নিউজ পোল ব্যুরো: বর্তমান যুগে লিপস্টিক(Lipstick) শুধুমাত্র একটি প্রসাধনী সামগ্রী নয় বরং এটি একটি ফ্যাশন স্টেটমেন্ট(Fashion Statement)। রঙিন ঠোঁট(Colored Lips) দিয়ে ব্যক্তিত্বের অভিব্যক্তি প্রকাশ করা আজকের যুগে অত্যন্ত জনপ্রিয়। সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবে লিপস্টিকের ব্যবহার যেমন ব্যাপক, তেমনই রয়েছে সুদীর্ঘ ও চমকপ্রদ ইতিহাস। এই ইতিহাসের ভাঁজে ভাঁজে রয়েছে নানা কুসংস্কার, সামাজিক রীতি ও আভিজাত্যের গল্প(History of Lipstick)।
লিপস্টিকের শিকড়(History of Lipstick) প্রথিত সুমেরীয় সভ্যতায়(Sumerian Civilization), প্রায় ৫,০০০ বছর আগে। সেই সময় মেয়েরা নানা ধরনের রত্নগুঁড়া ও পাথর গুঁড়িয়ে ঠোঁটে লাগাত। মিশরীয় রানী ক্লিওপেট্রা(Cleopatra) তার লাল ঠোঁটের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত ছিলেন। তিনি রঙিন পতঙ্গ পিষে লিপ রঙ তৈরি করতেন। এছাড়া আয়োডিন(Iodine), অ্যালজিন(Algin) এবং ব্রোমিনের(Bromine) মিশ্রণ দিয়েও তৈরি হতো লিপস্টিকের আদিরূপ। খ্রিস্টপূর্ব ২০০-২৫০ সালের মিশরে লিপস্টিককে প্রথমে পতিতাদের চিহ্ন মনে করা হতো। তবে ৭০০ খ্রিস্টপূর্বে উচ্চবংশীয় নারীরা লাল রঙের লিপস্টিক ব্যবহার করতেন, যা তাদের আভিজাত্যের(Symbol of Aristocracy) পরিচায়ক ছিল। চিনেও হাজার বছর আগে ফুলের রস দিয়ে ঠোঁটে রঙ লাগানোর রীতি প্রচলিত ছিল। অস্ট্রেলিয়ায় লিপস্টিক(History of Lipstick) নিয়ে একটি মজার কুসংস্কার ছিল। সেখানে বিশ্বাস করা হতো, ঠোঁটে রঙ মাখলে খারাপ শক্তির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। রানি এলিজাবেথের(Queen Elizabeth) সময় থেকে আধুনিক লিপস্টিকের পথচলা(History of Lipstick) শুরু হয়। সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবে তখন লিপস্টিক শুধুমাত্র উচ্চবংশীয় নারীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। জনপ্রিয় ছিল কালচে লাল রঙ(History of Lipstick)।
১৮৮০ সালে ‘লিপস্টিক’(History of Lipstick) শব্দটির প্রথম ব্যবহার শুরু হয়। এরপর ১৮৮৪ সালে প্যারিসের একটি সুগন্ধি প্রস্তুতকারক সংস্থা বাজারে প্রথম লিপস্টিক নিয়ে আসে। ১৯১৫ সালে ধাতব(Metal Tube) টিউবে লিপস্টিক তৈরি করে বিক্রি শুরু হয়। তিরিশের দশকে আমেরিকান বাজারে লিপস্টিক(History of Lipstick) ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ধাতব টিউবের পরিবর্তে প্লাস্টিক টিউব ব্যবহার করা হয়। হলিউড অভিনেত্রী এলিজাবেথ টেলর(Elizabeth Taylor) ও মারলিন(Merlin Monroe) মনরোর ঠোঁটে লিপস্টিক ফ্যাশন স্টেটমেন্টে পরিণত হয়। ১৯৫০ সালে হ্যাজেল বিশপের একটি কোম্পানি লিপস্টিককে বিশ্ববাজারে(History of Lipstick) পরিচিতি দেয়। সত্তর ও নব্বইয়ের দশকে গাঢ় খয়েরি ও কালো শেডের লিপস্টিক জনপ্রিয় হয়। ২০০০ সালের আশেপাশে ত্বকের পিএইচ মাত্রা বজায় রেখে লিপস্টিক তৈরির প্রযুক্তি আসে। ২০১০-এর পরে হুডা বিউটি ও NYX কসমেটিকস লিকুইড লিপস্টিক বাজারে(History of Lipstick) আনে, যা আজও ফ্যাশনের শীর্ষে রয়েছে। লিপস্টিকের হাজার বছরের এই যাত্রাপথ(History of Lipstick) কেবল সৌন্দর্যের প্রতীক নয়, এটি নারীর আত্মপ্রকাশের এক মাধ্যম। সময়ের সঙ্গে লিপস্টিকের রঙ, উপাদান এবং ব্যবহার বদলেছে, কিন্তু এর গুরুত্ব আজও একই রকম থেকে গেছে। আধুনিক যুগে এটি(History of Lipstick) নারীর শক্তি ও আত্মবিশ্বাসের এক অনন্য প্রতীক।