এবার চার লেনের রাস্তা বর্ধমানে

জেলা রাজ্য

নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান:- বর্ধমান শহরের ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে দামোদর নদ, যা বহু বছর ধরে যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে। বর্তমানে শহরের অর্থনীতি এবং ব্যবসায়িক পরিকাঠামো দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে, যার ফলে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে কৃষক সেতু, যা বহু দশক ধরে দক্ষিণ দামোদরের বিস্তীর্ন এলাকার সঙ্গে বর্ধমান শহরকে যুক্ত রেখেছে, বর্তমানে তা জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রান পেতে রাজ্য সরকার নতুন একটি চার লেনের শিল্প সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

নবান্ন সূত্রে খবর, দামোদর নদের ওপর নতুন যে শিল্প নির্মাণ করা হবে, সেটি একটি “এক্সট্রা ডোজ কেবল স্টেড” ব্রীজ হবে, যার দৈর্ঘ্য ৬৪০ মিটার। এটি মোট চার লেন বিশিষ্ট হবে, যা বর্তমানের কৃষক সেতুর তুলনায় অধিক যানবাহনের চাপ বহন করতে সক্ষম হবে। পুরোনো কৃষক সেতুর পাশাপাশি এই সেতু নির্মিত হবে। বিশেষ আলোকসজ্জার মাধ্যমে এই সেতুকে আকর্ষণীয় করে তোলা হবে। অনেকটা দ্বিতীয় হুগলি সেতুর আদলে এটি নির্মিত হবে, যা রাতে মনোরম দৃশ্য তৈরী করবে। এই প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকার ৩৪৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। এরই মধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে এবং দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরই কাজ শুরু হবে। শুধু সেতু নয়, এই প্রকল্পের আওতায় বাঁকুড়া মোর পর্যন্ত রাস্তা চার লেনে উন্নীত করা হবে। নতুন শিল্প সেতু নির্মিত হলে উপকৃত হবেন বর্ধমান, হুগলি, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের মানুষ। বর্তমানে কৃষক সেতুর অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে, ভারী যান চলাচলে প্রায়শই সমস্যার সৃষ্টি হয়। অনেক সময় সংস্কারের জন্য সেতুটি বন্ধ রাখতে হয়। এছাড়া, দক্ষিণ দামোদর অঞ্চলে কৃষিভিত্তিক শিল্পের বিকাশ ঘটছে। নতুন সেতু নির্মিত হলে ব্যবসা বাণিজ্যের পরিধিও বৃদ্ধি পাবে।

৪৬ বছর আগে নির্মিত কৃষক সেতু একসময় বর্ধমান শহরের বাণিজ্যের অন্যতম চালিকাশক্তি ছিল। তবে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগের চাহিদাও বেড়েছে। শহরের ভেতরের রাস্তার উন্নতি, জিটি রোডের সম্প্রসারণ এবং নতুন শিল্প করিডোর গঠনের পরিকল্পনা বর্ধমানকে এক নতুন দিশা দেখাবে। তাই শিল্প সেতুর পরিকল্পনা শুধুমাত্র এক নতুন অবকাঠামো প্রকল্প নয়, এটি ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিশারী হতে চলেছে। তাই অপেক্ষা এখন শুধুই সময়ের, দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে, সেই কাজ সম্পন্ন হলেই শুরু হয়ে যাবে নতুন ব্রীজ তৈরীর কাজ।