নিউজ পোল ব্যুরো: ভারতীয় রেল পরিবহনে নতুন মাত্রা যোগ করতে চলেছে বন্দেভারত স্লিপার ট্রেন, যার উৎপাদনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেল পশ্চিমবঙ্গের টিটাগড় রেল সিস্টেম লিমিটেড। এই সংস্থা ভারত হেভি ইলেকট্রিকালস লিমিটেডের (BHEL) সঙ্গে যৌথভাবে ৮০টি বন্দে ভারত স্লিপার ট্রেনের সেট তৈরীর দায়িত্ব নিয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যেই প্রথম প্রোটোটাইপ তৈরী হয়ে যাবে। সেই প্রোটোটাইপ অনুমোদিত হলে পরবর্তী দুই মাসের মধ্যেই ট্রেনের সরবরাহ শুরু হবে। প্রথম এক বছরের মধ্যে ১৬টি ট্রেনসেট তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।এই প্রকল্পের আওতায় মোট ৮০টি বন্দেভারত স্লিপার ট্রেন তৈরী করা হবে, যার জন্য ১২৮০টি কোচ প্রস্তুত করবে টিটাগড় রেল সিস্টেম লিমিটেড ও BHEL-এর যৌথ সংস্থা। চার বছরের মধ্যে ভারতীয় রেলকে এই ট্রেনগুলি সরবরাহ করার পরিকল্পনা রয়েছে। শুধু তাই নয়, পরবর্তী ৩৫ বছর ধরে এই ট্রেনগুলির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও থাকবে এই কনসোর্টিয়ামের উপর, যার জন্য সংস্থা বরাদ্দ পেয়েছে ১৪ হাজার কোটি টাকা। ভারতীয় রেলের বন্দেভারত স্লিপার প্রকল্পের অধীনে মোট ২০০টি স্লিপার ট্রেনসেট তৈরীর পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১২০টি ট্রেনসেট তৈরীর বরাত পেয়েছে রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড (RVNL) এবং রাশিয়ার ট্রান্সমাসহোল্ডিং। তাঁরা প্রতি ট্রেনসেটের জন্য ১২০ কোটি টাকার বিড করেছে।
সেই একই দরেই টিটাগড় রেল সিস্টেম লিমিটেড এবং BHEL-এর কনসোর্টিয়াম ৮০টি ট্রেনসেট তৈরীতে সম্মত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এই প্রকল্পের জন্য ২৫,০০০ কোটি টাকার বিড করেছিল টিটাগড় ও BHEL-এর কনসোর্টিয়াম, তবে পরে তাঁরা বিডের পরিমাণ কমিয়ে ৯,৬০০ কোটি টাকায় স্থির করে। ভারতীয় রেল বোর্ডের তরফে এই বরাদ্দ অনুমোদিত হয়েছে।টিটাগড় ওয়াগন বহু বছর ধরে রেলের ওয়াগন তৈরীর কাজ করে আসছে। পাশাপাশি, তাঁরা আধুনিক প্রযুক্তির মেট্রো রেকও তৈরি করছে। বন্দেভারত প্রকল্পে অংশ নেওয়ার ফলে বাংলার এই সংস্থা ভারতীয় রেলের আধুনিকীকরণে সরাসরি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে চলেছে। এই নতুন বন্দেভারত স্লিপার ট্রেনের গঠন হবে সম্পূর্ণ অ্যালুমিনিয়ামের, যা ট্রেনের ওজন কমিয়ে গতি ও কার্যকারিতা বাড়াবে। ভারতীয় রেল ভবিষ্যতে বন্দে ভারত ট্রেনের সম্প্রসারণের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে, এবং এই প্রকল্পের মাধ্যমে টিটাগড় রেল সিস্টেম সেই উন্নয়নের অংশ হয়ে উঠছে।বাংলার হাত ধরে বন্দে ভারতের নতুন অধ্যায় শুরু হতে চলেছে, যা ভারতের রেল ব্যবস্থার আধুনিকীকরণে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে উঠবে।