নিউজ পোল ব্যুরো, বর্ধমান: দু’জনেই ‘জেনারেল ফিজিশিয়ান’ অথচ দু’জনের একজনও ডাক্তারি পাশ করেননি। বাড়িতে আবার রয়েছে ক্লিনিক। সম্পর্কে তাঁরা বাবা ও ছেলে। বর্ধমান থেকে ওই দুই ভুয়ো চিকিৎসককে গ্রেফতার করলো পুলিশ।
বর্ধমানের লক্ষ্মীপুরে একটি তিনতলা বাড়ির নিচের বেসমেন্টে ক্লিনিকটির হদিশ মেলে। সেখানে চিকিৎসক হিসেবে একে প্রসাদ ও ডিকে দীপকের নাম লেখা রয়েছে। বাড়ির ঠিক উল্টো দিকেই রয়েছে একটি ওষুধের দোকান। যা আবার ধৃত ‘এমবিবিএস চিকিৎসকের’ ছোট ছেলের!
একে প্রসাদের নামের পাশে ‘জেনারেল ফিজিশিয়ান’ এবং ডিকে দীপকের নামের পাশে ‘এমবিবিএস’ লেখা রয়েছে। এছাড়াও, অল্টারনেটিভ মেডিসিনে এম.ডি হিসেবে উল্লেখ রয়েছে। এমনকি ভিজিটিং কার্ডে নামের পাশে লেখা এমবিবিএস চিকিৎসক।ছোটবেলা থেকেই বিহারে পড়াশোনা করেছেন বলে দাবি করেন এ কে প্রসাদ। তিনি সেখানে তাঁর কলেজের পড়াশোনা শেষ করেছেন এবং সিএমএস, সিডিপি বা কমিউনিটি হেলথ সার্ভিস সংক্রান্ত ডিগ্রী অর্জন করেছেন বলে দাবি। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে এই ডিগ্রী নিয়ে কীভাবে চিকিৎসা করা যায়? ভুয়ো কাগজ নিয়ে ডাক্তার সেজে লোক ঠকানোর অভিযোগে বাবা-ছেলেকে শনিবার আদালতে তোলা হয়।
জানা গেছে এর আগেও ২০১৭ সালে ধৃতদের একজন পুলিশের জালে ধরা পড়েছিলেন। কিন্তু ছাড়া পেয়ে আবার জমিয়ে ডাক্তারি শুরু করেন! স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, নির্দিষ্ট অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও বাবা ছেলে হাজার হাজার রোগীর চিকিৎসা করছেন! শুক্রবার ক্লিনিকে অসংখ্য চিকিৎসার সরঞ্জাম পাওয়া গেছে। স্থানীয়রা এই বিষয়ে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তারপরেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। শুক্রবার পুলিশ গিয়ে তদন্ত করার সময় চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন বা ক্লিনিকের নথি দেখাতে না পারায় ভুয়ো চিকিৎসককে আটক করে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জয়রাম হেমব্রম জানান, ‘বর্ধমানের লক্ষ্মীপুর মাঠে এই ক্লিনিকের বিষয়ে বাসিন্দারা অভিযোগ জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। বর্ধমান থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে। উল্লেখিত চিকিৎসকদের রেজিস্ট্রেশন রয়েছে কিনা সেই বিষয়ে পুলিশ খোঁজ নেবে।’ এছাড়াও ক্লিনিক বা চিকিৎসাকেন্দ্র পরিচালনার ক্ষেত্রে বৈধ অনুমোদন রয়েছে কিনা সেই বিষয় নিয়েও পুলিশ খোঁজ নিচ্ছে।’