গ্রেফতার ভুয়ো নাইজেরিয়ান! অনলাইন প্রতারণার জাল হুগলিতে

breakingnews অপরাধ

নিজস্ব প্রতিনিধি, হুগলি: এবার হুগলি থেকে গ্রেফতার হলেন ভুয়ো নাইজেরিয়ান নাগরিক। অনলাইন প্রতারণায় আন্তর্জাতিক যোগ! হুগলি জেলা গ্ৰামীণ পুলিশের তৎপরতায় অবশেষে গ্রেফতার হল এক নাইজেরিয়ান নাগরিক।
দামি উপহারের প্রলোভন দেখিয়ে ২৫লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্ৰেটার নয়ডার গৌতম নগর থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে নাইজেরিয়ান নাগরিককে। হুগলি জেলা গ্ৰামীণ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সরকার জানিয়েছেন, ‘অভিযুক্তের নাম ইজিকেল এন্যাগি ওঘেনা’।

জানা যায় ইজিকেল এন্যাগি ওঘেনা নামের ওই অভিযুক্ত নাইজেরিয়ান ডাক্তার পরিচয় দিয়ে অনলাইনে বন্ধুত্ব তৈরি করেন এক ব্যাঙ্ক কর্মীর সঙ্গে। সেই বন্ধুত্বের জেরে ব্যাঙ্ক কর্মী ব্যক্তিগত কিছু তথ্য নাইজেরিয়ানকে শেয়ার করেন।পরবর্তীকালে তাঁকে জানানো হয় তাঁর একটি উপহার দিল্লি এয়ারপোর্টে আটকে আছে। তার জন্য তাঁকে ২৫লক্ষ ৪৬ হাজারটাকা পাঠাতে হবে। সেই মতো তদন্তে নেমে দেখা যায়, প্রতারিত মহিলা ৬টি অ্যাকাউন্টে এই টাকা অনলাইনে পাঠিয়েছেন। সেই অ্যাক্যাউন্টের তথ্য ধরে হুগলি জেলা গ্রামীণ পুলিশের সাইবার শাখা তদন্ত শুরু করে গ্ৰেটার নয়ডার গৌতম নগর থানা এলাকা থেকে এক নাইজেরিয়ান নাগরিককে গত ৬ ডিসেম্বর গ্রেফতার করে। সেখান থেকে অভিযুক্তকে ট্রানজিট রিমান্ডে এনে গত ৮ আগষ্ট চন্দনগর মহকুমা আদালতে তোলা হয়।

হুগলি জেলা গ্রামীণ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যান সরকার সিঙ্গুরের কামারকুন্ডুতে এক সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি জানান, ‘গত ২৪ আগষ্ট ধনিয়াখালি থানায় মৌসুমি সাহা নামে এক রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্ক কর্মী ২৫ লক্ষ টাকা সাইবার প্রতরণার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে ব্যাঙ্ক কর্মী জানিয়েছিলেন, নাইজেরিয়ান এক ব্যক্তি ডাক্তার পরিচয় দিয়ে অনলাইনে তাঁর সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি করেন। সেই বন্ধুত্বের জেরে ব্যাঙ্ক কর্মী ব্যক্তিগত কিছু তথ্য নাইজেরিয়ানকে শেয়ার করেন। পরবর্তীকালে তাঁকে জানানো হয় তাঁর একটি উপহার দিল্লি এয়ারপোর্টে আটকে আছে। তার জন্য তাঁকে ২৫লক্ষ ৪৬ হাজার টাকা পাঠাতে হবে। সেই টাকা পাঠানোর পরেই প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে বুঝতে পেরেই মৌসুমি সাহা পুলিশের দ্বারস্থ হন।

পুলিশ আরও জানায়, অভিযুক্ত ২০১৩ সালে বাণিজ্যিক পাসপোর্ট নিয়ে এদেশে আসে। গত এক বছর হল তাঁর পাসপোর্টের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। এখানে চুলের ব্যবসা করতেন তিনি। মহিলা যে টাকা অনলাইনে পাঠিয়েছেন সেই টাকা যাদের কাছে গেছে তিনি একজন সেই টাকার অংশীদার। টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রেও ভূমিকা রয়েছে তাঁর। পাশাপাশি অভিযুক্তের পাসপোর্টের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পরেও তিনি ভারতে বসবাস করছেন, সেই বিষয়েও প্রয়োজনীয় আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ আধিকারিকরা।

এরইমধ্যে চলছে অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ। এই প্রতারণা কাণ্ডের সঙ্গে আর কে বা কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সেইসঙ্গে নাইজেরিয়ান আর কোনও ব্যক্তি এই কাণ্ডে জড়িত আছে কিনা ও এই দেশের কোন নাগরিক যুক্ত আছে কিনা তাও খোঁজ খবর নেওয়ার কাজ শুরু করেছে পুলিশ।