নিউজপোল ব্যুরো: চল্লিশ বছর বয়সের পরে দেখা যায় পুরুষদের শরীরে নানা ধরনের শারীরিক পরিবর্তন দেখা দেয়। এই বয়স থেকেই প্রস্টেট ক্যানসারের (Prostate Cancer) ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সময় থেকেই প্রয়োজন বাড়তি সতর্কতা এবং নির্দিষ্ট কিছু স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে নজরদারি। দুঃখজনকভাবে, বেশির ভাগ পুরুষই এই বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন নন। অনেক সময় উপসর্গ দেখা দিলেও তা উপেক্ষা করা হয়, ফলে ক্যানসার দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং জটিল পর্যায়ে পৌঁছায়।
আরো পড়ুন: Yoga: সুস্থতা, শক্তি ও ফোকাস—সকালের যোগচর্চায় সব কিছুই সম্ভব!
প্রস্টেট গ্ল্যান্ডটি পুরুষদের মূত্রথলির ঠিক নিচে থাকে এবং এটি একটি হরমোন-নির্মাতা গ্রন্থি। হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলে বা কোষের অস্বাভাবিক বিভাজনের কারণে এই গ্ল্যান্ডে ক্যানসার তৈরি হতে পারে। সমস্যা হল, এই ক্যানসার প্রথম পর্যায়ে নীরবে শরীরে বাসা বাঁধে। উপসর্গ দেখা দিলেও তা অনেক সময় স্পষ্ট নয়। যেমন—প্রস্রাবে জ্বালা, বারবার প্রস্রাবের বেগ, রক্তপাত, পিঠ ও পেলভিকে ব্যথা, প্রস্টেটের আকার অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়া, এমনকি হাড় দুর্বল হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
প্রস্টেট ক্যানসার (Prostate Cancer) শনাক্ত করতে চিকিৎসকরা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরামর্শ দেন—
1. আলট্রাসোনোগ্রাফি (USG): প্রস্টেটের আকার ও গঠন জানতে এই প্রাথমিক পরীক্ষা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এর মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত হতে পারি আমাদের মনে যে প্রস্টেট ক্যান্সারের আশঙ্কা আছে তা সত্যি কিনা।
2. ট্রান্স-রেক্টাল আলট্রাসোনোগ্রাফি ও বায়োপসি: প্রস্টেট গ্ল্যান্ড থেকে কোষ সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষণ করা হয় ক্যানসার কোষ আছে কি না।
3. পিএসএ (PSA) টেস্ট: রক্তে প্রস্টেট-স্পেসিফিক অ্যান্টিজেনের মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। ৪.০ ng/ml-এর বেশি হলে তা অস্বাভাবিক ধরা হয়।
4. লিভার ও কিডনি ফাংশন টেস্ট: শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ঠিকমতো কাজ করছে কি না, তা বুঝতে সহায়তা করে।
5. কোলোনোস্কোপি ও অ্যাবডোমিনাল স্ক্যান: অন্ত্র ও পেটের অন্যান্য অঙ্গের অবস্থাও জানা যায়।
6. বোন ডেনসিটি স্ক্যান (DEXA): হাড়ের শক্তি ও ঘনত্ব পরিমাপ করে, বিশেষ করে ধূমপায়ী বা স্টেরয়েড গ্রহণকারীদের জন্য জরুরি।
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও সচেতন জীবনধারা গ্রহণ করলে প্রস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব। সকলের সুস্থতাই একমাত্র কাম্য।