ্যে ফেলতে হবে। আপনারা সরাসরি আপনার অভিযোগটি প্রশাসনের কাছে পৌঁছে দিতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি যদি মনে করেন আপনার নাম পরিচয় গোপন রেখে অভিযোগ জানাবেন তাহলে সেটাও করতে পারবে। অভিযোগ পাওয়া মাত্রই প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আপনাকে আর সময় ব্যয় করতে হবে না অভিযোগ জানানোর জন্য। অভিযোগ জানানোর জন্য কোন ভয়ও পেতে হবে না যে আমার পরিচয় যদি সবাই জেনে যায়।
প্রসঙ্গত, এলাকার মানুষদের সুরক্ষিত করতে এই পন্থা অবলম্বন করল পোলবা থানার পুলিশ। পুলিশের কথায়, ‘নিজেরা সুরক্ষিত থাকুন এবং আপনার আশেপাশের মানুষজনকে সুস্থ এবং সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করুন। পোলবা থানা ও হুগলি গ্রামীণ জেলা পুলিশ সর্বদা আপনাদের পাশে আছে আপনাদের সাথে আছে।’ এর আগে দেখা গেছে পোলবা থানার পুলিশ গ্রামে গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলে তাদের আস্থা ফেরানোর চেষ্টা করেছে। পুলিশের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা।