বাবার দেহ কেটে অর্ধেক ভাগ চাইল বড়ো ভাই

দেশ

নিউজ পোল ব্যুরো : একজন বাবা চিরবিদায় নেওয়ার পর সাধারণত তাঁর ছেলেরা শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন। কিন্তু এমন একটি ঘটনা ঘটে গেল, যেখানে বাবার শেষকৃত্য নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে তুমুল বিবাদ শুরু হয়, যা শেষ পর্যন্ত ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের টিকমগড় জেলায়। ওই এলাকায় ছোট ছেলের সঙ্গে থাকতেন ৮৪ বছর বয়সী ধ্যানী সিং ঘোষ।বার্ধক্যজনিত কারণে দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। গত রবিবার তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারের সবাই যখন শোকস্তব্ধ, তখন বড় ছেলে দাবি তোলে যে সে বাবার শেষকৃত্য সম্পন্ন করবে। কারণ হিসেবে তিনি জানান, তিনি পরিবারের প্রথম সন্তান, তাই এই দায়িত্ব তাঁরই পাওয়া উচিত। ছোট ভাই এই দাবির বিরোধিতা করে, সে বলে, বাবা কখনোই নির্দিষ্ট করে বলেননি যে কে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করবে। তাই এই অধিকার শুধু বড়ো ভাইয়ের একার নয়, বরং পুরো পরিবারের সবার সম্মিলিত সিদ্ধান্তে হওয়া উচিত।

প্রথমে বিষয়টি নিয়ে কথা কাটাকাটি চলতে থাকে, কিন্তু ধীরে ধীরে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। দুই ভাইয়ের মধ্যে তর্ক এতটাই তীব্র হয়ে ওঠে যে তা হাতাহাতিতে গড়ায়। বড়ো ভাই একপর্যায়ে এতটাই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে যে তিনি চরম এক দাবি তুলে ধরেন—যেহেতু তিনি বাবার বড় ছেলে, তাই তিনি বাবার শরীরের অর্ধেক অংশ নিয়ে শেষকৃত্য করতে চান! তাঁর এই দাবি শুনে পরিবার ও প্রতিবেশীরা হতবাক হয়ে যান। কেউই কল্পনা করতে পারেননি যে শেষকৃত্যের মতো একটি গুরুতর বিষয়ে এমন অমানবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

ছোট ভাই এতে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘বাবা কি কখনও আমাদের শরীর ভাগ করে দিয়েছিলেন? তাহলে আমরা কেন তাঁর শরীর ভাগ করব?’ কিন্তু বড় ভাই নিজের অবস্থান থেকে একচুলও সরতে নারাজ। সে যুক্তি দেখায়, ‘আমি প্রথম সন্তান, ছোট থেকে বাবা আমায় সবকিছুতে এগিয়ে রেখেছেন, তাই তাঁর শেষকৃত্যও আমার একার করার অধিকার আছে।’ পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে যখন আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা এসে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেন। কিন্তু দুই ভাই কেউই নিজের অবস্থান থেকে সরতে রাজি নয়।

তুমুল ঝগড়ার মধ্যেই পরিবারের প্রবীণ এক সদস্য বলেন, ‘শুধুমাত্র রীতি ও নিয়ম মানার জন্য আমরা কি আমাদের বাবার প্রতি এই অসম্মান দেখাব? শেষকৃত্য ভাগ করা যায় না, এটা ভালোবাসা ও দায়িত্বের বিষয়।’ অবশেষে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশের তত্ত্বাবধানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। কিন্তু এই ভয়ঙ্কর ও বেদনাদায়ক ঘটনাটি সবাইকে মনে করিয়ে দেয়, পারিবারিক বন্ধন যতই দৃঢ় হোক, স্বার্থপরতা আর অহংকার সেটাকে মুহূর্তেই ধ্বংস করে দিতে পারে।