চ্যাট জিপিটি, কীভাবে ব্যবহার করবেন?

আন্তর্জাতিক দেশ প্রযুক্তি

নিউজ পোল ব্যুরো: কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা আমাদের জীবনযাত্রায় গভীরভাবে প্রভাব ফেলেছে। একটি অপরিহার্য্য টুল, যা আমাদের কাজকে অনেক সহজ করে দেয়। তবে সেটি সঠিকভাবে ব্যবহার না হলে এর সম্ভবনা সীমিত হতে পারে। চ্যাট জিপিটি (ChatGPT) অথবা ওপেন এআই (AI) সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা অনেকেরই নেই। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক এআই (AI) টুল সম্পর্কে-

চ্যাট জিপিটি একটি ওপেন এআই এর তৈরি একটি ভাষা প্রক্রিয়া মডেল, যা মানুষের মত পাঠ্য তৈরি ও বোঝার ক্ষমতা রাখে। এসিইও কন্টেন্ট তৈরি করতে এআই (AI) টুল অনেক সাহায্য করে। এর মাধ্যমে কিওয়ার্ড নিয়ে গবেষণা করতে পারেন বা নতুন বিষয়বস্তু ধারণা পেতে পারেন। তবে,পুরোপুরি চ্যাট জিপিটির (ChatGPT) ওপর নির্ভর করা উচিত নয়, কারণ এর বেস সংস্করণে তথ্য সীমিত এবং মাঝে মাঝে ভুল উত্তর দিতে পারে। তাই এটি ব্যবহারের সময় আপনাকে সচেতন থাকতে হবে।

চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করা খুবই সহজ। এটি ব্যবহার করতে আপনাকে ইন্টারনেট সংযুক্ত একটি ডিভাইস, যেমন স্মার্টফোন, কম্পিউটার, এবং একটি ব্রাউজার প্রয়োজন। প্রথমত, চ্যাট জিপিটির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। সাইটে বা অ্যাপে প্রবেশ করার পর একটি একাউন্ট তৈরি করতে হতে পারে। একবার একাউন্ট তৈরি হয়ে গেলে বা লগ ইন করার পর চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করা যাবে। এরপর টেক্সট বক্স দেখা যাবে যেখানে আপনার প্রশ্ন বা বার্তা টাইপ করতে হবে। প্রশ্ন যত স্পষ্ট এবং নির্দিষ্ট হবে উত্তর তত সঠিক এবং কার্যকর হবে। প্রশ্ন টাইপ করার পর এন্টার ক্লিক বা সেন্ডার বোতামে ক্লিক করতে হবে। এরপর চ্যাট জিপিটি আপনার প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে দ্রুত উত্তর প্রদান করবে। প্রয়োজনে পুনরায় প্রশ্ন করা যাবে বা উত্তরের ওপর ভিত্তি করে আরও বিস্তারিত জানা যাবে। তবে চ্যাট জিপিটি ব্যবহারের সময় মাথায় রাখতে হবে এটি একটি কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা মডেল, তাই এটি মানুষের মত চিন্তা করতে পারে না। এটি শুধুমাত্র প্রশিক্ষণ ডেটার ওপর ভিত্তি করে উত্তর প্রদান করে।

চ্যাট জিপিটি দিয়ে আপনি বিভিন্ন ধরণের এসিইও বিষয়বস্তু তৈরি করতে পারেন, যেমন-

কিওয়ার্ড সম্পর্কিত ধারণা
মেটা বর্ণনা এবং শিরোনাম ট্যাগ
স্কিমা মার্কআপ তৈরি করা
বিষয়বস্তু রূপরেখা প্রস্তুত করা
সৃজনশীল ব্লকগুলো কাটিয়ে দেওয়া
লিঙ্ক বিল্ডিংয়ের জন্য ব্যবহার

১. একটি ভালো কন্টেন্ট তৈরির ভিত্তি কিওয়ার্ড গবেষণা। এটি সঠিক বিষয় নির্বাচন করতে সাহায্য করে এবং কন্টেন্টকে সার্চ বারে সহজে খুঁজে পাওয়ার উপযোগী করে তোলে। এছাড়াও, ব্যবহারকারীদের অনুসন্ধান অভিপ্রায় বুঝতে সাহায্য করে এবং সেই অনুযায়ী কন্টেন্ট তৈরির পরামর্শ দেয়। যদিও চ্যাট জিপিটি সরাসরি কিওয়ার্ড রিসার্চ টুল নয়, তবে এটি কিওয়ার্ড আইডিয়া এবং লং টেইল কোয়েরি নিয়ে ধারণা দিতে পারে, যা আপনার কন্টেন্টের জন্য কার্যকর হতে পারে।

