নিউজ পোল ব্যুরো: নয়া ওয়াকফ আইন (Wakf Act) সংশোধনের প্রতিবাদ ঘিরে উত্তপ্ত হয়েছিল মুর্শিদাবাদ (Murshidabad)। এই অশান্তি ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আসছে বলে আশ্বাস দিলেন রাজ্য পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তা। সোমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই মন্তব্য করেন অতিরিক্ত ডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জাভেদ শামিম (Javed Shamim)। তবে এই শান্তিপ্রচেষ্টার পথের সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে গুজব (Fake News) এবং ভুয়ো খবর ছড়ানোর প্রবণতা। এডিজি-র কথায়, ‘‘পরিস্থিতি যতই স্বাভাবিক হোক না কেন, সোশাল মিডিয়া (Social Media) ঘিরে যেভাবে ভুয়ো বার্তা ছড়ানো হচ্ছে, তা নতুন করে আতঙ্ক তৈরি করছে। মানুষ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছেন।’’ তিনি স্পষ্ট ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যারা গুজব ছড়াচ্ছে, তারা রাজনৈতিক দলের সদস্য হোক বা কোনও সংগঠনের, কাউকেই ছাড়া হবে না। ‘‘দরকার পড়লে পাতাল থেকে তুলে আনব, তবু শাস্তি দেবোই,’’ বলেন তিনি।
আরও পড়ুন:-Murshidabad Issue: ব্যারিকেড ভেঙে বিক্ষোভের চেষ্টা, বাসন্তী হাইওয়েতে উত্তেজনা
উল্লেখ্য, বিগত কয়েক দিন ধরে মুর্শিদাবাদের সুতি, সামশেরগঞ্জ, ধুলিয়ান এবং জঙ্গিপুর (Suti, Shamsherganj, Dhulian, Jangipur) এলাকায় নতুন ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদ ঘিরে বিক্ষোভ চরমে পৌঁছেছিল। সেই অশান্তির আবহেই সামশেরগঞ্জে প্রাণ হারান এক বাবা এবং তার ছেলে। এই হৃদয়বিদারক ঘটনার পর জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও তলানিতে পৌঁছয়। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আলাদা করে এফআইআর (FIR) দায়ের করা হয়েছে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২০০-র বেশি গ্রেফতার (Over 200 Arrested) হয়েছে বলে জানান জাভেদ শামিম (Javed Shamim)। তার দাবি, ‘‘অশান্তির সঙ্গে যারাই যুক্ত, তাদের কাউকে ছাড়া হবে না। আমরা ইতিমধ্যেই তদন্তে অগ্রগতি করেছি।’’ এই অশান্তি ঠেকাতে প্রশাসনের তরফে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ছিল জেলার বিভিন্ন অংশে ইন্টারনেট পরিষেবা (Internet Shutdown in Murshidabad) বন্ধ রাখা। এডিজি জানান, “গুজবের লাগাম টানতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এখন ইন্টারনেট পরিষেবা ধাপে ধাপে ফের চালু করা হচ্ছে।”
নিউজ পোল বাংলা ইউটিউব লিঙ্ক:- https://youtube.com/@newspolebangla?si=mYrQvXTBQ1lG3NFT
তবে প্রযুক্তি যতই উন্নত হোক, সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া গুজব থামানো যে খুব একটা সহজ কাজ নয়, তাও মেনে নিচ্ছেন পুলিশ আধিকারিকরা। জাভেদ শামিম (Javed Shamim) বলেন, “একদল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য (Misinformation) ছড়াচ্ছে। তাদের লক্ষ্য মানুষকে উত্তেজিত করে অশান্তি সৃষ্টি করা। প্রশাসন এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে।” পুলিশ সূত্রে খবর, বিগত ৩৬ ঘণ্টায় নতুন করে আর কোনও বড় অশান্তির খবর মেলেনি। এতে প্রশাসন কিছুটা স্বস্তি পেলেও গুজবের জেরে সাধারণ মানুষ এখনও আতঙ্কে রয়েছেন। অনেকেই ভুল তথ্যের শিকার হয়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন, এলাকায় স্বাভাবিক জনজীবন ফেরাতে বিলম্ব হচ্ছে।