নিউজ পোল ব্যুরো, সুতি : ওটিটি প্লাটফর্মে বিখ্যাত ‘পঞ্চায়েত’ ওয়েব সিরিজে পঞ্চায়েত সচিবজি যেখানে নিজের এলাকার উন্নয়নের জন্য বিধায়কের বিরুদ্ধে যেতেও পিছুপা হননি, সেখানে বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে চিত্রটা একেবারেই উলটো। প্রায় দু’কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগে গ্রেফতার হলেন সুতির বহুতালী গ্রাম পঞ্চায়েতের সচিব অশোক কুমার ঘোষ! সুতি থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে। বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে থাকা অশোক কুমার ঘোষকে আগামিকাল ফের জঙ্গিপুর মহকুমা আদালতে তোলা হবে বলে সূত্রের খবর।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০২১- ২৩ সালের পঞ্চম অর্থ কমিশনের আর্থিক গরমিলের মামলার তদন্ত করতে গিয়ে অশোক কুমার ঘোষের নাম উঠে আসে। পরে পুলিশ জানতে পারে অশোক কুমার ঘোষ পঞ্চায়েত অফিসের প্রায় দু’কোটি টাকা তছরূপের সঙ্গে জড়িত।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে ওই পঞ্চায়েতে সচিবের পদে যোগ দেন ফরাক্কা থানার মহাদেবপুর এলাকার বাসিন্দা অশোক কুমার ঘোষ। ২০১৮ সাল থেকে ওই পঞ্চায়েতে এক্সিকিউটিভ অফিসার না থাকায় অশোক দীর্ঘ সময় দু’টি দায়িত্ব সামলেছেন। ২০২১-২২ সালে এসে ধরা পড়ে সচিবের সই ব্যবহার করে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের প্রায় ২.২৮ কোটি টাকা কাজ না করে ব্যাঙ্ক থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর, সুমনা মণ্ডল ওই পঞ্চায়েতের প্রধান থাকাকালীন সময়ে পঞ্চায়েতের অধীনে থাকা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের জন্য সরকারের বরাদ্দ ‘টাইড’ এবং ‘আন’টাইড’ ফান্ডের টাকা কাজ না করেই তুলে নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের অনুমান এই অনৈতিক কাজে অশোক কুমার ঘোষের সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত থাকতে পারেন।
ঘটনাটি নজরে আসার পর গতবছর ডিসেম্বর মাসে সুতি-১ নম্বর ব্লকের বিডিও অরূপ কুমার সাহা সুতি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। যার ভিত্তিতে সম্প্রতি গ্রেফতার হয়েছেন ‘সচিব’।
এই বিষয়ে সুতি ১ বিডিও জানিয়েছেন, ‘ওই পঞ্চায়েতে পঞ্চম অর্থ কমিশনের হিসেবে আমরা কিছু গরমিল পাই। তারপর তদন্তে শেষে অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ)-এর নির্দেশে আমি সুতি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলাম। সেই মামলায় পুলিশ পঞ্চায়েত সচিবকে গ্রেফতার করেছে।’
এই বিপুল টাকার আর্থিক দুর্নীতির পেছনে অশোক কুমার ঘোষ ছাড়া আর কেউ জড়িত রয়েছে কিনা তাও তদন্ত করে দেখছে সুতি থানার পুলিশ।