নিজস্ব প্রতিনিধি,কলকাতা: রাজ্যজুড়ে আলুর আকাশ ছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধির পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভিন্ন রাজ্য রফতানি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন। শুরু হয় আলু বোঝাই গাড়িরগুলি ধরপাকড়। পুলিশ প্রশাসন এমন কি কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না কে রাস্তায় নেমে আলু বোঝাই গাড়ি ধরতে দেখা যায়। আর রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত উদ্বেগ প্রকাশ করল ওয়েস্ট বেঙ্গল কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন। উল্লেখ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন একমাত্র সক্রিয় সংস্থা যাদের সরাসরি কৃষক, ভোক্তা এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ থাকে। ফলে রাজ্য থেকে আলু রফতানি উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে নবান্ন।আলুর রফতানি আন্তরাজ্য চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার কারণে তাদের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের।
প্রসঙ্গত রাজ্য আলু উৎপাদন পরম্পরা ভাবে ৬০:৪০ রেসিয়ো অনুপাতে ব্যবহার করা হয়। যার ৬০ শতাংশ রাজ্যের মধ্যে খরচ হয় এবং বাকি ৪০ শতাংশ অন্য রাজ্যের আলু রফতানি করা হয়। আমাদের রাজ্য যে সমস্ত আলু উৎপাদন হয় তার মধ্যে জ্যোতি আলু, চন্দ্রমুখী আলু বিশেষত রয়েছে। অন্যদিকে বাঁকুড়া, মেদিনীপুর এবং বর্ধমানের ও হুগলীর কিছু জায়গায় যেমন বর্ধমানের গুসকরা ব্লক এবং হুগলী জেলার গোঘাট ব্লক রয়েছে। তবে বাইরের রাজ্য অন্য জাতের আলু সাধারনত পাশ্ববর্তী রাজ্যগুলিতে পাঠানো হয়। তবে রাজ্য সরকারের আলুর উপরে সম্পূর্ণ ভাবে রফতানি বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশের পর ওই অঞ্চলগুলির চাহিদার ব্যাপারে যথেষ্ঠ সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে বলে দাবি কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের। তাদের আশঙ্কা বেশিভাগ ভিন্ন রাজ্যের জন্য মজুত আলু কোল্ড স্টোরেজ রয়েছে। ফলে ২০২৮ সালের ডিসেম্বর শেষে নতুন ফসল আসার আগে অবিক্রিত আলু রয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে ।যার ফলে নতুন ফসল নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি যথেষ্ঠ বেড়ে যায় বলে দাবি ওয়েস্ট বেঙ্গল কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের। যে কারণে শুধু কোল্ড স্টোরেজের অপারেটর নয়, তাদের সঙ্গে সঙ্গে কৃষক, ভাড়াদার দের জন্য আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কার মেঘ দেখা যাচ্ছে। তাতে কোল্ড স্টোরেজ শিল্পের অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। যার সরাসরি প্রভাব দক্ষিণবঙ্গের হিমঘর গুলিতে পড়তে শুরু করেছে।
বিশেষত হুগলী ও বর্ধমানের আংশিক অঞ্চল সহ মেদিনীপুর, বাঁকুড়া জেলার কোল্ড স্টোরেজ অপারেটর দের থেকে নিয়ে কৃষক দের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ ওয়েস্ট বেঙ্গল কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের। আলুর বড় লট মজুদ থাকার জন্য ছোট ও মাঝারি আলু চাষিদের মাথায় হাত। যদি মজুদ স্টক কে কোল্ড স্টোরেজ থেকে বের না করা হলে আলু চাষিরা দিশেহারা হয়ে প্রবল সংকটের মুখে পড়বে। পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতির উপরে ও তার প্রভাব ফেলবে। ফলে কালা বাজারীর কারবারিরা উৎসাহ পাবে বলে আশঙ্কা কোল্ড স্টোরেজ সংগঠনের। মনে রাখতে হবে রাজ্যের আলুর স্থিতিশীল মূল্য নিশ্চিত করতে এবং ফসলের অপচয় রুখতে কোল্ড স্টোরেজ একটা গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। কিন্তু রাজ্য সরকারের রফতানির উপরে ফারমান জারি করে দেওয়ার পর বর্তমান পরিস্থিতিতে কৃষক থেকে নিয়ে ভাড়াদার বা কোল্ড স্টোরেজ অপারেটর সব পক্ষই ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তাদের আশঙ্কা যদি হুমকির মুখে ফেলে তাদের দাবি কে পূর্নবিবেচনা না করা হলে। শুধুমাত্র কোল্ড স্টোরেজ অপারেটর নয় ,আলুচাষী থেকে নিয়ে উভয়ের জন্য বিপর্যয় ঘটবে বলে আশঙ্কা ব্যক্ত ওয়েস্ট বেঙ্গল কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের।