প্লাটফর্মের ছাদে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি

কলকাতা জেলা রাজ্য

নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া : হাওড়া স্টেশনের ৯ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। প্ল্যাটফর্মের শেডের ওপর উঠে বসে পড়লেন এক ব্যক্তি, যার মাথায় ব্যান্ডেজ বাঁধা ছিল এবং হাতে ছিল একটি লাঠি। কখনও তিনি বসে থাকছিলেন, আবার কখনও হাঁটাচলা করছিলেন। এই অদ্ভুত ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্টেশনে ভিড় জমে যায়, সাধারণ যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে অনেকে প্রথমে ভেবেছিলেন, হয়ত ওই ব্যক্তি কোন জরুরি কারণে বা বিপদের মুখে পড়ে শেডের ওপরে উঠেছেন। কিন্তু বেশ কিছুক্ষণ কেটে গেলেও তিনি নীচে নামার কোন উদ্যোগ নিচ্ছিলেন না।

ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই রেল পুলিশ (আর পি এফ) এবং গভর্নমেন্ট রেলওয়ে পুলিশ (জি আর পি)-র আধিকারিকরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। তাঁরা প্রথমে ওই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন, তাঁকে বুঝিয়ে নীচে নামানোর প্রচেষ্টা চালান। এমনকি তাঁকে খাবার দেওয়া হয় যাতে তিনি শান্ত হয়ে নিচে নামেন। কিন্তু এতেও কোনো ফল মেলেনি। অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশ দমকল বিভাগে খবর পাঠায়। প্রায় এক ঘণ্টার প্রচেষ্টার পর দমকল কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে কার্যত অভিযান চালিয়ে ওই ব্যক্তিকে প্ল্যাটফর্মের শেড থেকে নামিয়ে আনেন। তারপর তাঁকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয় এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাওড়া জি আর পি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

পুলিশ সূত্রে খবর, ওই ব্যক্তির নাম রবীন্দ্র পাহাড়িয়া। তিনি ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। তবে কেন তিনি এমন কাণ্ড ঘটালেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশ এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে এবং খতিয়ে দেখা হচ্ছে, তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ কি না, নাকি অন্য কোন কারণ রয়েছে তাঁর এমন আচরণের পেছনে। প্রাথমিক তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে হাওড়া স্টেশনের ৯ নম্বর প্ল্যাটফর্মের শেডের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছিল। সেই সময় সুযোগ বুঝে রবীন্দ্র পাহাড়িয়া শেডের ওপরে উঠে পড়েন।

এই ঘটনার পর স্টেশনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে কীভাবে একজন ব্যক্তি এত সহজে প্ল্যাটফর্মের শেডের ওপর উঠে যেতে পারলেন, তা নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষকেও ভাবতে হচ্ছে। যাত্রীরা বলছেন, এমন ঘটনা ভবিষ্যতে যেন না ঘটে তার জন্য আরও কড়া নজরদারি দরকার। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হাওড়া স্টেশন কর্তৃপক্ষ এবং রেল পুলিশ স্টেশনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্টেশনের ভেতরে যাতে অযথা ঘোরাফেরা করা না যায় এবং প্রতিটি প্ল্যাটফর্মে নজরদারি আরও বাড়ানো যায়, তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা চলছে।