নিউজ পোল ব্যুরো: দু’বছর কেটে গেছে, অথচ মেয়ের কোনও খোঁজ নেই। না সে বাড়িতে ফিরছে, না ফোন করছে মা-বাবাকে। এক সময় যাকে আগলে রেখেছিলেন মা- বাবা, সেই মেয়েই কি বিয়ের পর এতটা বদলে গেল? নাকি ঘটনার পেছনে লুকিয়ে আছে ভয়ানক কোনও সত্যি? এসব প্রশ্নই প্রতিনিয়ত তাড়িয়ে বেড়াচ্ছিল উত্তরপ্রদেশের বিজনর (Bijnor, Uttar Pradesh) জেলার এক পরিবারের বাবা-মাকে। বারবার জামাইয়ের (Husband) সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কোনও লাভ হয়নি। ফোনে কথা বলতে দেওয়া হত না মেয়েকে, আর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে শঙ্কা। অবশেষে, আর ধৈর্য রাখতে না পেরে তারা পুলিশের দ্বারস্থ হন। থানায় গিয়ে দায়ের করেন নিখোঁজের অভিযোগ (Missing Person Report)। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ, আর শুরু হয় রহস্যময় পর্দা (Murder Case) ফাঁসের প্রক্রিয়া।
পুলিশ প্রথমেই হানা দেয় মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে (In-laws’ House)। সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে হতবাক হয়ে যায় তারা। মেয়েটির কোনও অস্তিত্ব নেই সেখানে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর ধরা পড়ে ভয়ানক এক সত্যি, মেয়ে আর বেঁচেই নেই। তার নিথর দেহ বহুদিন আগে চাপা দেওয়া হয়েছিল মাটির নীচে। শনিবার এই ঘটনায় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে মেয়ের স্বামী কামিল এবং তার ছোট ভাই, অর্থাৎ মৃতার দেওর (Brother-in-law)।
জেরায় অভিযুক্ত কামিল স্বীকার করেছে, স্ত্রী আসিফাকে (Asifa Murder Case) সে নিজেই খুন করেছে। সন্দেহের বশে এই ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্ত নেয় সে। পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিতে কামিল জানায়, ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে সে তার ভাই এবং কাকিমার সাহায্য নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। হত্যার পর আসিফার দেহ বস্তায় ভরে রেখে দেওয়া হয় পাশের একটি পরিত্যক্ত এলাকায় (Abandoned Area)। সেখানে গভীর মাটি খুঁড়ে পুঁতে দেওয়া হয় সেই দেহ।
এই দীর্ঘ সময় ধরে আসিফার বাবা-মা মেয়ের খোঁজ নিলে, জামাই কামিল খুবই সীমিত ও কৌশলী উত্তর দিত। কখনও স্ত্রী বাইরে আছে, কখনও ফোনে কথা বলতে পারছে না, এইরকম নানা অজুহাত দিয়ে যাচ্ছিল সে। কিন্তু শনিবার কামিলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ যখন সেই নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছায়, তখন উদ্ধার হয় এক ভয়ানক দৃশ্য। মাটির তলা থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় উদ্ধার হয় এক নরকঙ্কাল (Skeleton Found)। বস্তার মুখ খোলার পরই পুলিশের সন্দেহ নিশ্চিত হয়। মেয়ে আসিফার নিখোঁজ থাকার রহস্যের পর্দা ফাঁস হয়ে যায়। মৃতদেহটি ফরেন্সিক পরীক্ষার (Forensic Test) জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান অনুযায়ী, বস্তার মধ্যে পাওয়া কঙ্কাল আসিফারই।
আরও পড়ুন: BJP: বিজেপি কর্মীকে প্রকাশ্য গুলি, নেপথ্যে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র?
এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এক তরুণী, যার স্বপ্ন ছিল সংসার আর ভালবাসার, সে পরিণত হয়েছে এক সন্দেহবাতিকগ্রস্ত স্বামীর হিংসার শিকার। পরিবারে শান্তি ফিরবে, মেয়ের মুখ দেখবে এই আশায় যারা দিন কাটিয়েছেন, সেই বাবা-মা এখন শুধুই বিচার চান। সূত্রের খবর, পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হত্যা (Murder), ষড়যন্ত্র (Criminal Conspiracy), এবং প্রমাণ লোপাটের (Destruction of Evidence) ধারায় মামলা রুজু করেছে। তদন্ত চলছে এবং ফরেন্সিক রিপোর্ট আসার পর দেহ (Murder Case) পরিচয়ের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
নিউজ পোল বাংলা ইউটিউব লিঙ্ক: https://youtube.com/@newspolebangla?si=mYrQvXTBQ1lG3NFT