রাজ্যে দিনের পর দিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে বেকারের সংখ্যা। তার মধ্যে গ্রন্থাগার দফতরের ফাঁকা পদে কর্মী নিয়োগ করতে চেয়েও হতাশ দফতরের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। আমাদের প্রতিনিধি মৃণালকান্তি সরকারের মুখোমুখি হয়ে একান্ত সাক্ষাৎকারে জানালেন তাঁর উদ্বেগের কথা।
পদ আছে প্রার্থী নেই! অদ্ভুত হলেও সত্যি। আর এই ঘটনাই ঘটেছে খোদ এই রাজ্যের বুকে। এমনটাই জানালেন গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। ১৯৮৭ সালে গ্রন্থাগার দফতরের জন্ম হয়েছিল। তারপর থেকে এককভাবেই এই দফতর সুনামের সঙ্গে আজও নিজের কাজকর্ম চালিয়ে আসছে। এর আগে এই দফতর ছিল শিক্ষা দফতরের অধীনে।
গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী জানিয়েছেন ১৯৮৭ সাল থেকে আজ পর্যন্ত একসঙ্গে এত বড় সংখ্যার প্রার্থী নিয়োগ হয়নি এই দফতরে। চলতি বছরেই এই দফতরে ৫০৩ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। যার মধ্যে ৩৫৩ জন কাজে যোগদান করেছেন এবং ১৫০ জনের নিয়োগের সব প্রক্রিয়া চলছে। খুব শীঘ্রই তাঁরাও কাজে যোগদান করবেন।
মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী জানান, ‘আমরা যেভাবে নিয়োগের পদ্ধতির সব নিয়ম কানুন মেনেই বিজ্ঞাপন দিয়েছিলাম কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় রাজ্যে লাইব্রেরি সায়েন্স পাশ করে আসা প্রার্থীরা থাকলেও তাঁরা যোগদান করতে পারেননি! পাশাপাশি মুখ ও বধির, শারীরিকভাবে সক্ষম, প্রতিবন্ধী এবং সেনাবাহিনীর তরফে যারা পরীক্ষা দিলেও যেহেতু তাঁদের লাইব্রেরী সায়েন্সের কোন ডিপ্লোমা ছিল না তাই তাঁরা এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার মধ্যে আসতে পারেননি। আমরা পুনরায় তাঁদের আবার আহ্বান জানাবো যদি তাঁরা সবকিছু পদ্ধতি মেনে এই পরীক্ষা দেন আমরা অবশ্যই তাঁদেরকে নিয়োগ করব। অন্যথায় এরপর এই বিষয়টি সুপ্রীম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী শ্রম দফতরের অধীনে চলে যাবে। এরপর তাঁরাই সিদ্ধান্ত নিয়ে ঠিক করবেন কিভাবে এই গ্রন্থাগার দফতরের কর্মী নিয়োগ করা হবে।’
বামফ্রন্ট সরকারের আমল থেকে রাজ্যে বেকারত্বের সংখ্যা যেভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে দিনকে দিন বেড়ে চলেছে তার পরেও মানুষ বারবার আঙ্গুল তোলেন বর্তমান শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারের দিকে। কিন্তু যখন এই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হল তখন অধিকাংশ প্রার্থীরাই তাঁদের নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। রাজ্য সরকার সর্বতোভাবে চেষ্টা করে চলেছে এই রাজ্য থেকে বেকারত্বকে নির্মূল করার জন্য কিন্তু যোগ্য প্রার্থীরাই নেই বর্তমান রাজ্য সরকারের অধীনে থাকা গ্রন্থাকার দফতরের প্রার্থী পদে নির্বাচিত হওয়ার জন্য!
বুধবার বিধানসভায় এসে অধিবেশনের পর গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী জানান, এই দফতর কাজ করার জন্য সব সময় প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ সময়েই বাদ সাধছে রাজ্যের অর্থ দফতর। গ্রন্থাগার দফতর যদি সব কাজ স্বাধীনভাবে করার অনুমতি পায় তাহলে বর্তমান প্রযুক্তির যুগেও এই গ্রন্থাগার দফতর আবারও নতুন এক নজির সৃষ্টি করবে। এরই মধ্যে যখন প্রযুক্তি সবাইকে গ্রাস করেছে তখন এই রাজ্যের মানুষ এখনও পর্যন্ত লাইব্রেরিতে এসে বই পড়েন। প্রযুক্তি হয়তো থাকবে প্রযুক্তি হয়তো আরও উন্নততর হবে। কিন্তু মানুষ চিরদিন বই পড়বে আর সেই কারণেই রাজ্যের এই গ্রন্থাগার দফতর তার নিজের ভূমিকাকে তুলে ধরতে সব সময় সচেষ্ট রয়েছে। আশা করি, আগামী দিনে রাজ্যের গ্রন্থাগার দফতর এই রাজ্যের মান উন্নয়নে এক বড় ভূমিকা পালন করবে এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী।