Football: শাড়ি পরে ফুটবল?

ক্রীড়া জেলা রাজ্য

নিজস্ব প্রতিনিধি, সুন্দরবন : সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে উঠে আসা একদল মহিলার অদম্য লড়াই ও দৃঢ় মানসিকতা প্রমাণ করে দিল যে খেলাধুলার প্রতি ভালোবাসা কোনো বাধাই মানে না। শাড়ি 9Football) পরে ফুটবল (Football) খেলে তাঁরা শুধু প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করলেন না, বরং চমকপ্রদ পারফরম্যান্স দেখিয়ে জয়ও ছিনিয়ে নিলেন। বন্দনা, শিবানী ও তাঁদের সঙ্গীরা রীতিমতো মাঠ কাঁপিয়ে দিলেন তাঁদের অসাধারণ নৈপুণ্য দিয়ে। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বাসন্তী ব্লকের রানিগর গ্রামে এক বিশেষ ফুটবল (Football) প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল গয়েশপুর হামবাহী ট্রাস্ট ও ঝড়খালি সবুজ বাহিনী দলের।

সাধারণত ফুটবল খেলতে খেলোয়াড়রা শর্টস ও জার্সি পরে নামেন, কিন্তু সুন্দরবনের এই মহিলারা শাড়ি পরে খেলে প্রমাণ করলেন যে ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মিশেলে এক নতুন উদাহরণ তৈরি করা যায়। খেলা চলাকালীন তাঁদের শাড়ির আঁচল সামলানোর বাড়তি চাপ থাকলেও, তা তাঁদের গতিরোধ করতে পারেনি। বরং প্রতিপক্ষ দলকে চমকে দিয়ে তাঁরা গোলের পর গোল করে দলকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। খেলার মাঠে তাঁদের পারফরম্যান্স দেখে উপস্থিত দর্শকরা মুগ্ধ হয়ে যান। গ্যালারিতে বসে থাকা মানুষজন তাঁদের প্রতিটি গোল এবং ড্রিবলিংয়ে করতালি দিয়ে অভিবাদন জানান। ফুটবলের প্রতি তাঁদের এই উৎসাহ ও নিষ্ঠা অনেকের জন্যই অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছে।

সুন্দরবনের মহিলাদের এই ফুটবল ম্যাচ কেবল একটি খেলা নয়, এটি ছিল এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত যেখানে সংস্কৃতি ও ক্রীড়ার অপূর্ব সংযোগ ঘটল। শাড়ি পড়ে মাঠে নেমে তাঁরা দেখিয়ে দিলেন যে মহিলাদের জন্য কোনো বাধাই চূড়ান্ত নয়। খেলাধুলার প্রতি ভালোবাসা, আত্মবিশ্বাস ও কঠোর পরিশ্রম থাকলে সব কিছুই সম্ভব। এই টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়া মহিলারা পরিশ্রমের মধ্যেও খেলায় অংশগ্রহণ করে তাঁরা উচ্ছসিত। খেলার শেষে আকর্ষণীয় পুরস্কার পেয়ে তাঁরা আরও উৎসাহিত হলেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেরই বক্তব্য, এই প্রথমবার মাঠে নেমে ফুটবল টুর্নামেন্টে তাঁরা খেললেন। তাঁদের নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন হল।

এখনও সমাজের অনেক অংশে মহিলাদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করা সহজ নয়। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে তাঁদের এগিয়ে যাওয়ার পথে বহু বাধা থাকে। তবে সুন্দরবনের এই মহিলারা প্রমাণ করলেন যে ইচ্ছাশক্তি থাকলে কোনো বাধাই তাঁদের আটকাতে পারবে না। এই অসাধারণ মুহূর্তের পর বন্দনা, শিবানী ও তাঁদের সতীর্থদের স্বপ্ন এখন আরও বড়। তাঁরা চাইছেন জাতীয় স্তরে নিজেদের দক্ষতা প্রদর্শন করতে এবং ভবিষ্যতে আরও বড় মঞ্চে খেলার সুযোগ পেতে। সুন্দরবনের এই মহিলারা শুধু ফুটবল খেলেননি, তাঁরা একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। শাড়ি পরে ফুটবল খেলার মাধ্যমে তাঁরা প্রমাণ করেছেন যে সাহস ও পরিশ্রমের মাধ্যমে সমাজের সকল বাঁধা অতিক্রম করা সম্ভব। তাঁদের এই জয় শুধু একটি ম্যাচের নয়, এটি নারীর ক্ষমতায়নের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত!