নিজস্ব প্রতিনিধি, পূর্ব মেদিনীপুরঃ নববর্ষের পরেই উদ্বোধন করা হবে দীঘার জগন্নাথ মন্দিরের, বুধবার স্ব-শরীরে মন্দিরে গিয়ে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন গোটা মন্দির প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখেন তিনি। আলোচনা করেন মন্দিরের বাকি পড়ে থাকা অংশের কাজ কত দিনে সম্পন্ন হবে। এরপরেই নিশ্চিত করেন মন্দিরের উদ্বোধনের দিনক্ষণ। নতুন বছরের অক্ষয় তৃতীয়ার দিন ৩০ এপ্রিল উদ্বোধন করা হবে পুরীতে জগন্নাথ প্রভুর নতুন মন্দির ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পুরীর মন্দিরের আদলে দীঘায় আড়াইশো কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে এই মন্দিরের জন্য। মন্দিরের কাজ কবে শেষ হবে সে বিষয়ে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘আশা করা যায় তিন মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে মন্দির’। অক্ষয় তৃতীয়ায় (৩০ এপ্রিল) দীঘার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী বছরের রথ শুরু হবে দীঘার জগন্নাথ মন্দিরেই।
পুরীর মন্দিরের আদলেই তৈরি হবে এই মন্দির। কিন্তু পুরীর সঙ্গে দীঘার জগন্নাথ মন্দিরের তুলনা করতে চাননি মুখ্যমন্ত্রী। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘রাজাদের সময় পুরীর মন্দির তৈরি হয়েছিল। দীঘার মন্দির তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের তরফেই পুরো অর্থ দেওয়া হয়েছে। আলাদা-আলাদা ভোগরুম, গেস্টরুম, স্টোররুম আছে। পুজো দেওয়ার জন্য পৃথক পুজো ঘর থাকছে।’
দীঘার জগন্নাথ মন্দিরের বিশেষত্ব হিসেবে দেখা যাবে মন্দিরের প্রবেশদ্বারে চৈতন্যদেবের মূর্তি। দীঘার নতুন জগন্নাথ মন্দিরের জন্য ট্রাস্টি বোর্ডে গঠন করা হয়েছে। যাতে থাকছেন থাকছেন মুখ্যসচিব, জেলাশাসক, সনাতন ধর্মের সভাধিপতি, ইসকন কলকাতার সহ-সভাপতি, পুরোহিতরা থাকছেন ট্রাস্টি বোর্ডে। জানা যায় এই ট্রাস্টি বোর্ডের নেতৃত্ব দেবেন মুখ্যসচিব। মন্দিরের আশেপাশে সনাতন ধর্মের লোকজনের দোকান থাকবে এদিন এমনটাও জানানো হয়। সঙ্গে আরও বলা হয় কালীঘাটের প্যাঁড়ার মতো প্যাঁড়া, ক্ষীরের গজা, গুজিয়া পাওয়া যাবে।
পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এদের নির্দেশ দেন, মন্দিরের সংলগ্ন এলাকায় তৈরি করতে হবে ঘাট। জগন্নাথ দেবের মাসির বাড়ির দিকে কাজ করতে হবে। জগন্নাথ দেবের কাঠ এবং পাথরের মূর্তি থাকবে। ৯০ শতাংশ কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। যে কাজ বাকি আছে, সেটা তিন মাসের মধ্যে হয়ে যাবে। ২০০ একর জায়গায় জগন্নাথ মন্দির তৈরি করা হয়েছে। আগামী রথযাত্রায় দীঘার এই মন্দিরে কাটাবেন মুখ্যমন্ত্রী। দীঘার রথযাত্রায় থাকবেন রাধারমণ দাস। রথের দিন আসবেন মুখ্যমন্ত্রীও। তবে এই মন্দির স্থাপনটি ঘিরেও তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক উত্তেজনা। বাংলার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কটাক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রীকে। বিশেষত পুরীর আদি মন্দিরের নকল করছেন মুখ্যমন্ত্রী এ বিষয়েই কথা বলতে শোনা যায় শুভেন্দুকে।