২. সফল কন্টেন্ট কৌশল তৈরির জন্য কন্টেন্টকে ক্লিয়ার থিম বা বিষয় ক্লাস্টারে ভাগ করতে হবে। তবে, একাধিক শিরোনামের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে কিওয়ার্ড ক্যানিবালাইজেশন এড়ানো উচিত, যেখানে একাধিক পৃষ্ঠা একই কিওয়ার্ডের জন্য প্রতিযোগিতা করে। চ্যাট জিপিটি এমন বিষয়গুলো আবিষ্কার করতে সাহায্য করতে পারে,যেগুলো আপনি হয়তো ভাবেননি। এটি সৃজনশীলভাবে বিষয়বস্তু সাজাতে সাহায্য করে।

৩. যতটা সম্ভব ভালোভাবে লেখা মেটা শিরোনাম এবং বর্ণনা আপনার কন্টেন্টের সার্চ ইঞ্জিন ভিজিবিলিটি বাড়াতে পারে। এটি সার্চ ইঞ্জিন এবং ব্যবহারীকারীদের জন্য প্রাসঙ্গিক এবং আকর্ষক উপস্থাপন করতে সাহায্য করে। চ্যাট জিপিটি আপনাকে দ্রুত অনেকগুলো মেটা শিরোনাম এবং বর্ণনা তৈরি করতে সহায়তা করতে পারে, তবে সেগুলোতে সাবধানে শব্দ নির্বাচন এবং প্রাসঙ্গিকতা নিশ্চিত করতে হবে। এসব উপায়ে চ্যাট জিপিটি আপনার এসইও কন্টেন্ট প্রচেষ্টাকে আরও কার্যকর ও সৃজনশীলভাবে উন্নত করতে সহায়তা করতে পারে।

৪. চ্যাট জিপিটি কন্টেন্ট স্ট্রাটেজির জন্য একক সমাধান হতে পারে না, তবে এটি একটি শক্তিশালী টুল। এটি মানুষের সৃজনশীলতা এবং দক্ষতাকে পুরোপুরি প্রতিস্থাপন করতে পারে না, এটি একটি কন্টেন্ট আউটলাইন এবং সংক্ষিপ্ত সারাংশ তৈরির জন্য সহায়ক।

৫. গবেষণার ক্ষেত্রে নিজের অনুসন্ধান করা অপরিহার্য্য। তবুও, চ্যাট জিপিটি তথ্য সংগ্রহ এবং অনুপ্রেরণা সৃষ্টিতে একটি মূল্যবান সহযোগী হতে পারে। এটি এসিইও ভিত্তিক কন্টেন্ট তৈরির জন্য একটি কার্যকরী এআই টুল হতে পারে, তবে এর আউটপুট আপনার নিজস্ব দক্ষতা এবং বিশ্লেষণের সঙ্গে পরিপূরক করা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে সঠিক এবং আপনার লক্ষ্য দর্শকদের জন্য প্রাসঙ্গিক হয়।

৬.প্রাথমিক কন্টেন্ট খসড়া তৈরি করতে চ্যাট জিপিটি সহায়ক হতে পারে তবে একমাত্র এটি ব্যবহার করার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা ঠিক নয়। এর প্রতিক্রিয়া সাধারণত পূর্বে প্রশিক্ষিত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে থাকে, যার ফলে লেখাগুলো মাঝে মাঝে পুনরাবৃত্তিমূলক হতে পারে এবং মৌলিকতার অভাব থাকতে পারে। এছাড়া কন্টেন্ট মানসম্মত এবং তথ্যসাপেক্ষ হতে হলে সেটি সম্পাদনা, পর্যালোচনা এবং সত্যতা যাচাই করতে হবে।

৭. একজন বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য একটি ব্যাপক কভারেজ প্রয়োজন, যা প্রতিযোগীদের থেকে মিস করা বিষয়গুলো খুঁজে বের করার মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব। এই ধাপটি সহজ করার জন্য চ্যাট জিপিটির মত এআই টুল ব্যবহার করা প্রয়োজন। চ্যাট জিপিটি কন্টেন্টের ফাঁকগুলো চিহ্নিত করতে সাহায্য করে অথবা চ্যাট জিপিটি কন্টেন্ট সাইলোর একটি মানচিত্র প্রদান করে, যা আপনাকে এমন বিষয়গুলো চিহ্নিত করতে সাহায্য করবে যেগুলো এখনও পূর্ণাঙ্গভাবে ব্যবহার হয়নি।

৮. চ্যাট জিপিটি মানুষের মত করে ভাষা বুঝতে পারে। বিশাল ডেটাবেস এবং উন্নত অয়ালগরিদম ব্যবহার করে দ্রুত ও নির্ভুল আউটপুট তৈরি করতে পারে। ব্যবহারকারীরা প্রয়োজন অনুযায়ী কাস্টমাইজড উত্তর প্রদান করতে সক্ষম।

বর্তমানে ব্যবহারকারীদের মতামতের ওপর ভিত্তি করে চ্যাট জিপিটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফিচার অ্যাড করছে।এতে অদূর ভবিষ্যতে এই টুল ব্যবহার করে মানুষ প্রফেশনাল লেভেলে বিভিন্ন প্রজেক্ট অথবা ইন্ডাস্ট্রি লেভেলে অটোমিশন পদ্ধতি প্রয়োগ করবে।