নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা : কুকুর, পাখি, রঙিন মাছসহ সব ধরনের পোষ্য (Pets) ও বন্যপ্রাণীদের জন্য অত্যাধুনিক চিকিৎসা পরিষেবার এক নতুন দিগন্ত খুলে গেল কলকাতায়। শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হল এক অত্যাধুনিক পশু চিকিৎসা ইউনিটের, যেখানে মানুষের চিকিৎসার মতোই সব ধরনের উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। পোষ্যদের (Pets) চিকিৎসার জন্য এখানে শুরু হয়েছে ডায়ালিসিস, ইসিজি, এন্ডোস্কোপি, ল্যাপারোস্কোপি, গ্যাস অ্যানেস্থেশিয়া, মাল্টিপ্যারা মনিটর, কলর ডপলার, ব্লাড ট্রান্সফিউশন, ইকোকার্ডিওগ্রাফি, অপারেশন থিয়েটার, ভেন্টিলেশন ও ইনকিউবেটর, ডিজিটাল রেডিওগ্রাফি-সহ একাধিক অত্যাধুনিক পরিষেবা।
এই বিশেষ ইউনিটটি চালু করেছে ‘অ্যানিম্যাল হেলথ প্যাথলজিকাল ল্যাব’ সংস্থা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ ও বিশিষ্ট পোষ্যপ্রেমী কুণাল ঘোষ এবং সংস্থার কর্ণধার প্রতীপ চক্রবর্তী-সহ আরও অনেকে। ওই সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এরমধ্যেই তাঁরা কয়েক বছর ধরে পশুদের রক্তপরীক্ষা ও অন্যান্য চিকিৎসা সংক্রান্ত পরিষেবা দিয়ে আসছে। তবে শনিবার থেকে এক নতুন নজির তৈরি হল, কারণ এই প্রথমবার কলকাতায় পশুদের জন্য এত আধুনিক চিকিৎসা পরিষেবা চালু করা হল। কলকাতার মতিলাল নেহরু রোডে এই নতুন ইউনিটটি চালু হয়েছে, পাশাপাশি বিধাননগরেও একটি কেন্দ্র রয়েছে।
অনুষ্ঠানে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘পোষ্যদের জন্য এত উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা সত্যিই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সময়োপযোগী উদ্যোগ।’ প্রতীপ চক্রবর্তী পুরো ইউনিট ঘুরিয়ে কুণালকে সমস্ত পরিষেবা ও যন্ত্রপাতি সম্পর্কে বলেন। তিনি আরও বলেন, ‘এই ইউনিটে পশু চিকিৎসকরা রয়েছেন, তবে অন্যান্য এলাকার পশুচিকিৎসকরাও তাঁদের রোগীদের নিয়ে এসে এই পরিষেবা নিতে পারবেন। বিশেষত, পথকুকুরদের চিকিৎসা বিনামূল্যে করা হবে।’
প্রতীপ চক্রবর্তী জানান, ‘আলিপুর চিড়িয়াখানার পশুদের চিকিৎসার প্রয়োজন হলে এখান থেকেই সহযোগিতা করা হয়। শুধু চিড়িয়াখানাই নয়, বিএসএফ, ফোর্ট উইলিয়ামের সেনাবাহিনীর কুকুরদের সমস্যার খবরও এখানে আসে এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসা করা হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি একটি বিরল অভিজ্ঞতা হয়েছে – ভারতীয় জাদুঘর থেকে ২০০ বছর আগের সংরক্ষিত মাছ এক্স-রে করার জন্য পাঠানো হয়েছিল। গবেষণার স্বার্থে সেই মাছের পরীক্ষা করা হয়, যা ভবিষ্যতে আরও উন্নত গবেষণার পথ প্রশস্ত করবে।’
ইউনিট উদ্বোধনের দিনই অনেক পোষ্যপ্রেমী তাঁদের কুকুর, বিড়াল, এমনকি কিছু বিশেষ প্রজাতির পাখি ও মাছ নিয়ে এসেছিলেন চিকিৎসার জন্য। এই বিশেষ পরিষেবা চালু হওয়ায় তাঁরা অত্যন্ত আনন্দিত ও কৃতজ্ঞ। সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভবিষ্যতে এই পরিষেবাকে আরও উন্নত ও বিস্তৃত করার পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার সমস্ত পশুপাখি উন্নত চিকিৎসার সুযোগ পায়। এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে পশু চিকিৎসার ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।