মরণোত্তর গ্র্যামি পেলেন জিমি কার্টার

আন্তর্জাতিক বিনোদন রাজনীতি

নিউজ পোল বিনোদন ব্যুরো :- বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পর্যন্ত জীবনের এক বিস্ময়কর যাত্রা পার করেছেন জিমি কার্টার, যিনি ‘মরণোত্তর গ্র্যামি পুরস্কার’ অর্জন করলেন। গত বছরের ডিসেম্বরে ১০০ বছর ছুঁয়ে প্রয়াত হন জিমি কার্টার। তাঁর কণ্ঠ এবং কাজের জন্য মনোনীত হন ২০২৫ সালের গ্র্যামি পুরস্কারের তালিকায়। এই গ্র্যামি পুরস্কারটি তাঁর অসামান্য অবদান এবং মানুষের প্রতি তাঁর অটুট দৃষ্টি ও সংবেদনশীলতার জন্য তাঁকে সম্মানিত করেছে। ২ ফেব্রুয়ারী, রবিবার দাদুর হয়ে পুরস্কার গ্রহণ করতে আসেন জিমি কার্টারের নাতি জ্যাসন কার্টার। পুরস্কার গ্রহণ করার পর তিনি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন।

কার্টার এমন একজন ব্যক্তি, যিনি কেবল রাজনৈতিক দৃশ্যে একাধিক অবদান রেখেছেন তা নয়, তিনি একজন লেখক, মানবাধিকার কর্মী এবং শান্তি প্রচারের উজ্জ্বল দৃষ্টান্তও। এটি একটি নিঃসন্দেহে ঐতিহাসিক ঘটনা, কারণ যদি জিমি কার্টার জীবিত থাকতেন, তবে তিনি গ্র্যামি পুরস্কারের ইতিহাসে প্রবীণতম পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি হতেন। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৯তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন জিমি কার্টার। তিনি মূলত গ্র্যামি পুরস্কারটি পেয়েছেন তাঁর আত্মজীবনীমূলক কাহিনী ‘A Full Life: Reflections at Ninety ‘-এর জন্য, যা তাঁর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলি বর্ণনা করে। বইটি কার্টারের ব্যক্তিগত জীবনের গভীর দৃষ্টিভঙ্গি ও বিশ্ববোধের পরিচয় দেয়।

গ্র্যামি কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘জিমি কার্টারের কণ্ঠ এবং তাঁর জীবনের গল্পে এমন এক ধরনের গভীরতা ও মানবিকতার মিশ্রণ ছিল, যা শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছে।’ তাঁর আত্মজীবনীমূলক বইটি শুধুমাত্র তাঁর রাজনৈতিক জীবন নয়, বরং তাঁর মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি, শান্তির জন্য সংগ্রাম ও দীর্ঘ পথপরিক্রমার প্রতিফলন ছিল। কার্টারের কণ্ঠের মাধুর্য এবং তাঁর জীবনের সংগ্রামের গল্প শুনে শ্রোতারা তাঁর জীবনকে নতুনভাবে উপলব্ধি করেছেন। তিনি যেমন একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দৃশ্যপটে নিজের স্থান তৈরি করেছিলেন, তেমনি তিনি নিজের ছোট ছোট কাহিনীগুলির মাধ্যমে মানবতার চিত্রও আঁকতে চেয়েছিলেন।

এমন একজন মহান নেতার জীবনশৈলী এবং অভিজ্ঞতা যে অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হতে পারে, তা তাঁর গ্র্যামি পুরস্কার প্রাপ্তিতে প্রমাণিত হয়েছে। তাঁর মৃত্যুর পর মরণোত্তর গ্র্যামি প্রাপ্তি শুধুমাত্র তাঁর ব্যক্তিগত অর্জনের পরিচয় নয়, বরং তাঁর রাজনৈতিক জীবনের নানান দৃষ্টান্তেরও স্বীকৃতি। জিমি কার্টারের এই পুরস্কার শুধু তার জন্যই নয়, তাঁর পরিবারের জন্য, তাঁর অনুগামীদের জন্য এবং পৃথিবীজুড়ে শান্তি ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সব মানুষের জন্য এক অনুপ্রেরণার মুহূর্ত হয়ে থাকবে।