Retirement Investment: অবসরের পর আর্থিক নিরাপত্তা: কোথায় বিনিয়োগ করবেন?

দেশ শেয়ার বাজার বিনিয়োগ

নিউজ পোল ব্যুরো: অনেকেই অবসরের (Retirement) পর আর্থিক সঙ্কটে (Financial Crisis) পড়েন। মুদ্রাস্ফীতি (Inflation) বৃদ্ধির কারণে সংসার চালানো ষাটোর্ধ্বদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে। তাই, অবসরের পরবর্তী ২৫ বছরের আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে চাকরিজীবনের সময় থেকেই সঠিক বিনিয়োগ (Investment) করা জরুরি। আর্থিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বিনিয়োগ পরিকল্পনা(Retirement করার সময় বৈচিত্র থাকা গুরুত্বপূর্ণ। একটি নির্দিষ্ট জায়গায় বিনিয়োগ না করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করলে সম্ভাব্য রিটার্ন (Return) বাড়তে পারে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অবসরের পর ছয় শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি ধরে নিয়ে বিনিয়োগ পরিকল্পনা করলে ভবিষ্যতে আর্থিক চাপ এড়ানো সম্ভব। অবসর-পরবর্তী জীবনযাপনের জন্য বিনিয়োগকে মূলত তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে: ঋণপত্র (Debt Instruments), হাইব্রিড মিউচুয়াল ফান্ড (Hybrid Mutual Funds), এবং ইকুইটি (Equity)।

বিনিয়োগ পরিকল্পনা.

১. ঋণপত্র: অবসরের প্রথম দুই বছর নির্বিঘ্নে কাটানোর জন্য ৫০ লক্ষ টাকা ঋণপত্রে বিনিয়োগ করা যেতে পারে। এটি তুলনামূলকভাবে কম ঝুঁকিপূর্ণ এবং পাঁচ শতাংশ রিটার্ন দিতে পারে।

২. হাইব্রিড মিউচুয়াল ফান্ড: অবসরের তৃতীয় বছর থেকে ২৫তম বছর পর্যন্ত আয় নিশ্চিত করতে এক কোটি টাকা বিনিয়োগ করা যেতে পারে, যা সাত শতাংশ রিটার্ন দিতে পারে।

৩. ইকুইটি বা শেয়ার মার্কেট: মাঝের ১৮ বছরের জন্য ২.২৫ কোটি টাকা ইকুইটিতে বিনিয়োগ করা উচিত। এটি দীর্ঘমেয়াদে কমপক্ষে ১০.৫ শতাংশ রিটার্ন দিতে পারে।

একটি আর্থিক বছরে প্রতি মাসে গড়ে দুই লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে। তবে ছয় শতাংশ মুদ্রাস্ফীতির কারণে ২৫ বছরে এই ব্যয় ৩.৩৭ লক্ষ টাকায় পৌঁছাতে পারে। সঠিক বিনিয়োগ না করলে মূলধন দুর্বল হয়ে পড়বে, তাই উচ্চ হারে রিটার্ন নিশ্চিত করতে হবে। অতিরিক্ত বিনিয়োগের জন্য রিয়েল এস্টেট (Real Estate) একটি বিকল্প হতে পারে, তবে এতে আরও বেশি অর্থের প্রয়োজন হতে পারে। যেহেতু রিয়েল এস্টেটের মূল্য পরিবর্তনশীল, তাই দীর্ঘমেয়াদে লাভজনক হলেও এটি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। সঠিক পরিকল্পনা এবং বৈচিত্র্যময় বিনিয়োগের মাধ্যমে অবসর-পরবর্তী জীবন আর্থিক সুরক্ষিত ও নিশ্চিন্ত করা সম্ভব।

অবসরের পর আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শুধুমাত্র শেয়ার বাজার বা মিউচুয়াল ফান্ডেই নয়, কিছু প্রথাগত বিনিয়োগের (Traditional Investment) দিকেও নজর দেওয়া উচিত। আর্থিক বিশ্লেষকদের মতে, ব্যাঙ্ক বা ডাকঘরের ফিক্সড ডিপোজিট (Fixed Deposit) এবং টার্ম ডিপোজিট (Term Deposit) অবসরপ্রাপ্তদের জন্য নির্ভরযোগ্য বিনিয়োগ হতে পারে। এ ছাড়া সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিম (Senior Citizen Savings Scheme) একটি ভালো বিকল্প, যেখানে অতিরিক্ত সুদের সুবিধা পাওয়া যায়।

তবে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, অবসরের পরও নিয়মিতভাবে মিউচুয়াল ফান্ড (Mutual Fund) এবং শেয়ারে (Stock Market) বিনিয়োগ চালিয়ে যাওয়া উচিত, যাতে দীর্ঘমেয়াদে ভালো রিটার্ন পাওয়া যায়। মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের দুটি প্রধান উপায় রয়েছে— লাম্পসাম (Lumpsum) ও সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান (SIP)। লাম্পসাম বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একবারে বড় অঙ্কের টাকা লগ্নি করতে হয়, যা সাধারণত বোনাস বা উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া অর্থ দিয়ে করা হয়। তবে এটি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ পুরোপুরি শেয়ার বাজারের ওঠানামার উপর নির্ভরশীল।অন্যদিকে, এসআইপি (SIP) মাধ্যমে ধাপে ধাপে বিনিয়োগ করলে ঝুঁকির পরিমাণ কম থাকে এবং দীর্ঘমেয়াদে ভালো রিটার্ন পাওয়া সম্ভব। তাই, অবসরের পর বিনিয়োগ পরিকল্পনায় স্থিতিশীলতা ও বৈচিত্র্য বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।