‘ওয়াকফ সংশোধন বিল নিয়ে আলোচনা হয়নি! হওয়া উচিৎ ছিল: মুখ্যমন্ত্রী

কলকাতা রাজনীতি রাজ্য

মৃণালকান্তি সরকার, কলকাতা: বৃহস্পতিবার বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাবিত ওয়াকফ আইন নিয়ে যে উত্তপ্ত হতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন, তার আভাস আগেই পাওয়া গিয়েছিল। ওয়াকফ সংশোধনী নিয়ে যে বিলটি কেন্দ্রীয় সরকার সংসদে পেশ করেছিল, তা আইনে পরিণত করানোর আগে তা নিয়ে বিতর্ক বেঁধেছে। তাই বিলটিকে আপাতত যৌথ সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। সেই কমিটিতে বিলটির বিরোধিতা করেছে তৃণমূল।

বিধানসভায় এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘ওয়াকফ সংশোধন বিল নিয়ে সরকারের সঙ্গে এই ব্যাপারে আলোচনা হয়নি। ওয়াকফ বোর্ড ব্রিটিশ আমল থেকে চলে আসছে। ১৯৯৫ সালে ওয়াকফ আইনের সংশোধন করা হয়েছে। আমাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি! ২০২৪ সালে যেটা আনা হয়েছে রাজ্যদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল। একটা জয়েন্ট কমিটিও হয়েছে। এই বিলটা সরকারকে জানানো হয়নি। কেন্দ্রীয় সরকার শুধুমাত্র কাগজে একটা বিজ্ঞাপন দিয়ে বলেছে যদি কোনও অসুবিধা হয় তাহলে এই ওয়েবসাইটে জানতে পারেন!’

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ওয়াকফ নিয়ে আমাদের কথা দফতর থেকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলাম। যদিও এই বিলটা যৌথ সংসদীয় কমিটিকে পাঠানো হয়েছে। সবাই সেটা বয়কট করেছে। ওয়াকফে সবাই দান করে। শুধু মুসলিমরা নয়, হিন্দুরাও দান করে। তাঁদের কী বুলডোজার দিয়ে উচ্ছেদ করে দেবো? যদি কোনও ধর্মের ওপর অত্যাচার হয়, অবশ্যই আমরা প্রতিবাদ করব। অন্য দেশেও যদি ধর্ম নিয়ে কিছু হয়, আমরা সমর্থন করি না। আমরা নিন্দা করি। ওয়াকফ বিলটি যে পেশ করা হয়েছে তাতে সাম্যের অধিকারটি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র এমন কোনও আইন করতে পারে না, যা রাজ্য বিধানসভার ক্ষমতা খর্ব হয়। এখানে রাজ্য বিধানসভার ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে।’

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সংখ্যালঘু দফতরের বাজেট ছিল আগের সরকারের আমলে ৪৭২ কোটি টাকা। এখন সেটা ১০ গুণ বেড়ে ৪৩৮১ কোটি টাকা হয়েছে। ওয়াকফ বোর্ডের পরিচালনা করার জন্যই ২২ কোটি টাকা দিতে হয় রাজ্যের পক্ষ থেকে। সুপ্রীম কোর্ট একটা নির্দেশ দিয়েছে বুলডোজার দিয়ে কারুর সম্পত্তি ভাঙা যাবে না, আপনারা সেটা জানেন। আমরা ইংরেজি মাধ্যমে মাদ্রাসা করে দিতে চলেছি। যারা পিছিয়ে রয়েছেন, তাঁদের তো সমাজের মূল স্রোতে ফেরাতে হবে। এক লক্ষেরও বেশি হজ যাত্রা হয়েছে। হজ হাউস হয়েছে। আমি তো আর বুলডোজার দিয়ে সরাতে পারবো না। আপনারাও দ্বায়িত্ব নিন যাতে কেউ সরকারি সম্পত্তি দখল করতে না পারে। রাজ্যের নয়, কেন্দ্রেরও নয়।’

এদিন এই অধিবেশনে বিজেপির পক্ষ থেকে কোনও বিরোধিতাই করা হয়নি মুখ্যমন্ত্রীর এদিনের অধিবেশনের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে।