মৃণালকান্তি সরকার, কলকাতা: ‘ভবানীপুর গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি বিল ২০২৪’ এই শীতকালীন অধিবেশনে বিধানসভায় পেশ করা হবে আজ বৃহস্পতিবার বিধানসভায় জানান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এর পাশাপাশি তিনি জানান, আরও তিনটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই মতো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এলাকা ভবানীপুরে একটি বেসরকারি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা দফতর।
বুধবার দুপুরের অবকাশের সময় বিধানসভার কার্যবিবরণী কমিটির সদস্যরা স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে বিধানসভার অধিবেশন একদিন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। ওই বৈঠকে রাজ্যের আরও তিনটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বিল আনার সিদ্ধান্ত হয়। এই বিল নিয়ে উপস্থাপন করা হবে, যা নিয়ে আগামী মঙ্গলবার ও বুধবার আলোচনা হবে। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত হল ‘The Bhawanipur Global University Bill 2024’।
কারণ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌগোলিক অবস্থান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুরে, কলকাতা পুরসভার ৭০ নম্বর ওয়ার্ডে ‘ভবানীপুর গুজরাটি এডুকেশন সোসাইটি’ নামে একটি কলেজ রয়েছে। এই কলেজটি ভবানীপুর শিক্ষা নামে বিখ্যাত। এবার সেই কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করা হচ্ছে। আগামী বুধবার অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বে বিধানসভায় ভাষণ দেবেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রত্য বসু।
তিনি জানান, ‘আমি এই নতুন বিল আনব। বিলটি পাসের জন্য এক ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছে। যেহেতু বিজেপি সংসদীয় দল স্পীকারের ডাকা মিনিটস কমিটির বৈঠকে যোগ দেয়নি, তাই বিরোধী বিজেপি বিধায়কদের বৈঠক শেষ হওয়ার পরে অধিবেশন বাড়ানোর বিষয়ে জানানো হয়েছিল।’
অপরদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খোদ তাঁর নির্বাচনী এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতির দিন বিধানসভার আলোচনায় অংশ নেবেন কিনা তা নিয়ে মন্তব্য করতে নারাজ তৃণমূল পরিষদীয় দলের নেতারা। ভবানীপুর গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি বিল ছাড়াও আরও দু’টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আনা হচ্ছে।
মঙ্গলবার দু’টি শিক্ষা বিল আনা হবে। রামকৃষ্ণ পরমহংস বিশ্ববিদ্যালয় বিল ২০২৪ এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্ববিদ্যালয় বিল ২০২৪ নিয়ে আলোচনার জন্য দেড় ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছে। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধীরে ধীরে সরকারের বিভিন্ন দফতরের পাশাপাশি দলে তাঁর সক্রিয়তা বাড়াচ্ছেন। মনে করা হচ্ছে বিধানসভা নির্বাচনে যাওয়ার আগে ভবানীপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেবেন বিধায়ক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাংলার কিছু রাজনীতি থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীরা মনে করেন, ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে অবাঙালি হিন্দুদের ভোট ভবানীপুরের অন্যতম ফ্যাক্টর। এই কারণেই ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি ভবানীপুর বিধানসভা থেকে ১৭৬টি ভোটে হেরে যান। সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে, বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরী ভবানীপুর বিধানসভার পাঁচটি ওয়ার্ডে জয়ী হন। ২০২১ সালে তৃণমূলের বড় জয় সত্ত্বেও, দলের প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় অনেক ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী রুদ্রনীল ঘোষের থেকে পিছিয়ে ছিলেন। এখন দেখার বিষয় একটাই যে খোদ কলকাতার বুকে এই বিশ্ববিদ্যালয় করে আদপে ভবানীপুরবাসীর মন জয় করতে তৃণমূল কংগ্রেস এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কতটা সমর্থ হয়।