নিউজ পোল ব্যুরো : ইন্টারনেটে (Internet) একটিমাত্র মন্তব্যই কখনো কখনো বিশাল ঝড় তুলতে পারে। জনপ্রিয় ইউটিউবার রণবীর এলাহাবাদিয়া (Ranveer Allahbadia) সম্প্রতি এমনই এক বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন, যা তাকে বড়সড় আইনি সমস্যার মুখে ফেলেছে। তার মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়েছেন লাখো মানুষ। এমনকি তার প্রেমিকাও সম্পর্ক ছিন্ন করে তাকে ইনস্টাগ্রামে (Instagram) আনফলো করেছেন।
উল্লেখ্য, একটি পডকাস্টে (Podcast) অংশগ্রহণের সময় রণবীরকে প্রশ্ন করা হয়েছিল— যদি কোন সন্তান তার বাবা-মায়ের ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত দেখে ফেলে, সে কী করবে? উত্তরে তিনি অত্যন্ত আপত্তিকর ও বিতর্কিত মন্তব্য করেন, যা সামাজিক মাধ্যমে রীতিমতো আগুন ধরিয়ে দেয়। তিনি বলেন, ‘বাবা-মাকে সঙ্গম করতে দেখবে, না কি নিজেও এক বার যোগ দিয়ে তাদের সঙ্গম পুরোপুরি বন্ধ করতে উদ্যত হবে?’ এই মন্তব্যের পরপরই নেটদুনিয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকেই মনে করছেন, এটি নিছক একটি রসিকতা হলেও তা অত্যন্ত অশোভন ও অগ্রহণযোগ্য। ভারতের পারিবারিক মূল্যবোধ (Value) ও সংস্কৃতির (Culture) পরিপন্থী এমন মন্তব্য করায় রণবীরের বিরুদ্ধে একাধিক থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
আরও পড়ুন : Shah Rukh Khan : পাঠান থেকে সুপার হিরো! মার্ভেলে কোন চরিত্রে দেখা যাবে শাহরুখকে?
রণবীর এলাহাবাদিয়ার (Ranveer Allahbadia) এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এফআইআর (FIR) দায়ের করা হয়েছে। অনেকে বলছেন, এটি শুধুমাত্র কুরুচিপূর্ণ নয়, বরং পরিবার ও সমাজের প্রতি অবমাননাকর। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এমন মন্তব্য জনসাধারণের আবেগে আঘাত হানতে পারে এবং আইনত তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। সমালোচনার মুখে পড়ে রণবীর ক্ষমা চাইলেও বিতর্ক থামেনি। নেটিজেনদের একাংশ বলছেন, ক্ষমা চাওয়া যথেষ্ট নয়—তাঁর উচিত প্রকাশ্যে এসে বিষয়টি নিয়ে আরও ব্যাখ্যা দেওয়া। কেউ কেউ আবার মনে করছেন, সোশাল মিডিয়ায় (Social media) বাড়তি প্রচারের জন্যই তিনি এমন মন্তব্য করেছেন।
এই বিতর্কের মধ্যেই আরও একটি চমকপ্রদ ঘটনা ঘটেছে। রণবীর এলাহাবাদিয়ার দীর্ঘদিনের প্রেমিকা নিক্কি শর্মা (Nikki Sharma) তাকে ইনস্টাগ্রামে আনফলো করেছেন এবং একটি ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করেছেন। নিক্কি পোস্টে লেখেন, ‘সম্মান সবকিছুর ঊর্ধ্বে। একবার হারালে, তা আর ফিরে আসে না।’ এটি স্পষ্ট যে, রণবীরের বিতর্কিত মন্তব্য নিক্কির কাছেও অগ্রহণযোগ্য লেগেছে, যার ফলে তিনি সম্পর্ক থেকে সরে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। এই পদক্ষেপ দেখে অনেকেই মনে করছেন, তাদের সম্পর্ক হয়ত ভাঙনের দোরগোড়ায়।
একজন টুইটার (Twitter) ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘এমন কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য একজন জনপ্রিয় ইউটিউবারের (Youtuber) কাছ থেকে আশা করা যায় না। তিনি কি আদৌ বুঝতে পেরেছেন, তিনি কী বলেছেন?’ আরেকজন ইনস্টাগ্রাম (Instagram) ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, ‘রণবীরের এই মন্তব্য শালীনতার সীমা অতিক্রম করেছে। তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’ তবে কিছু সমর্থক রণবীরের পক্ষে কথা বলেছেন। তাদের মতে, ‘তিনি হয়ত রসিকতা করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু মানুষ অতি-সংবেদনশীল হয়ে পড়ছে।’
এই বিতর্কের কারণে রণবীর এলাহাবাদিয়ার ক্যারিয়ারে (Career) প্রভাব পড়বে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে বলিউড (Bollywood) ও ডিজিটাল মিডিয়ার (Digital Media) অনেক তারকার ক্যারিয়ারই বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদি তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা কঠোর হয়, তবে এটি তার জনপ্রিয়তা ও পেশাদার জীবনের জন্য বড়ো ধাক্কা হতে পারে। অন্যদিকে, প্রেমিকা নিক্কির সরে যাওয়ার সিদ্ধান্তও তাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করতে পারে। রণবীর এলাহাবাদিয়ার একটি মাত্র মন্তব্যই তাকে প্রবল বিতর্কের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। তার প্রেমিকার দূরে সরে যাওয়া, আইনি অভিযোগ, ও সোশাল মিডিয়ার (Social media) নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া – সব মিলিয়ে এটি তার জন্য বেশ কঠিন সময়। এখন দেখার বিষয়, তিনি কীভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দেন এবং ভবিষ্যতে এমন বিতর্ক এড়ানোর জন্য কী পদক্ষেপ নেন।