নিউজপোল ব্যুরো: ভালোবাসার মৃত্যু হয়না! গুমরে হলেও বাঁচে, শুনেছেন নিশ্চই?? কিংবা সেই গানটা
‘তুমি দেখছো তাকে, ভাবছো যাকে
সে আসল মানুষ নয়
সে বেঁচে আছে শহরের এক কোনে
সে মৃত মানুষের চিৎকার শোনে…….’ – সেই কবেই গেয়েছেন নোবেল।
তবু আদর্শ নিদরণ যেনো প্রতিনিয়ন জন্মে চলেছে আমাদের মাঝে। এই প্রয়োজন না মিললেই ছেড়ে যাওয়ার যুগেও শুধুই নিজেকে নিঃস্বার্থে বিলিয়ে দিতে সেখান তারাই।
বুঝিয়ে দেন ভালোবাসার মৃত্যু নেই সে বেঁচে থাকে আজীবন, জীবনের সবটা জুড়ে কিংবা এক কোণে।
যুগে যুগে ভালোবাসার প্রমাণ আমাদের মাঝেই সৃষ্টি করে চলেছে পৃথিবী, বর্তমানে তার আদর্শ উদাহরণ হয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় টাইমলাইনে ঘুরে বেড়াচ্ছেন মায়া ভরা দুটি মুখ। তাঁরা বিবেক ও সৃজনা। সম্পর্কে তাঁরা স্বামী স্ত্রী।
তাদের কষ্টে ভরা মুখগুলো দিনে একবারও সামনে আসেনি এমন মানুষের সংখ্যা বোধহয় বর্তমানে নেই বললেই চলে। কিন্তু আচমকাই তাঁরা আসেননি টাইমলাইনে। এসেছিলেন এক কঠিন লড়াইয়ের সাক্ষী রেখে যেতে সকলের মাঝে।
সম্প্রতি দুটি চেনা মুখের মধ্যে ফ্যাকাসে হয়েছে একটি। মৃত্যু হয়েছে বিবেকের, এখন শুধুই বিবেকের স্মৃতি আগলে বেঁচে রয়েছেন সৃজনা। কিন্তু ভালোবাসা হারানোর যন্ত্রণাকে বইছেন না সৃজনা।
বরণ বদলে মাঝে মধ্যেই হাসি মুখে অনুভব করছেন বিবেককে। হাসি মুখে সোশ্যাল মিডিয়া পরিবারের সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছেন নিজের অনুভূতি।
কিন্তু তাঁর এই হাসিমুখই চোখ ভেজাচ্ছে নেটিজেনদের। এভাবেই ভালোবাসাকে বাঁচিয়ে রাখার নিদর্শন যেনো আরও বেশি বিষণ্ণতাকে বাড়িয়ে তুলেছে নেট দুনিয়ায়।
বিবেকের অসুস্থতার মুহূর্তের চেয়েও আরও কঠিন লড়াই জীবনের পথ চলায়। তবু কিছুতেই হার মানছেন না সৃজনা, বোধহয় পৃথিবীর আরও এক উদাহরণ হয়ে বাঁচিয়ে রেখেছেন ভালোবাসার গল্প। এ যেন লড়াইয়ে ময়দানে হার না মানা অন্য রূপের শক্তিশালী সৃজনা সুবেদী।
কম বয়সের প্রেম থেকে একসঙ্গে নতুন জীবন শুরু করেছিলেন বিবেক ও সৃজনা। বিবাহ বন্ধনে বাঁধা পরেন একে অপরের সঙ্গে। মাঝে জ্যোতির্বিদ্যা ও পদার্থবিদ্যায় পিএইচডি করতে ইউনিভার্সিটি অব জর্জিয়ায় ভর্তি হন বিবেক।
সেখানে তাঁর সঙ্গেই থাকতেন স্ত্রী সৃজনা। ভালই কাটছিল দু’জনের নতুন সংসারের দিনগুলো। কিন্তু আচমকাই ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। একটি মাত্র খবরে ওলটপালট হয়ে যায় জীবন চলার সমস্ত ছক।
মাঝে মধ্যেই প্রচণ্ড মাথা ব্যথায় কষ্ট পেতেন বিবেক। ২০২২ সালে আচমকাই ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে তাঁর। এরপর থেকেই শুরু লড়াই। সে সময় থেকেই মানুষের ভালোবাসা, জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি অর্জন করতে থাকেন দম্পতি।
এই ক্লান্তি, ব্যস্ততার যুগেও এক ঝলক তাদেরকে দেখলেই মনে জোর পেতেন লাখে লাখে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করা মানুষজন। প্রতিদিন এক সঙ্গে স্বপ্ন দেখা, একসঙ্গে বাঁচাই ছিল তাঁদের দিনযাপনের চাবিকাঠি।
কিন্তু এরপর আরও কঠিন হয় সময়, একসঙ্গে বাঁচার সময় বেঁধে দিলেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসকরা জানালেন, বিবেকের হাতে আর মাত্র ৬ মাস সময় রয়েছে।
এই ৬টা মাস জীবনের সেরা মুহূর্ত কাটাতে চেয়েছিলেন বিবেক ও সৃজনা। ক্রমশই শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করল বিবেকের। আরও বেশি বিবেককে আগলানো শুরু হয় সৃজনার। আবেগপ্রবণ দর্শক মহলও প্রতিদিন প্রার্থনা করতে থাকে প্রিয় জুটির জন্য। কিন্তু শেষ রক্ষা হলোনা!
অবশেষে বৃহস্পতিবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বিবেক। নামলো গভীর শোকের ছায়া। তাঁর মৃত্যুতে শোকাহত নেটিজেনরা।
এই ঘটনার পর থেকে অনেকের মনেই প্রশ্ন ছিল, এবার কি হবে সৃজনার? তিনিও কি সব ভুলে ঘুরে দাঁড়াবেন নতুন কিছু আঁকরে? নাকি শোকে দুঃখে বিদায় নেবেন সোশ্যাল মিডিয়া থেকেই? এরইমধ্যে যার উত্তর পেয়েছেন নেটিজেনরা।