নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ভুয়ো পরিচয়পত্রের দৌলতেই কলকাতাতেই রমরমিয়ে চলছে অবৈধ কাজ! ব্যবসা চালাচ্ছে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা। এক মহিলা সহ চারজনকে হাতেনাতে পাকড়াও।
কলকাতার মার্কুইট স্ট্রিট থেকে গ্রেফতার বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী। শুধু নিজেদের প্রয়োজনে অবৈধ পরিচয়পত্র নয়, এ ছাড়াও মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে। সূত্রের খবর, ওপার বাংলা থেকে আসা বহু নাগরিককে গোপনে অবাধে পরিচয়পত্র বানিয়ে দিতেন তারা। এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত এক নয় একাধিক! নথি অনুযায়ী ধৃত যুবকের নাম রবি শর্মা। কাগজপত্র ব্যবহার করেই কলকাতায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। এমনকি শুধু থাকা নয়, ভুয়ো পরিচয়পত্রেই করছেন চাকরি। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পাকড়াও করা হয় তাঁদেরকে। গোপন অভিযান চালায় পার্ক স্ট্রিট থানার পুলিশ। অভিযানের পর ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় ভারতের সচিত্র পরিচয় পত্র
জানা যায় ধৃত যুবক আদতে বাংলাদেশের মাদারীপুরের বাসিন্দা। গত দু’বছর আগে ভোগ পরিচয়পত্র নিয়ে কলকাতায় আসেন তিনি। যুবকের আসল নাম সফিক সরদার। সুখের খবর সক্রিয়ভাবে বিএনপি করতেন তিনি। কলকাতায় থাকার সত্বেও নিয়মিত বাংলাদেশের অনেকের সঙ্গেই যোগাযোগ রাখতেন তিনি। অবৈধভাবে ভারতে আসার জন্য সুপারিশ করতেন অনেকেই, দায়িত্ব নিতেন ভুয়ো পরিচয়পত্র বানানোর। রীতিমতন বলাই যায় রমরমিয়ে ব্যবসা চালাতে শুরু করেছিলেন বাংলাদেশী যুবক।
নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় এক মহিলা সহ চার বাংলাদেশী নাগরিক। ধৃতদের আজ কৃষ্ণনগর জেলা আদালতে পেশ করে কৃষ্ণনগর থানার পুলিশ।
উল্লেখ্য, বেশ কয়েকদিন ধরেই বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতনকে কেন্দ্র করে যখন উত্তাল দুই বাংলা এরই মাঝে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আরও উত্তপ্ত হচ্ছে পরিবেশ। উত্তেজনার পারদ চলছে রাজনৈতিক মহলেও। ঘটনার পর থেকেই রাজ্য সরকারের নিরাপত্তা ও রক্ষণাবেক্ষণের ওপর আঙুল তুলতে শুরু করেছে বিরোধী দলগুলি।
অপরদিকে, ওপারে হামলা, এপারের হাসপাতালে বাংলাদেশী রোগীদের ভর্তি নয়… বলে নির্দেশ জারি কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালের। ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতারির প্রতিবাদে উত্তাল বাংলাদেশ। একই সঙ্গে প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে সেদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা। সংখ্যালঘুদের ওপর লাগাতার আক্রমণ ও হিন্দু সন্ন্যাসীকে গ্রেফতারির ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারত সরকার। আর এবার এই পরিস্থিতির মধ্যে এপার বাংলার হাসপাতালে বাংলাদেশীদের প্রবেশ নিষেধ। বাংলাদেশীদের চিকিৎসা নয় বলে শুক্রবার জানিয়ে দিল মানিকতলার এক নার্সিংহোম। বাংলাদেশী রোগীদের ভর্তি নয়, চিকিৎসা পরিষেবাও নয়, বলে জানিয়েছে জেএন রায় হাসপাতাল।
প্রসঙ্গত, রাজ্যে অবাধে বাড়ছে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী এমন অভিযোগ আগেই তুলেছিল রাজ্যের একাধিক বিরোধী দল। বিশেষত রাজ্যের অন্যতম বিরোধী দল বিজেপি আগেও একাধিকবার এই বিষয়টিকে সামনে রেখেই তোপ দাগে রাজ্য সরকারকে। বাংলার সীমানা আরো মজুদ করা দরকার একাধিকবার ওঠে সেই প্রসঙ্গ। অন্যান্য রাজ্য অপেক্ষা পশ্চিমবঙ্গের সব থেকে বেশি বাড়ছে অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা একথা আগেও বিভিন্ন বক্তব্যের স্পষ্ট করেছিলেন বিরোধী দলনেতার শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার সহ একাধিক বিজেপি নেতৃত্বরা।
তাহলে কি তাঁদের আশঙ্কাই সত্যি? সরকারের রক্ষণাবেক্ষণের ঢিলেমির জন্যই কি বাড়ছে অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা? নাকি এর নেপথ্যে রয়েছে অন্য কোনও কারণ? চলছে তদন্ত।