নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কলকাতার নিউ টাউনে অবস্থিত ইকো পার্কে ভারতের প্রথম পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির দ্বারা পরিচালিত ও সুইজারল্যান্ডের একটি নামি কোম্পানির দ্বারা প্রস্তুত এই সৌর যাদুঘরের পথচলা শুরু হয়েছে। ২.৮৯ একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই গম্বুজ আকৃতির ঐতিহাসিক জাদুঘরটির উচ্চতা ২৭ মিটার। নিউ টাউনে নির্মিত এই নতুন মিউজিয়ামের নামকরণ করা হয়েছে ‘সোলার ডোম’। এই মিউজিয়ামে, প্রায় ২ হাজারটি সোলার প্যানেল স্থাপন করা হয়েছে। যার সাহায্যে প্রায় ১৮০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা যাবে। আর সেই বিদ্যুতের সাহায্যেই চলবে এই জাদুঘরটি। যার সাহায্যে রাতের অন্ধকারেও আলোকিত রাখতে সহায়তা করবে এই সোলার প্যানেল। এই জাদুঘরটি গড়ে তোলার মূল উদ্দেশ্যই হল, বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা। জাদুঘরে ৫০টি ইন্টারেক্টিভ প্রদর্শনী রয়েছে। যা মূলত সৌর শক্তি, বায়ু শক্তি এবং অনেক সাস্টেনেবল প্রযুক্তির সম্পর্কেই দর্শকদের সচেতন করবে।
হাউজিং অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন বা হিডকো #HIDCO ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি লিমিটেড #WBSEDCL যৌথভাবে এই সোলার বিদ্যুৎ প্যানেলের সাহায্যে এই সোলার ডোমটি প্রস্তুত করেছে। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়েছিল। কিন্তু কোভিডের কারণে, নির্মাণের কাজ পিছিয়ে যায়। শেষমেষ সব বাধা কাটিয়ে এখন তিনতলা বিশিষ্ট এই আশ্চর্য জাদুঘরটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ৫ নভেম্বর এই নীল-সাদা রঙের সোলার ডোমটি উন্মোচন করেন কলকাতার মেয়র তথা হিডকোর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম।
সোলার ডোম মিউজিয়ামে দর্শকদের স্বাগত জানাবে একটি রোবট। এর পাশাপাশি ৬টি কিউরিও রোবটও রয়েছে। যারা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়িয়ে উপস্থিত দর্শকদের #ChatGPT-এর সাহায্যে তথ্য প্রদান করছে।
এখানকার গ্যালারিগুলিও শিল্প ও জ্ঞানে পরিপূর্ণ। নিকোলা টেসলার একটি ফিগার ইনস্টলেশনও আপনাদের জন জয় করবে। এছাড়াও ভিশন থিয়েটারে এক অনন্য অভিজ্ঞতাও উপভোগ করতে পারবেন দর্শকরা।
সোলার ডোম মিউজিয়ামে ৬টি টানেল রয়েছে, যা দর্শকদের বিভিন্ন থিমযুক্ত জগতে নিয়ে যাবে। এই টানেলে ৩০টি প্রজেক্টর ব্যবহার করা হয়েছে, যা গতিশীল ভিজ্যুয়াল তৈরি করতে সাহায্য করছে। এই অভিজ্ঞতা একটি আকর্ষক এবং ইন্টারেক্টিভ উপায়ে শক্তি-সম্পর্কিত তথ্য উপস্থাপন করে, যা দর্শকদের মজাদার উপায়ে অনেক কিছুই শিখিয়ে দেয়।
এর পাশাপাশি ছোটদের জন্যেও মিউজিয়ামে একটি কিডস জোন রয়েছে। যেখানে শিশুদের জন্য ইন্টারেক্টিভ কুইজ ও গেমসের আকর্ষণীয় সম্ভার রয়েছে। এছাড়া এখানকার ক্যাফে থেকে পুরো ইকো পার্কটাকেও দেখা যায়।
এখানে এসে আপনি স্মার্ট সিটি মডেল দেখতে পারেন। ডিজিটাল অ্যাসেম্বলি গেমের মাধ্যমে শিখতে পারেন। এছাড়াও ২১০০ সালে কলকাতা কেমন হবে, তাও দেখতে পাবেন! সৌন্দর্য, স্থায়িত্ব, শিল্প, স্থাপত্য এবং প্রযুক্তি, আপনি এই সৌর গম্বুজ জাদুঘর পরিদর্শন করে একসাঙ্গে অনুভব করতে পারবেন। তাহলে আর দেরি কেন? আজই আপনার বাড়ির ছোটদের নিয়ে চলে আসুন সোলার ডোম মিউজিয়াম দেখতে।