কলকাতার হাতে টানা রিকশা- ঐতিহ্যের খোঁজে গ্রন্থ প্রকাশ

কলকাতা বিনোদন রাজ্য সংস্কৃতি

নিজস্ব প্রতিনিধি,কলকাতাঃ- কলকাতার রাস্তায় হাতে টানা রিকশা শহরের একটি অন্যতম পথ-দৃশ্য। গতকাল বুধবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে ডঃ ডালিয়া রায়ের এই বিষয়ে লেখা প্রথম গবেষণা ভিত্তিক বইটি উন্মোচন হল। উন্মোচন করেন প্রসার ভারতির প্রাক্তন সিইও ও প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকার, পুরনো কলকাতার ইতিহাস বিশেষজ্ঞ ডঃ অভীক রায় প্রমুখ।

উল্লেখ্য, হাতে টানা রিকশা যানবাহন হিসেবে কলকাতায় আইনের স্বীকৃতি পেয়েছে ১১০ বছর আগে। কিন্তু এ বিষয়ে এই বইটিই প্রথম গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কলকাতার রিকশা চালকরা মহানগরীর সামাজিক কাঠামোর একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। ডঃ অভীক রায় চালকদের সুখ-দুঃখের কথা এবং তাঁদের দৈনন্দিন সুবিধা অসুবিধার গল্পকে সুন্দর বর্ণনার আঙ্গিকে বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরেছেন।

জহর সরকার তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘১৮৬৯ সালে জাপানে এই রিকশা আবিষ্কার হয়েছিল। ‘রিকশা’ শব্দটি জাপানি শব্দ। ‘জিন-রিকি-শা’ (অর্থাৎ মানব-চালিত যান) থেকে উদ্ভূত। এরপর চীন হয়ে কলকাতায় তা প্রবেশ করে। অনেক বছর ধরে শুধু চীনেরাই চালাত কলকাতার চীনেদের জন্যে। প্রায় তিন চার দশক পরে অন্যান্যরা ব্যবহার করতে শুরু করল আর আস্তে আস্তে শহর থেকে বাংলার নিজস্ব বাহন পাল্কি উঠে যেতে দেখা গেল।’

এর পাশাপাশি এদিনের আলোচনা সভায় নীতি বনাম অর্থনীতি নিয়েও কথা হয়। চালককে পশুর মতন ব্যবহার করা হচ্ছে না তাঁকে কর্মসংস্থান দেওয়া হচ্ছে? সেই বিষয়েও বক্তারা আলোকপাত করেন। জহর বাবু বলেন, ‘কলকাতা শহরের ভৌগোলিক চরিত্র এমন যে কিছু কিছু এলাকায় বর্ষায় জলমগ্ন হবেই হবে। সে সব অঞ্চলে তখন এই রিকশাই একমাত্র যাতায়াতের মাধ্যম হয়ে ওঠে।’

কিন্তু এদিন সকলেই একটি বিষয়ে এক মত হন যে, এই রাজ্যে যে সব সুবিধা সাধারণ মানুষদের দেওয়া হয়— বিনামূল্যে স্বাস্থ্য, খাদ্য এবং অন্যান্য পরিষেবা — তা যেন এই রিকশা চালকরাও পান।