নিউজ পোল ব্যুরো: মধ্যপ্রদেশের (Kuno National Park) কুনো জাতীয় উদ্যানে চিতাদের (Cheetah) নিয়ে একটি মানবিক ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় (Viral Video) রীতিমত ঝড় তুলেছে। এই মানবিক কাজের মূলে রয়েছেন এক গাড়ি চালক, যিনি এখন চাকরি হারিয়ে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে।
চলতি গরমে, যখন দেশজুড়ে তাপমাত্রা (Heatwave) প্রায় ৪৫ ডিগ্রির ঘরে ঘোরাফেরা করছে, তখন একদিন চিতা ট্র্যাকিং টিমের (Cheetah Tracking Team) গাড়ি চালক সত্যনারায়ণ গুর্জর (Satyanarayan Gurjar) পর্যটকদের সঙ্গে জঙ্গলের ভিতরে ঘুরছিলেন। হঠাৎ তিনি দেখতে পান এক মা চিতা তার চারটি শাবককে (Cheetah Cubs) নিয়ে পথের ধারে ঘুরে বেড়াচ্ছে। গাড়ির চালকের চোখে মনে হয়েছিল, পশুরা সম্ভবত তৃষ্ণার্ত (Thirsty) এবং প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ। মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সত্যনারায়ণ গাড়ি থামিয়ে, একটি পাত্রে জল ঢেলে চিতাদের সামনে রাখেন। জল দেখে চিতা ও তার শাবকরা এগিয়ে এসে জল পান করে। এই মুহূর্তটি ক্যামেরাবন্দি করেন উপস্থিত এক ফরেস্ট রেঞ্জ গার্ড (Forest Range Guard)। এরপর সেই ভিডিও এবং ছবি ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বহু মানুষ এই চালকের মানবিকতাকে কুর্নিশ জানান এবং প্রশংসায় ভরিয়ে দেন।
ভাইরাল ভিডিওটি দেখুনঃhttps://x.com/Ajaydubey9/status/1908428349233389633?t=gVTNGlBrKDtt7CsbstpFiQ&s=19
কিন্তু বন দফতর (Forest Department) এই ঘটনাকে মোটেই প্রশংসাযোগ্য বলে মনে করেনি। তাদের মতে, জাতীয় উদ্যানের নিয়ম অনুযায়ী বন্যপ্রাণীদের সঙ্গে এমন কোনও সরাসরি যোগাযোগ (Direct Interaction with Wildlife) করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এমন কাজ পশুদের স্বাভাবিক জীবনচক্র ও আচরণে প্রভাব ফেলে। তাই ফরেস্ট বিভাগের তরফে কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়ে চালক সত্যনারায়ণ গুর্জরকে চাকরি থেকে বরখাস্ত (Terminated from Job) করা হয়। জানা গিয়েছে, তিনি অস্থায়ী কর্মী ছিলেন। এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং প্রয়োজনে আরও কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে বন দফতরের তরফে। এমনকি স্থানীয় বাসিন্দাদেরও সতর্ক করা হয়েছে— জঙ্গলের কোর এলাকা থেকে বাইরে চলে আসা চিতাদের (Cheetahs outside core area) যেন কোনওরকম খাবার বা জল না দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন : NJP Station : উন্নয়নের নামে হকার উচ্ছেদ, নতুন রূপে এনজেপি
বিশেষত ‘জ্বালা’ নামের যে মহিলা চিতাটি এই চারটি শাবকের মা, সে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আনা হয়েছিল প্রকল্প চিতা (Project Cheetah)-র আওতায়। নামিবিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আনা চিতাদের মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রাণী ইতিমধ্যেই পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরে মারা গেছে। জ্বালা নিজে ভারতীয় পরিবেশে মানিয়ে নিয়ে সন্তানের জন্ম দিয়েছে, যা একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এই ঘটনার পর বন দফতরের কড়া মনোভাব ও সোশ্যাল মিডিয়ার প্রশংসার মধ্যে এক দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। মানবিকতা ও পরিবেশ সংরক্ষণের নিয়মের টানাপোড়েনেই যেন সত্যনারায়ণের এই ঘটনা প্রতীক হয়ে উঠেছে।
নিউজ পোল বাংলা ইউটিউব লিঙ্ক:- https://youtube.com/@newspolebangla?si=mYrQvXTBQ1lG3NFT