হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ রোগী!

breakingnews জেলা স্বাস্থ্য

নিজস্ব প্রতিনিধি, হুগলি : অস্ত্রোপচারের পরেই নিখোঁজ রোগী! ভাইকে খুঁজে না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন দাদা দিদি। ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য চুঁচুড়া জেলা হাসপাতালে।

চুঁচুড়া ইমামবাড়া জেলা হাসপাতাল থেকে রোগীর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। নিখোঁজ রোগী পোলবা থানার মহানাদ শীতলা এলাকার বাসিন্দা মানস কর(৪৩)। পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ১০ ডিসেম্বর ভোরে একটি অস্ত্রোপচারের জন্য চুঁচুড়া হাসপাতালে ভর্তি হন। পরদিন, অর্থাৎ ১১ ডিসেম্বর, সফলভাবে তাঁর অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। অস্ত্রোপচারের পর তিনি হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। মঙ্গলবার দুপুরে পরিবারের লোক তাঁর সঙ্গে দেখা করতে হাসপাতাল এলে তাঁর আর কোন খোঁজ পাননি!

মানসের দাদা তাপস কর বলেন, ‘ভাইয়ের অর্শ ছিল, সেখান থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। প্রথমে তাঁকে পোলবা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া জেলা হাসপাতালে পাঠায়। সেখানেই তাঁকে ভর্তি করা হয়। এরপর১১ তারিখ অস্ত্রোপ্রচারের পর ভাই সুস্থ ছিল। প্রতিদিনই সকালবেলা এসে ভাইকে দেখে বিকেলবেলা বাড়ি যাই। আয়া রাখা ছিল। আজ সকালে এসে দেখি ভাই নেই! হাসপাতাল চত্বর, বাস স্ট্যান্ড সহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করার পরেও ভাইয়ের কোন খোঁজ পাইনি। আমি এখন কি করবো বুঝতে পারছি না! গতকাল বারবার বলছিল ছুটি কবে দেবে? বাড়ি যাবো। হাসপাতাল সুপারের সঙ্গে কথা বলেছিলাম।’

মানসের দিদি মিঠু দাস বলেন, ‘প্রতিদিন ভাইকে দেখে যাই, ভালোই ছিল। কথাবার্তা বলছিল। কালকেও দেখে গিয়েছিলাম। আজ সকালে দাদা জানায় যে ভাইকে হাসপাতাল থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না!’

ঘটনার পরপরই মানস করের পরিবার তাঁর খোঁজ শুরু করে। হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ড, করিডর, এবং চারপাশের এলাকায় সন্ধান চালিয়েও তাঁকে পাওয়া যায়নি। বিকেল পর্যন্ত কোনও খোঁজ না মেলায় পরিবারের উদ্বেগ চরমে পৌঁছায়। পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে, কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা নেয় এবং নিজস্ব পর্যায়ে অনুসন্ধান চালায়। কিন্তু তাতেও মানস করের কোনও হদিস মেলেনি। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চুঁচুড়া থানায় ঘটনাটি জানায়।

হুগলি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মৃগাঙ্ক মৌলিক জানান, ‘অস্ত্রোপোচারের পরেই ওয়ার্ডে ছিল রোগী, তারপর আর তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না! বাড়ির লোক এসেছিল, খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা তৎক্ষণাৎ থানাতেও বিষয়টি জানিয়েছি। আমরা নিজেরাও অনুসন্ধান করছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। রোগীর খোঁজ এবং ঘটনার আসল কারণ জানতে হাসপাতাল ও আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’